চাকরিজীবীদের অবসর গ্রহণের বয়সসীমা বাতিল করেছে তুরস্ক। বুধবার (২৮ ডিসেম্বর) তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান কর্মীদের অবসরে যেতে যে নির্দিষ্ট বয়সসীমার বাধ্যবাধকতা রয়েছে তা বাতিল করেন।
এর ফলে সাধারণ নির্বাচনের আগে দেশটির ২০ লাখেরও বেশি কর্মী অবসর নিতে পারবেন। বৃহস্পতিবার (২৯ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান বুধবার তুরস্কে অবসরে যেতে বয়সের নির্দিষ্ট বাধ্যবাধকতা বাতিল করেছেন। নির্বাচনের ছয় মাসেরও কম সময় আগে নেওয়া এই পদক্ষেপের ফলে দেশটিতে এখন ২০ লাখেরও বেশি কর্মী অবিলম্বে অবসর নিতে পারবেন।
রয়টার্স বলছে, অর্থনৈতিক সংকটের জেরে মূল্যস্ফীতি, তুর্কি মুদ্রা লিরার পতন এবং মানুষের জীবনমানে ব্যাপক পতনের কারণে তুরস্কে বেশ চাপে ছিল প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান ও তার দল।
আর তাই নিজেদের ক্ষয়প্রাপ্ত সমর্থন ফিরে পেতে চলমান কর্মকাণ্ডের অংশ হিসেবে এরদোয়ানের ক্ষমতাসীন একে পার্টি গত সপ্তাহে ন্যূনতম মজুরি ব্যাপক বৃদ্ধি করে। আর এরপরই বুধবার দেশটিতে অবসর গ্রহণে বয়সের নির্দিষ্ট বাধ্যবাধকতা বাতিল করা হলো।
বার্তাসংস্থাটি বলছে, বুধবারের ঘোষণার আগে তুরস্কে অবসরে যেতে নারীদের জন্য বয়স ৫৮ বছর এবং পুরুষদের জন্য ৬০ বছর নির্ধারণ করা ছিল। তবে নতুন সিস্টেমে আরও মানুষ অবসরে গেলে তাদের জন্য ঠিক কত খরচ হবে তা এখনও স্পষ্ট নয়।
অবশ্য প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান বলেছেন, ২২ লাখ ৫০ হাজার মানুষ অবিলম্বে অবসর নেওয়ার যোগ্য। এছাড়া তুরস্কে বর্তমানে ১ কোটি ৩৯ লাখ পেনশনভোগী রয়েছেন।
রয়টার্স বলছে, তুরস্কের শ্রম গোষ্ঠীগুলো কয়েক বছর ধরে অবসর গ্রহণে ন্যূনতম বয়সের বাধ্যবাধকতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে আসছিল। তাদের দাবি ছিল, বয়সের পরিবর্তে কর্মীদের অবসর নেওয়ার জন্য বাধ্যতামূলক সংখ্যক কাজের দিনগুলো পূরণ করতে হবে।
আর তাই আগামী বছরের জুনে অনুষ্ঠিতব্য গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনের আগে এই পদক্ষেপ প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের সমর্থন বাড়ানোর জন্যই নেওয়া হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
মূলত দুই দশক ধরে ক্ষমতায় থাকাকালীন প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান প্রায় সময়ই ভিন্নমতের বিরুদ্ধে দমন-পীড়ন চালিয়েছেন এবং সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অপ্রচলিত অর্থনৈতিক নীতিও গ্রহণ করেছেন। এতে করে তুর্কি মুদ্রা লিরার ব্যাপক পতন হয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন