তুরস্কের জাতীয় নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেপ এরদোগান। নির্ধারিত সময়ের এক মাস আগেই আগামী ১৪ মে অনুষ্ঠিত হবে ভোট। রোববার (২২ জানুয়ারি) একটি ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ করে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট কার্যালয়। যেখানে তরুণ ভোটারদের সাথে এক অনুষ্ঠানে অংশ নিতে দেখা যায় এরদোগানকে। উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ বুরসার সেই আয়োজনেই নির্বাচনের তারিখ নিয়ে কথা বলেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট।
দেশটির নির্বাচনের সম্ভাব্য তারিখ ছিল ১৮ জুন। তবে সে সময় গ্রীষ্মকালীন ছুটি হওয়ায় বিভিন্ন স্থানে ভ্রমণের সম্ভাবনা রয়েছে নাগরিকদের। সে কারণে আগেই ভোটের তারিখ এগিয়ে আনার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন এরদোগান। দুই দশক তুরস্কের নেতৃত্ব দেয়া এরদোগানের জন্য এবারের নির্বাচনকে দেখা হচ্ছে বড় পরীক্ষা হিসেবে। জনমত জরিপে দেখা গেছে, পার্লামেন্ট ও প্রেসিডেন্ট উভয় নির্বাচনেই হবে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। তরুণদের উদ্দেশে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোগান বলেন, আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা, আপনারা যারা প্রথম ভোটার তাদের পাশে থাকার সুযোগ পাচ্ছি। প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রক্রিয়া শুরু করতে যাচ্ছি। ইলেক্টোরাল বোর্ড ৬০ দিনের নির্বাচনী দিনপঞ্জি তৈরি করবে।
এরদোগান বলেছেন, ‘নর্বাচন হবে ১৪ মে। আমি আল্লাহকে ধন্যবাদ দিচ্ছি, তার পূর্বনির্দিষ্ট পথে আমরা হাঁটছি। আমাদের যে যুবরা এবার ভোটাধিকার পেয়েছেন, তাদের জানিয়ে দিতে চাই, নির্বাচন হবে ১৪ মে। তখন তারা ভোট দিতে পারবেন।’ তিনি জানিয়েছেন, আগামী ১০ মার্চ তিনি চ‚ড়ান্ত সিদ্ধান্ত ঘোষণা করবেন। এরপর তুরস্কের সুপ্রিম ইলেকশন কাউন্সিল নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে শুরু করবে। যদি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কোনো প্রার্থী ৫০ শতাংশ ভোট না পান, তাহলে ২৮ মে দ্বিতীয় পর্বের ভোটগ্রহণ হবে।
২০০৩ সাল থেকে প্রথমে প্রধানমন্ত্রী এবং পরে প্রেসিডেন্ট পদে আছেন এরদোগান। এবার তার সামনে ক্ষমতায় থাকার সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ এসেছে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। তুরস্ক ন্যাটোর সদস্য, ওই অঞ্চলে বড় সামরিক শক্তি, ক্রমশ বড় অর্থনৈতিক শক্তিও হয়ে উঠতে চলেছে তারা। ছয় দলের বিরোধী জোট এখনো প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীর নাম জানায়নি। এছাড়া কুর্দদের প্রতি সহানুভ‚তিশীল রাজনৈতিক দল জানিয়েছে, তারা আলাদা করে প্রার্থী দেবে।
বিরোধী দলগুলির দাবি, সম্প্রতি তুরস্কের অর্থনীতিতে যে প্রবল চাপ এসেছে তা এরদোগানের নীতির জন্য। তার আমলে নাগরিক অধিকার ও স্বাধীনতা বলতে আর কিছু তুরস্কে অবশিষ্ট নেই। তুরস্কে এখন একজনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ২০১৮ সালে এরদোগান প্রধানমন্ত্রীর অফিস অবলুপ্ত করে দেন এবং প্রেসিডেন্টের হাতে প্রায় সব ক্ষমতা কেন্দ্রিভ‚ত করেন। এর আগে তুরস্কে প্রেসিডেন্টের পদ ছিল আলংকারিক, প্রকৃত ক্ষমতা ছিল প্রধানমন্ত্রীর হাতে। কিন্তু এখন প্রেসিডেন্টের হাতেই যাবতীয় ক্ষমতা আছে। পার্লামেন্ট ও প্রেসিডেন্ট নির্বাচন একইদিনে হয়।
এই ভোটগ্রহণ ১৮ জুন হওয়ার কথা। কিন্তু এর আগেও এরদোগান বলেছিলেন, ভোট এগিয়ে আনা হতে পারে। এবার তিনি দিনও ঘোষণা করে দিলেন। তার দলের বক্তব্য, জুন মাসে সামার হলিডে হয়। মানুষ তখন বাইরে বেড়াতে যান। তাই ভোটগ্রহণ এগিয়ে আনা হচ্ছে। সূত্র : এপি, এএফপি, রয়টার্স।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন