তীব্র শীতে কাবু হয়ে পড়েছে উত্তরের জনপদ। তাপমাত্রা প্রতিদিনই কমছে। কনকনে ঠান্ডার সঙ্গে ঘন কুয়াশায় কাহিল হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষ। শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে রোগবালাই। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্করা জ্বর, সর্দি, কাশি, শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়া, ডায়রিয়াসহ শীতজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। ঘন কুয়াশার কারণে রাস্তাঘটে যানবাহন চলাচল করছে নিয়ন্ত্রিত গতিতে। দুর্ঘটনার আশঙ্কায় দূরপাল্লার যানবাহনগুলো দিনের বেলা সড়কে চলাচল করছে হেডলাইট জ্বালিয়ে। নৌপথে দুর্ঘটনা এড়াতে সকল ধরনের নৌযান নদীতে চলাচল বন্ধ করে দেয় ঘাট কর্তৃপক্ষ।
কুড়িগ্রাম জেলা ও চিলমারী সংবাদদাতা জানান, কনকনে ঠাÐায় কাবু হয়ে পড়েছে উত্তরের সীমান্ত ঘেঁষা জেলা কুড়িগ্রামের মানুষ। উত্তরীয় হিমেল হাওয়া বাড়িয়ে দিয়েছে ঠাÐার মাত্রা। এতে করে ব্যাহত হয়ে পড়েছে স্বাভাবিক জীবন যাত্রা। এদিকে, চিলমারীতে কয়েক দিন ধরে হুহু করে বাড়তে শুরু করছে শীত। গত কয়েক দিন থেকে শৈত্য প্রবাহ ও ঘন কুয়াশায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো ফুটপাতে শীতের কাপড় ক্রয়ের জন্য ভিড় জমাচ্ছে। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কুয়াশার চাদরে এলাকা ঢাকা থাকছে। দুপুরের সূর্যের দেখা মিললেও রোদের তাপমাত্রা খুবই কম। বিশেষ করে পাউবো বাঁধে ও চরাঞ্চলের লোকজন অর্থাভাবে শীতের কাপড় কিনতে না পেরে অতি কষ্টে দিন যাপন করছেন অনেকে। রাজারহাট আবহাওয়া অফিস জানায়, গতকাল বৃহস্পতিবার জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। খেটে খাওয়া মানুষ ঠাÐা বেশি হওয়ার কারণে কাজে যেতে পারছেন না। এদিকে, বৃদ্ধ ও শিশুরা ঠাÐা জনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হচ্ছেন।
চুয়াডাঙ্গা জেলা সংবাদদাতা জানান, চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। জেলার সর্বত্র শৈত্য প্রবাহের সঙ্গে প্রচÐ শীত অনুভ‚ত হচ্ছে। গতকাল বৃহম্পতিবার সকালে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। বাতাসের আর্দ্রতা ৯৪ শতাংশ। এর আগে এদিন সকাল ৬টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছিলো। ওই সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিলো ৯৭ শতাংশ। গত ৩ দিন থেকে এ জেলায় ক্রমাগত তাপমাত্রা কমতে থাকে। শৈত্য প্রবাহের কারণে চুয়াডাঙ্গার সদর, আলমডাঙ্গা, দামুড়হুদা ও জীবননগর উপজেলায় হতদরিদ্র মানুষ শীতে নিদারুণ কষ্টে দিন কাটাচ্ছে। প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাড়ি থেকে বের হচ্ছেনা। দিন মজুররা কাজ পাচ্ছেনা। কাজের সন্ধানে এসে তারা অপেক্ষার পালা শেষ করে বাড়ি ফিরে যাচ্ছে। হঠাৎ করে শীতের প্রকোপে বেশ সমস্যায় দিন কাটাচ্ছে এ জেলার মানুষ।
স্টাফ রিপোর্টার, মাদারীপুর থেকে জানান, ঘন কুয়াশায় ঢেকে আছে চারপাশ। গত বুধবার মধ্যরাত থেকেই কুয়াশার প্রকোপ বাড়তে থাকে। মাদারীপুর জেলার নদ-নদীর অববাহিকা ঢাকা পড়েছে গাঢ় কুয়াশায়। কুয়াশার মাত্রা বেশি থাকায় সামান্য দূরত্বও অস্পষ্ট। গতকাল বৃহস্পতিবার ভোর থেকে মাদারীপুর জেলা সড়ক-মহাসড়কে যানবাহন চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। মহাসড়কে ধীরগতিতে চলেছে যানবাহন। ঘন কুয়াশার পাশাপাশি শীতের মাত্রাও বেড়েছে। স্থানীয় হাট-বাজারগুলোতে সকাল থেকেই ক্রেতাদের উপস্থিতি কম। এ অবস্থায় বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। এদিকে ঘন কুয়াশায় ঢাকা পড়েছে ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়েসহ মাদারীপুর ঢাকা রুট। এক্সপ্রেসওয়েতে যানবাহন চলাচলে ধীরগতি রয়েছে। শিবচর হাইওয়ে পুলিশের উপ-পরিদর্শক আব্দুল্লাহ হেল বাকী জানান, কুয়াশার কারণে মহাসড়কে যানবাহন হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে। হাইওয়ে পুলিশের টিম দায়িত্বরত রয়েছে।
গোয়লন্দ (রাজবাড়ী) উপজেলা সংবাদদাতা : ঘনকুয়াশার কারণে দৌলতদিয়া ও পাটুরিয়া নৌরুটে সাড়ে ৭ ঘণ্টা পর ফেরি চলাচল করে। গত বুধবার রাত ২টা থেকে হতে বেলা সাড়ে ৯টা পর্যন্ত নৌপথে দুর্ঘটনা এড়াতে সকল ধরনের নৌযান নদীতে চলাচল বন্ধ করে দেয় ঘাট কর্তৃপক্ষ। কুয়াশার কারণে ৭ ঘণ্টা ফেরি চলাচল বন্ধ ছিল। পরে কুয়াশার পরিমাণ কমে যাওয়ায় ফেরি চলাচল স্বাভাবিক হয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন