বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

শীত-কুয়াশায় চট্টগ্রামে থমকে গেছে জনজীবন

দিন-রাতের তাপমাত্রা খুব কাছাকাছি সর্বত্র গরম কাপড় বেচাকেনার ধুম

চট্টগ্রাম ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ৯ জানুয়ারি, ২০২৩, ১২:০০ এএম

সকাল পেরিয়ে দুপুর পর্যন্ত মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশায় ঢাকা পড়ছে বন্দরনগরীসহ বৃহত্তর চট্টগ্রাম অঞ্চল। সেই সাথে উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে আসা কনকনে ঠাণ্ডা হাওয়ায় অসহনীয় শীতকষ্টে থমকে গেছে স্বাভাবিক জনজীবন। গতকাল রোববার চট্টগ্রামের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৫.৫, রাঙ্গামাটিতে ১৫.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শীত ও কুয়াশার দাপটে অসহায় অবস্থায় পড়েছে দিনে এনে দিনে খাওয়া হতদরিদ্র মানুষেরা। বন্দর-ঘাট এলাকার কুলি-মজুর, শ্রমিক, কৃষি-শ্রমিক, দিনমজুর, রিকশা-ভ্যান চালক, নির্মাণ শ্রমিক, ফুটপাথের হকার, সাম্পান-নৌকার মাঝিসহ শ্রমজীবী মানুষের কষ্ট-দুর্ভোগ অবর্ণনীয়। তাদের রুজি-রোজগার কমে গেছে। দীর্ঘ সময় ধরে অপেক্ষা করে অনেকেরই কাজকর্ম জুটছে না।

চট্টগ্রামে টানা শীত ও কুয়াশার কারণে জ্বর-সর্দি, কাশি,শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, চর্মরোগসহ শীতজনিত রোগব্যাধির প্রকোপ বেড়ে গেছে। চমেক হাসপাতাল ও নগরীর বিভিন্ন হাসপাতাল-ক্লিনিক, ডাক্তারের চেম্বারে রোগীর চাপ বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে বয়োবৃদ্ধ ও শিশুদের ভোগান্তি বেড়েছে বেশি। শীতের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ফুটপাথে গরম কাপড়ের বেচাকেনার ধুম পড়েছে। জহুর হকার্স মার্কেট, নিউমার্কেট এলাকা, স্টেশন রোড, চকবাজার, জিইসি মোড়, মুরাদপুর, ষোলশহর, আগ্রাবাদ, বহদ্দারহাট, মোমিন রোড, আন্দরকিল্লা, রেয়াজুদ্দিন বাজারসহ বন্দরনগরীর প্রায় সর্বত্র এখন শীতবস্ত্র কেনাকাটা জমজমাট। দোকানিদের দম ফেলার ফুরসৎ নেই। তাছাড়া ভ্রাম্যমান দোকানে শীতের পিঠা-পুলির কদর ও বেচাকেনা বেড়েছে।

আবহাওয়া বিভাগ জানায়, শীতের তীব্রতা বেশি অনুভূত হওয়ার প্রধান কারণ হচ্ছে বৃহত্তর চট্টগ্রামসহ দেশের বেশিরভাগ অঞ্চলে দিন ও রাতের তাপমাত্রার খুবই কাছাকাছি অবস্থান। রাতের সর্বনিম্ন তাপমাত্রার পাশাপাশি দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রাও কমে গেছে। এর ফলে তীব্র শীতের অনুভূতি অব্যাহত রয়েছে। গতকাল চট্টগ্রাম বিভাগের চাঁদপুরে দিনের তাপমাত্রা ১৬ ডিগ্রির বিপরীতে রাতের তাপমাত্রা ছিল ১২.৮ ডিগ্রি সে.। ব্যবধান মাত্র ৪.৮ ডিগ্রি সে.। আবহাওয়া বিভাগ জানায়, দেশের অধিকাংশ জায়গায় দিন ও রাতের তাপমাত্রা এতই কাছাকাছি এসে গেছে, স্থানভেদে তা মাত্র ৩.৫ থেকে ৮ ডিগ্রি সে. পর্যন্ত ব্যবধানে রয়েছে।

সেই সাথে চট্টগ্রামসহ দেশের অধিকাংশ এলাকায় মাঝরাত থেকে ভোর ও সকাল পেরিয়ে এমনকি দুপুরের পর পর্যন্ত মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়ছে। পাহাড়-টিলা এলাকায় ঝির ঝির বৃষ্টির মতো কুয়াশা ঝরছে। প্রায় দিনভর ঘন কুয়াশাচ্ছন্ন থাকার কারণে সূর্যের উত্তাপ ভূপৃষ্ঠে আসা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এর ফলে শীতের দাপট বেড়ে গেছে। ঘন কুয়াশার কারণে সড়ক ও নৌপথে যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। বেড়েছে ঝুঁকিও।

এদিকে ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়া পূর্বাভাসে জানা গেছে, অস্থায়ীভাবে আকাশ আংশিক মেঘলাসহ সারা দেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারা দেশে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। কুয়াশা দেশের কোথাও কোথাও দুপুর পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। সারা দেশে তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। দিন ও রাতের তাপমাত্রার পার্থক্য কমে যাওয়ার কারণে সারা দেশে মাঝারি থেকে তীব্র শীতের অনুভূতি অব্যাহত থাকতে পারে। পরবর্তী ৭২ ঘণ্টায় রাতের তাপমাত্রা আরও কিছুটা হ্রাস পেতে পারে।

আবহাওয়া বিভাগ বলছে, শীতের বলয় সৃষ্টিকারী উপমহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের একটি বর্ধিতাংশ ভারতের পশ্চিমবঙ্গ এবং এর কাছাকাছি বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিম এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। এর একটি বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন