রাজধানীর যানজট নিরসনে কাজ করবে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। দ্রুতগতিতে এগোচ্ছে প্রকল্পের কাজ। শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সংলগ্ন কাওলা থেকে তেজগাঁও রেলগেট পর্যন্ত দৈর্ঘ্য সাড়ে ১১ কিলোমিটার। রাজধানীর সড়কগুলোতে প্রতিদিন হাজার হাজার যানবাহনের চাপ থাকায় ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের নির্মাণের সুবিধার্থে তিনটি ট্রাঞ্চে ভাগ করা হয়েছে।
প্রথম অংশ বিমানবন্দর থেকে বনানী রেলস্টেশন পর্যন্ত। দ্বিতীয়াংশ বনানী রেলস্টেশন থেকে মগবাজার পর্যন্ত। তৃতীয়াংশ মগবাজার থেকে যাত্রাবাড়ির পেরিয়ে চিটাগাং রোডের কুতুবখালী পর্যন্ত। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েটি ঢাকার উত্তর-দক্ষিণে বিকল্প সড়ক হিসাবে ব্যবহৃত হবে। এক্সপ্রেসওয়েতে স্বচ্ছন্দে গাড়ি চলাচলের জন্য এই রুটেই তৈরি করা হয়েছে ইউলুপ। ইতোমধ্যে র্যাম্প বসানো হয়েছে। এই ইউলুপ সম্পূর্ণ চালু হলে রাজধানী ঢাকায় যানজটের দৃশ্য হারিয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
জানা যায়, রাজধানীর যানজট কমাতে নানা উদ্যোগ বাস্তবায়িত হচ্ছে। এর মধ্যে ইউলুপ ও ইউটার্ন প্রকল্পগুলোর প্রকৃত সুফল পাচ্ছে নগরবাসী। যদি চালক-যাত্রীসহ সংশ্লিষ্টরা ইউলুপ-ইউটার্নের যথাযথ ব্যবহার জানেন, তবে যানজট আরও কমে আসবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। ইতোমধ্যে নির্মিত একাধিক ইউটার্ন খুলে দেয়া হয়েছে। এগুলো নির্মিত হয়েছে উত্তরা রাজলক্ষ্মীর সামনে, উত্তরা র্যাব-১ অফিস, ফ্লাইং ক্লাব কাওলা, বনানী ওভারপাস, বনানী আর্মি স্টেডিয়ামের সামনে, বনানী চেয়ারম্যান বাড়ি, মহাখালী আমতলী, মহাখালী বাস টার্মিনালের সামনে, তেজগাঁও নাবিস্কো মোড় এবং সাতরাস্তার বিজি প্রেস এলাকা। এর আগে থেকে চালু আছে রামপুরা ও মেরুল বাড্ডায় নির্মিত দুটি ইউলুপ।
চালু হওয়া ইউটার্ন-ইউলুপগুলো নিয়ে চালক, পথচারী ও পরিবহন বিশেষজ্ঞদের মধ্যে রয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। তারা বলছেন, এই উদ্যোগগুলো সেই সড়কে কার্যকর যেখানে যানবাহনের চাপ কম, এবং যে সড়ক প্রচুর চওড়া।
তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সড়কে যানজট কমাতে এই ইউলুপ-ইউটার্ন যথেষ্ট কার্যকর। ইতোমধ্যে যেসব যায়গায় হয়েছে, সেখানকার যানজট কমেছে। এটার একটা গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো যানজট নিরসনে এই পদ্ধতি দ্রুত কাজ করে। এতে স্ট্রাকচারাল ইনফ্রাস্ট্রাকচার বা বড় ধরনের নির্মাণ প্রয়োজন হয় না। যেসব স্পটে ঘন ঘন যানজট হয়, সেখানে ইউলুপ-ইউটার্ন ব্যবহার করা যেতে পারে।
ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের সুপারভাইজার মেহেদী হাসান ইনকিলাবকে বলেন, ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের বিমানবন্দর থেকে বনানী রেলগেট অংশে ইউলুপ রয়েছে। এই ইউলুপের কাজ এখন প্রায় শেষের দিকে। এই রুটটি চালু হলে যানজট নিরসনে কাজ করবে। নির্বিঘ্নে গাড়ি চলাচলে সহায়তা করবে।
বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক শামসুল হক বলেন, ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে বনানীতে যে র্যাম্প করা হয়েছে এটা আপাতত কোনো কাজে আসবে না। এখনতো বিমানবন্দর থেকে বনানী পর্যন্ত খুলে দেয়া হবে। তাতে এর উপর তেমন প্রভার পড়বে না। তবে কুতুবখালী পর্যন্ত কাজ শেষ হলে এটার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিবে। পুরোপুরি কাজ শেষ হলে যে গাড়িগুলো চট্টগ্রামের দিক থেকে কুতুবখালী হয়ে আসবে সেসব গাড়ির জন্য তখন ভালো হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন