শীতে ছোট অগ্নিকান্ডের ঘটনা বাড়ছে। এতে করে দগ্ধ রোগীর চাপে পড়েছে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট। পাঁচশ শয্যাবিশিষ্ট এই হাসপাতালে গতকাল শুক্রবার পর্যন্ত ভর্তি দগ্ধ রোগীর সংখ্যা ছিল ৫২৫জন। ভর্তি থাকা অতিরিক্ত ২৫ জন রোগীর সিটের ব্যবস্থা করতে কোভিড চিকিৎসায় ব্যবহৃত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ১৪ বেডের একটি আইসিইউ ইউনিট বার্ন ইউনিট হিসেবে আপাতত ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
চিকিৎসকরা বলছেন, প্রতিবছরই শীতকালে দগ্ধ রোগীর চাপ থাকে। তবে এ বছর হঠাৎ করে চাপ বেড়ে যাওয়ায় শয্যাসংকট তৈরি হয়েছে। রাজধানীসহ দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে দগ্ধ রোগীরা স্থানীয় হাসপাতাল হয়ে বা সরাসরি শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিউটে চিকিৎসা নিতে এসে থাকেন।
এ বিষয়ে বার্ন ইউনিটসমূহের জাতীয় সমন্বয়কারী ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, দগ্ধ রোগীর অতিরিক্ত চাপ সামলাতে ইতোমধ্যেই কোভিড রোগীদের জন্য ১৪ শয্যার যে আইসিইউ ছিল, তা দগ্ধ রোগীদের চিকিৎসায় ব্যবহার শুরু করা হয়েছে। বার্ন ইনস্টিটিউটের অবজারভেশন ওয়ার্ডের বেডগুলোতেও দগ্ধ রোগীদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আরও বিকল্প ভাবা হচ্ছে। এ সংকট কেটে যাবে।
ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক একজন বলেন, শীতের সময়ে রোগীর চাপ সব সময়ে একটু বেশি থাকে। তবে বর্তমানে রোগীর চাপ আগের থেকে অনেক বেশি। আর স্থানীয় হাসপাতালগুলো প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েই রোগীদের স্থানান্তর করে দেন শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ বার্ন ইউনিটে। ফলে অতিরিক্ত রোগীর চাপে এ দুটি স্থানেই শয্যা সংকট সৃষ্টি হয়েছে। তবে পুরনো রোগীদের জন্য আউটডোর খোলা আছে। কোনো রোগীকে ছুটি (ডিসচার্জ) দেয়া হলে, সেই খালি বেডগুলোর বিপরীতে রোগী ভর্তি নেয়া হচ্ছে।
হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে, শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউট ও ঢামেক বার্ন ইউনিটে ভর্তি রোগীদের মধ্যে অসাবধানতা, রান্না করতে গিয়ে, শীতে আগুন পোহাতে গিয়ে, গরম পানি করতে গিয়ে, বিদুৎস্পৃষ্ট, গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ, গ্যাস লিকেজ থেকে আগুন লেগে দগ্ধ রোগীর সংখ্যা বেশি। শীতে এ ঘটনাগুলো বেশি ঘটে থাকে।
আবাসিক চিকিৎসক এসএম আইউব হোসেন বলেন, গত বছরের জানুয়ারি-ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত বার্ন ইনস্টিটিউটে ইনডোর ও আউটডোরে নারী-পুরুষ ও শিশুসহ মোট চিকিৎসা নিয়েছেন ৮৩ হাজার ২৪৫ জন দগ্ধ রোগী। এর মধ্যে পুরুষ ৪৫ হাজার, মহিলা ৩৮ হাজার ২৪৫ জন। এছাড়া ৬ হাজার ৪২৮ জন রোগীকে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেয়া হয়। এই এক বছরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন ৯৮৪ জন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন