বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৪ বৈশাখ ১৪৩১, ০৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ইসলামী জীবন

ইসলামী কর্মতৎপরতা

| প্রকাশের সময় : ২৫ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ
রোহিঙ্গা মুসলমানদের উপর নির্মম বর্বরতা ও অমানবিক গণহত্যার প্রতিবাদে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের উদ্যোগে পীর সাহেব চরমোনাইর নেতৃত্বে আহূত মিয়ানমার অভিমুখে লংমার্চ যাত্রাবাড়ীর কাজলা থেকে শুরু করার কথা থাকলেও পুলিশী বাধার মুখে তা স্থগিত করা হয়। কাজলা এলাকায় ভোর থেকে পুলিশ অবস্থান নেয়। সেখানে কাউকে দাঁড়াতে দেয়নি পুলিশ। এর প্রতিবাদে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম উত্তর গেটে হাজার হাজার বিক্ষুব্ধ জনতার উপস্থিতিতে বেলা ১২টায় এক প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশের সভাপতি সংগঠনের আমীর মুফতী সৈয়দ মোহাম্মদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই সরকারের এই আচরণকে রহস্যজনক অভিহিত করে বলেন, শান্তিপূর্ণ একটি কর্মসূচি বাধাগ্রস্ত করে সরকার কাদের খুশি করতে চায়? আমাদের লংমার্চ কর্মসূচি ছিল মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলমানদের উপর বর্বরোচিত হামলা বন্ধ ও তাদের মানবিক অধিকার ফিরিয়ে দেয়ার দাবীতে। এমন একটি সর্বজনীন মানবিক কর্মসূচিতে সরকারের বাধা দেয়ার ঘটনা রোহিঙ্গা মুসলমানদের নির্যাতনকারীদের উৎসাহিত করবে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
২৮ নভেম্বর ঘোষিত এ লংমার্চ কর্মসূচিকে ঘিরে সাধারণ মানুষ ব্যাপক প্রস্ততি গ্রহণ করেছিল। সকাল ৯টায় জাতীয় প্রেসক্লাবে সকলের জমায়েত হওয়ার কথা থাকলেও ১দিন পূর্বে পুলিশ প্রেসক্লাবে জমায়েত হতে নিষেধ করে। সে অনুযায়ী জমায়েতের নতুন স্থান নির্ধারণ করা হয়েছিল যাত্রাবাড়ীর কাজলা এলাকায়। কিন্তু হঠাৎ করেই পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে লংমার্চ কর্মসূচি স্থগিত করার কথা বলা হয়। অথচ সারাদেশের লংমার্চগামী মানুষ নৌ ও সড়কপথে পূর্বেই ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়ে এসেছে। ভোর হওয়ার পূর্বেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা হাজার হাজার বাস, মাইক্রোবাস জড়ো হতে থাকে যাত্রাবাড়ী, কাজলাসহ আশপাশের এলাকায়। কিন্তু পুলিশ গাড়িগুলো সেখানে দাঁড়াতে না দিয়ে যাত্রীদের সাথে খারাপ ব্যবহার করে, গাড়ির চাবি ছিনিয়ে নেয়।
এ সময় যুবলীগের কর্মীদেরও পুলিশের সাথে মিশে লংমার্চগামী লোকদের হেনস্থা করে এবং কিছু গাড়িও ভাংচুর করে। পুলিশের এহেন আচরণের প্রতিবাদ করলে পল্টন, যাত্রাবাড়ী ও কলাবাগান এলাকা থেকে আনুমানিক অর্ধ শতাধিক কর্মীকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন লংমার্চ বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক অধ্যক্ষ মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল-মাদানী, সংগঠনের নায়েবে আমীর মুফতী সৈয়দ ফয়জুল করীম, মহাসচিব অধ্যক্ষ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, রাজনৈতিক উপদেষ্টা অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, যুগ্ম মহাসচিব অধ্যাপক এটিএম হেমায়েত উদ্দিন, অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক প্রকৌশলী আশরাফুল আলম, কেএম আতিকুর রহমান, প্রচার সম্পাদক আহমদ আবদুল কাইয়ূম, মাওলানা নেছার উদ্দিন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সভাপতি মাওলানা ইমতিয়াজ আলম, উত্তর সভাপতি প্রিন্সিপাল শেখ ফজলে বারী মাসউদসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
লংমার্চে বাধা ও পুলিশী হয়রানির প্রতিবাদে তাৎক্ষণিক আয়োজিত বিশাল প্রতিবাদ সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, মিয়ানমারে সামরিক জান্তা-পুলিশ ও সন্ত্রাসী বৌদ্ধদের দ্বারা বর্বরোচিত রোহিঙ্গা মুসলিম গণহত্যা, ধর্ষণ, বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ ও নির্যাতন ও দেশছাড়া করা অব্যাহত রেখেছে। তিনি সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলমানদের সকল প্রকার নাগরিক ও মানবিক অধিকার ফিরিয়ে দেয়া, জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশে আশ্রয়গ্রহণকারী সকল রোহিঙ্গাকে তাদের স্বদেশ মিয়ানমারে ফিরিয়ে নেয়ারও দাবী জানান। গণহত্যা ও ধর্ষণের বিচার এবং মিয়ানমারের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্যে মানবিক বিপর্যয় রোধ এবং শান্তি প্রতিষ্ঠায় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েনের দাবি জানান পীর সাহেব চরমোনাই। এ জন্য তিনি বিশ্ব নেতৃত্বকে ঐক্যবদ্ধ ভূমিকা নেয়ার আহ্বান জানান। শেখ হাসিনার উদ্দেশ্যে পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, আপনার পরিবারের নির্মমতার জন্য বক্তব্যের সময় কাঁদলেও মিয়ানমারের হাজার হাজার মুসলমান নারী, শিশু, পুরুষকে ইতিহাসের সবচেয়ে পৈশাচিকভাবে হত্যা করা হয়, আগুনে পুড়িয়ে মারা হয়, অথচ আপনার মন একটুও কাঁদে না? এত নিষ্ঠুর আচরণ মেনে নেয়া যায় না।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন