আইনসম্মতভাবে আড়ি পাতার ব্যবস্থা চালুর উদ্যোগ সংবিধান ও মৌলিক অধিকার লঙ্ঘনের ক্ষেত্র তৈরি করবে বলে মন্তব্য করেছে হিউম্যান রাইটস ফোরাম বাংলাদেশ (এইচআরএফবি)।
গতকাল সোমবার এইচআরএফবি এক লিখিত বিবৃতিতে বলা হয়, ইন্টিগ্রেটেড ল’ ফুল ইন্টারসেপশন সিস্টেম বা আইনসম্মত মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেট মাধ্যমে যোগাযোগে আড়ি পাতার ব্যবস্থা চালু করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। গত ১২ জানুয়ারি জাতীয় সংসদে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ তথ্য জানিয়েছেন। এ ধরণের উদ্যোগ জনমনে ব্যাপক উৎকণ্ঠা তৈরি করেছে। একই সঙ্গে এমন উদ্যোগ সংবিধান ও নাগরিকদের মানবাধিকার লঙ্ঘনের নামান্তর বলে এইচআরএফবি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।
ফোরাম মনে করে, সংবিধানে নাগরিকদের ব্যক্তিগত তথ্য ও যোগাযোগের গোপনীয়তার নিশ্চয়তা প্রদান করা হয়েছে, যা এমন উদ্যেগে গুরুতরভাবে লঙ্ঘিত হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়। এ ছাড়া ‘আড়িপাতা’ ও ‘নজরদারি’ সংক্রান্ত বিদ্যমান নানাবিধ শঙ্কা ও ভীতি মানুষের মধ্যে আত্ম-নিয়ন্ত্রণের প্রবণতা বৃদ্ধি করবে, মুক্তিবুদ্ধির চর্চা, গঠনমূলক সমালোচনা তথা গণতন্ত্রের চর্চার ক্ষেত্র আরও সংকুচিত করে ফেলবে। এমন উদ্যোগসমূহ গ্রহণের সময় রাষ্ট্রীয় স্বার্থ সংক্রান্ত নানা যুক্তি দেখানো হলেও পরবর্তীতে তা নাগরিকদের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা, বাক স্বাধীনতা ও মতপ্রকাশ, মুক্ত চিন্তার চর্চা ও প্রকাশ বা সমবেত হওয়ার অধিকার লঙ্ঘনসহ ভিন্নমতাবলম্বীদের দমনে চরমভাবে অপব্যবহার করা হয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে ‘রাষ্ট্রবিরোধী’ ও ‘সরকারবিরোধী’ কর্মকাÐকে একই পাল্লায় মাপা হয়।
আরেকটি বিষয় উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, বেশ কয়েক বছর ধরে নিয়মিত বিরতিতে বিভিন্ন ফোনালাপ ফাঁস হওয়ার একটি প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে যা থেকে প্রতীয়মাণ এ ধরণের ‘আড়িপাতা’র চর্চা ইতোমধ্যে বিদ্যমান রয়েছে। দুঃখজনক হলেও সত্য, কেবল ১২ জানুয়ারির সংসদ অধিবেশনে এ বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে বক্তব্য পাওয়া গেছে।
ব্যক্তিগত তথ্য ও যোগাযোগের গোপনীয়তার অধিকার ক্ষুন্ন করে এমন ঝুকিঁপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকার জন্য সরকারকে আহŸান জানায় এইচআরএফবি। একইসঙ্গে ফোরাম আড়ি পাতার ব্যবস্থা চালু সংক্রান্ত যে কোনো উদ্যোগ অবশ্যই সংবিধান, মানবাধিকারের মূলনীতি এবং নজরদারি সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক মানদÐ বজায় রাখার দাবি জানায়।###
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন