বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের মহাসচিব জননেতা প্রিন্সিপাল স উ ম আবদুস সামাদ বলেছেন, পাঠ্যপুস্তকে ইসলাম বিরোধী বিকৃত ইতিহাস জাতির ধ্বংস ডেকে আনবে। ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়ানোর জন্য একটি গোষ্ঠী পাঠ্যপুস্তকে বিকৃত ইতিহাস, কাল্পনিক ছবি, আশরাফুল মাখলুকাত মানুষকে বানর থেকে সৃষ্টি এবং অপ্রাসঙ্গিক বিষয়ের অবতারণা করে জাতিকে চরমভাবে বিভ্রান্ত করছে। অবিলম্বে ইসলাম বিরোধী শিক্ষা সিলেবাস সংশোধন করে সকল স্তরে ধর্মীয় শিক্ষা বাধ্যতামূলক করতে হবে। গতকাল বুধবার সকালে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআত বাংলাদেশের উদ্যোগে জাতীয় প্রেসক্লাবে জহুর হোসেন চৌধুরী হলে প্রিন্সিপাল মাওলানা আবদুল আলিম রেজভীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত পাঠ্যপুস্তকে ভুলঃ একটি পর্যালোচনা শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রিন্সিপাল আবদুল আলিম রেজভীর সভাপতিত্বে গোলটেবিলে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কলামিস্ট শাইখ উসমান গনী, আহলে সুন্নাতের প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ মুজাফফর আহমদ মুজাদ্দেদী, কাজী সমিতির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট কাজী মুহাম্মদ ইসলাম উদ্দিন দুলাল, বিশিষ্ট আইনজীবী অ্যাডভোকেট হেলাল উদ্দিন, মাওলানা মুহাম্মদ আখতার ফারুক।
কুরআন শিক্ষা বোর্ড ঢাকা মহানগর : এই পাঠ্যক্রমের মাধ্যমে আগামী প্রজন্ম পশুত্ববোধ সম্পন্ন নাগরিকে পরিণত হবে। পাঠ্যপুস্তক থেকে বিতর্কিত অংশ অবিলম্বে বাতিল করতে হবে। গতকাল সন্ধায় রাজধানীর একটি মিলনায়তনে শাইখুল হাদীস মুফতী আবুল কালাম আজাদ আনোয়ারীর সভাপতিত্বে ও মুফতী মাছউদুর রহমানের পরিচালনায় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ কুরআন শিক্ষা বোর্ড ঢাকা বিভাগের সভাপতি ও কেন্দ্রীয় পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মুফতী হেমায়েতুল্লাহ কাসেমী এসব কথা বলেন।
সভায় উপস্থিত ছিলেন, মাওলানা আব্দুল জাব্বার, মুফতী আবু সাঈদ সিদ্দিকী, জামাল উদ্দীন সরদার, মাওলানা মামুনুর রশিদ, মাওলানা নূরে আলম, মাওলানা মিজানুর রহমান।
খেলাফত মজলিস : খেলাফত মজলিসের আমীর মাওলানা মোহাম্মদ ইসহাক বলেছেন, নতুন শিক্ষাক্রমে ভুল, বিভ্রান্তিকর ও ইসলামী চেতনা বিরোধী বিতর্কিত পাঠ্য বই বাতিল করতে হবে। স্কুল মাদরাসার কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন শিক্ষা কারিকুলা ও পাঠ্য পুস্তকে ভুল ইতহাস সন্নিবেশিত করে আগামী প্রজন্মকে আত্মপরিচয়ের সঙ্কটে ফেলার চেষ্টা করা হচ্ছে। খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের বৈঠকে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
গত মঙ্গলবার রাতে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আমীরে মজলিস মাওলানা মোহাম্মদ ইসহাকের সভাপতিত্বে ও মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদেরের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত বৈঠকে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নায়েবে আমীর মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, ড. মোস্তাফিজুর রহমান ফয়সল।
কওমি মাদরাসা শিক্ষক পরিষদ : কওমি মাদরাসা শিক্ষক পরিষদের সভাপতি প্রিন্সিপাল মুহাম্মদ মিজানুর রহমান চৌধুরী পীর সাহেব দেওনা গতকাল এক বিবৃতিতে বলেন, ২০২৩ শিক্ষাবর্ষের জন্য প্রণীত ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির পাঠ্য বইয়ের পরীক্ষামূলক সংস্করণে বিভিন্ন বিষয়ে ইসলামের সাথে সাংঘর্ষিক কোরআন-সুন্নাহ বিরোধী ও মুসলমানদের ঈমান আক্বিদা বিধ্বংসী বিতর্কিত অনেকগুলো বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে দেশবাসীর সাথে আমরাও গভীরভাবে উদ্বিগ্ন ও মর্মাহত। তিনি কতিপয় দাবি পেশ করেন।
দাবিগুলো হচ্ছে, বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন গঠন করে জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রæত দৃশ্যমান দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা, দেশকে বিপুল পরিমাণ আর্থিক ক্ষতি থেকে বাঁচানোর লক্ষ্যে বারবার পাঠ্যপুস্তক পরিবর্তন বন্ধ করা এবং চ‚ড়ান্তভাবে প্রকাশ করার আগে ইসলামী চিন্তাবিদ ও শিক্ষাবিদদের সম্বন্বয়ে পাঠ্যপুস্তক যাচাই করে শিক্ষাক্রমে অন্তর্ভুক্ত করা, দেশের সংবিধান সমুন্নত রেখে স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব সংরক্ষণে ও বাংলাদেশের ইতিহাস ঐতিহ্যকে মাথায় রেখে শিক্ষা সিলেবাসকে জাতীয় শিক্ষা কার্যক্রমে অন্তর্ভ‚ক্ত করা, ভবিষ্যতে এ ধরণের ধৃষ্টতা আর কেউ দেখাতে না পারে সেজন্য সর্বমহলে গ্রহণযোগ্য দ্বীনদার আলেম, ইসলামী লেখক, বুদ্ধিজীবি, সাংবাদিক ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান প্রধানদের নিয়ে বিতর্কমুক্ত একটি নতুন শিক্ষা সিলেবাস প্রণয়ন করা এবং শিক্ষার সর্বস্তরে ধর্মীয় শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক ও সকল পরীক্ষায় আবশ্যিক করা।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ : ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ বলেছেন, ইসলামী জনতার চিন্তা চেতনা বিরোধী এবং দেশ ও দেশের ইতিহাস ঐত্যিকে ধূলিস্যাৎ করে প্রণীত শিক্ষা সিলেবাসে ভিনদেশি চিন্তা ও চেতনার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। বিতর্কিত শিক্ষা সিলেবাসে মোগল ইতিহাস, বাংলাদেশ ও ধর্মীয় চেতনা ধ্বংস করা হয়েছে। কতিপয় বেঈমান নাস্তিক-মুরতাদ মুসলমানদের ঈমান-আক্বিদা ধ্বংসের জন্য শিক্ষা সিলেবাসে ডারঊইনের মতবাদ চালু এবং ইসলামী শিক্ষাকে সঙ্কুচিত করেছে। দেশে নাস্তিক্যবাদ ও হিন্দুত্ববাদ প্রতিষ্ঠার চক্রান্ত রুখে দিতে হবে। এদেশের কোমলমতি শিশুদের বানরের সন্তান বানানোর ষড়যন্ত্র এবং হিজাব সর্ম্পকে বিদ্বেষ ছড়ানোর পরিণাম শুভ হবে না। গতকাল বিকেলে দেশের বিভিন্ন জেলার দায়িত্বশীলদের সাথে মতবিনিময়কালে দলের মহাসচিব এসব কথা বলেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন