সিরাজগঞ্জ জেলার ২ আসনের সংসদ সদস্য ডা. হাবিব মিল্লাত মুন্না রাজশাহীতে প্রধানমন্ত্রীর বিভাগীয় জনসভায় যোগদানের জন্য ট্রেন ভাড়া করা নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া শুরু হয়েছে। ঘটনাটি এখন ‘টক অব দ্যা ডিভিশনে’ পরিনত হয়েছে। দোকান-পাট, রাস্তা-ঘাট, বাজার-হাট সর্বত্র চলছে এই আলোচনা। এ ঘটনার পক্ষে বিপক্ষে চলছে নানান উক্তি, আলোচনা-সমালোচনা।
এমপি মুন্নার এ ঘটনার পক্ষের মন্তব্যে হচ্ছে, তিনি আওয়ামী লীগের সাহসী নেতা বটে। নেতাকর্মীদের এমন সুব্যবস্থাপনা অবশ্যই প্রশংসার দাবি রাখে। এজন্য তাকে সাধুবাদ জানায়। এতে তার মহত্ত ও প্রশস্ত হৃদয়ের পরিচয় মিলেছে। নেতা হলে এমনই হতে হয়, কর্মীদের ভালমন্দ দেখে তাদের চলার পথ সুগম বা প্রশস্ত করতে হয়। অন্যদিকে নিন্দাবাদ জানিয়ে বিভিন্ন মন্তব্য করেন বিপক্ষ দল। তাদের মতে, এটা ধৃষ্টতা সম্পন্ন ব্যবহার, টাকার দাম্ভিকতার পরিচয়, কেউ বলছেন আসন্ন নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষনের সুকৌশল, কেউ বলছেন নিজেকে আলোচনায় নিয়ে আসার মোক্ষম সুযোগ, কেউবা বলছেন নির্বাচনি টিকেট কনফ্রাম করার চিন্তা।
জানা গেছে, আগামী ২৯ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর জনসভাকে ঘিরে গোটা রাজশাহী শহর এখন উত্তপ্ত। কে কিভাবে নেত্রীকে খুশী করবেন, তার মহড়ায় ব্যস্ত সবাই। লিফলেট, ব্যনার, ফেষ্টুন আর বাহারী বিজ্ঞাপন নিয়ে বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠন, ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানও রয়েছে প্রচার-প্রচারনায় যুক্ত। তেমনি দৃষ্টি আকর্ষনের চেষ্টা সিরাজগঞ্জ সদর আসনের সংসদ সদস্যের। তিনি ট্রেন ভাড়া করে, খাবারের ব্যবস্থা করে সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। এ ঘটনার ভাল দিকের পাশপাশি সাধারণ জনমনে নানা প্রশ্নের উদ্রেগ হচ্ছে। আর তা হলো, ট্রেনে বুকিং, রির্জাভেশন চলে, গোটা ট্রেন ভাড়া করা যায় এটা জানতাম না। বিরোধী দল হলে কি এমন সুযোগ পেত বলে মনে হয় ?
সিরাজগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি হেলাল উদ্দিন ও সহ-সভাপতি গাজী শাহাদৎ হোসেন ফিরোজী বলেন, এমপি ডা. মিল্লাত মুন্নার ব্যাক্তিগত উদ্যোগে এ ধরনের ব্যাতিক্রমী আয়োজন প্রশংসার দাবি রাখে। এজন্য তিনি অবশ্যই ধন্যবাদ পেতে পারেন।
সিরাজগঞ্জ বাজার রেলষ্টেশনের ইনচার্জ মাসুদ রানা বিষয়টি নিশ্চত করে বলেন, ২৯ জানুয়ারি রোববার হওয়ায় সিল্কসিটি বন্ধ থাকার কারণে সিডিউলের কোন সমস্যা হবে না। এছাড়া পনেরটি বগিতে যতগুলো আসন রয়েছে প্রত্যেক আসনের জন্য ১৩৫ টাকা করে ভাড়া দিয়েই ট্রেনটি নিতে হবে। অতিরিক্ত বগির চাহিদা থাকলে সেটা দেয়া যাবে কিনা তা নির্ভর করবে ঐ মুহূর্তে অতিরিক্ত বগি আছে কিনা তার উপর। যদি থাকে সেটাও অন্যান্য বগির মতই ভাড়া দিতে হবে।
ট্রেনের প্রতিটি বগিতে প্রায় ২৫০ জন করে যাত্রী যাবার ব্যবস্থা রয়েছে। এমপির নির্বাচনী এলাকা থেকে প্রায় পাঁচ হাজার নেতাকর্মী অংশ নেবার কথা রয়েছে। প্রয়োজনে আরো কয়েকটি বগি সংযুক্ত করা হতে পারে।
এমপি ডা. মো. হাবিব মিল্লাত মুন্না জানান, ঐতিহাসিক সমাবেশ সফল করার জন্য আমি এই বিশেষ ট্রেনের ব্যায় ভারসহ সমাবেশে যোগদানকারী আমার নির্বাচনী এলাকার সকল নেতাকর্মীদের আপ্যায়নের ব্যবস্থা রেখেছি।
জেলা সিরাজগঞ্জ আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাড. আলহাজ্ব হোসেন আলী হাসান বলেন, কারো নেতৃত্বে আমরা যাচ্ছিনা। আর কেউ ট্রেন ভাড়া করেছে বলে আমার জানা নেই। নেতারা তাদের নিজ খরচে টিকেট করে সদর উপজেলার প্রায় তিনহাজার নেতাকর্মী সমর্থকদের নিয়ে রাজশাহীতে মহাসমাবেশে যোগ দিতে যাচ্ছে।
অপরদিকে সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক সাইদুর রহমান বাচ্চু বলেন, আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা যে টাকার পাহাড় গড়েছেন, ট্রেন ভাড়া করে সমাবেশে যোগদান তারই প্রমাণ বহন করে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন