মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

একুশে ফেব্রুয়ারি কেন্দ্র করে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা

প্রকাশের সময় : ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া বলেছেন, একুশে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে শহীদ মিনার ও এর আশপাশে নয় হাজার পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকবে।
এর মধ্যে রয়েছে আট হাজার পোশাকধারী এবং এক হাজার সাদা পোশাকে গোয়েন্দা পুলিশ সদস্য। এ ছাড়া ওই এলাকায় চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। সেইসঙ্গে সেদিন পুরো রাজধানীতে ২০ হাজার পুলিশ সদস্য নিরাপত্তা রক্ষায় কাজ করবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, ২১ ফেব্রুয়ারি পুরো এলাকায় নিñিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যে রয়েছে, শহীদ মিনার-কেন্দ্রিক (নিচ) নিরাপত্তা ব্যবস্থা, জগন্নাথ হল-টিএসসি-ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল-কেন্দ্রিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা, পলাশী মোড়-চানখারপুল-হাইকোর্টকেন্দ্রিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও শহীদ মিনার-কেন্দ্রিক ওপরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। তিনি বলেন, ‘নিরাপত্তার স্বার্থে ওই এলাকার সড়কগুলোতে পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকবে। ২০ তারিখ সন্ধ্যা ৭টা থেকে পরদিন বিকেল ৫টা পর্যন্ত এ নিরাপত্তা ব্যবস্থা বজায় থাকবে। আর্চওয়ের মধ্যে দিয়ে সকলকে শহীদ মিনারে প্রবেশ করতে হবে। এর বাইরে কেউ শহীদ মিনারে প্রবেশ করতে পারবে না। শাহবাগ থেকে টিএসসি হয়ে শহীদ মিনার পর্যন্ত রাস্তায় পর্যাপ্ত সংখ্যক সিসিটিভি বসানো থাকবে। সেগুলিকে মনিটরিং করার জন্য শহীদ মিনারের পাশে একটি বুথ থাকবে। পুলিশের ঊর্ধ্বতন ও বিশেষজ্ঞ কর্মকর্তারা এটি দেখভাল করবেন। কোনো অসংগতি দেখা দিলে তা মাঠের পুলিশ কর্মকর্তাদের অবহিত করে  তাৎক্ষণিকভাবে সমাধান করা হবে।
কমিশনার বলেন, যারা সাদা পোশাকে দায়িত্ব পালন করবেন তারা জনসাধারণের সঙ্গে মিশে গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করবেন। কেউ শক্তি প্রয়োগ করতে চাইলেও যেন সেটি ভেস্তে দেওয়া হয়। ফুট পেট্রোলিংয়ের ব্যবস্থা থাকবে যাতে পুরো এলাকায় কোনো হকার বসতে না পারে। এছাড়া কোনো সভা-সমাবেশ যাতে কেউ করতে না পারে সে ব্যাপারেও তারা সজাগ থাকবে। আগত অতিথিদের গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জিমনেশিয়াম পার্কে জায়গা রাখা হয়েছে। এই জায়গা ছাড়া আর কোথাও গাড়ি পার্কিং করতে দেওয়া হবে না। পুলিশ কমিশনার বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার যেসব গেট রয়েছে, সেগুলোতে পাহাড়া বসানো থাকবে। এক্ষেত্রে প্রক্টোরিয়াল বডির সদস্য ও বিএনসিসির সদস্যরা পুলিশকে সহায়তা করবে। একটি নির্দিষ্ট সময়ের পর ওইসব গেট দিয়ে কোনো গাড়ি প্রবেশ করতে পারবে না। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে বের হয়ে যাওয়ার পর রাত ১২টা ৪৫ মিনিটের দিকে শহীদ মিনার জনসাধারণের জন্য উন্মুুক্ত করে দেওয়া হবে। তবে জনগণকে অবশ্যই শৃঙ্খলা মেনে চলতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে ট্রাফিক বিভাগের ডিসি রেজওয়ানুল হক বলেন, ২০ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যার পর থেকে শাহবাগ হয়ে টিএসসির দিকে কোনো গাড়ি চলাচল করতে পারবে না। হাইকোর্ট হয়ে দোয়েল চত্বরের দিকে গাড়ি চলাচল বন্ধ থাকবে। বকশীবাজার মোড় থেকে পলাশী ও শহীদ মিনারের দিকে গাড়ি যাবে না। নীলক্ষেত হয়ে পলাশীর মোড়ের দিকে গাড়ি চলাচল করতে পারবে না। চানখারপুল হয়ে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের সামনের রাস্তা দিয়েও কোনো গাড়ি চলাচল করতে পারবে না।
রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার আব্দুল বাতেন বলেন, শহীদ মিনারে প্রবেশের জন্য পলাশীর দিক ও বকশীবাজার মোড়ের রাস্তা পায়ে হেঁটে ব্যবহার করতে পারবেন জনসাধারণ। আর বের হওয়ার জন্য চানখারপুল ও দোয়েল চত্বরের রাস্তা ব্যবহার করতে পারবেন।
শহীদ মিনারে প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেত্রী, মন্ত্রী-এমপি এবং বিদেশি অতিথিদের পুষ্পস্তবক অর্পণ করে স্থান ত্যাগের পর ১২টা ৪৫ মিনিটে সর্বসাধারণের জন্য পলাশী মোড় উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে বলে জানান কমিশনার।
শহীদ মিনার এলাকার নিরাপত্তায় শুক্রবার থেকেই ওই এলাকায় সব ধরনের মিছিল ও সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হবে বলেও জানান তিনি।
কমিশনার বলেন, জনসাধারণ দোয়েল চত্বর হয়ে টিএসসি, নীলক্ষেত হয়ে পলাশী মোড় এবং শাহবাগ হয়ে নীলক্ষেত হয়ে পলাশী মোড় হয়ে শহীদ মিনারে পায়ে হেঁটে প্রবেশ করবে। পলাশীর মোড় ছাড়া অন্য কোনো রাস্তা দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে না।
নির্দেশিত রাস্তার নিয়মকানুন মেনে চললে নিরাপত্তার কোনো বিঘœ ঘটবে না, তাই সর্বসাধারণকে নির্দেশিত নিয়মগুলো মেনে চলে পুলিশকে সহায়তা করার জন্য অনুরোধ জানান কমিশনার।
প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেত্রীর মতো সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া ভিআইপিদের ন্যায় সুবিধা পাবেন কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে ডিএমপি কমিশনার বলেন, আমি একজন প্রজাতন্ত্রের কর্মী হিসেবে কোনো ব্যক্তি আমার কাছে মুখ্য নয়, নিয়ম ও প্রচলিত আইন মেনে চলব আমি। তবে কেউ যদি আমাদের কাছে অনুরোধ করে তাহলে ভিআইপিরা শহীদ মিনারস্থল ত্যাগ করার পর তাকে স্বল্প লোকসহ দোয়েল চত্বর হয়ে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া যেতে পারে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন