মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি কর্মী পাঠানোর প্রক্রিয়ায় বড় ধরণের পরিবর্তনের আভাস দিয়েছেন দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাইফুদ্দিন নাসুসন ইসমাইল। কর্মীদের স্বার্থে প্রয়োজনে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) পরিবর্তন, অভিবাসন ব্যয় কমানোসহ আরও নতুন সংযোজনের কথা এসেছে।
এসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে চলতি মাসেই ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠকে বসবে ঢাকা-কুয়ালালামপুর। রোববার (৫ ফ্রেব্রুয়ারি) প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদের সঙ্গে বৈঠক করেন মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। বৈঠক শেষে দুই মন্ত্রী সাংবাদিকদের ব্রিফ করে এসব তথ্য জানান।
প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী বলেন, আলাপের মধ্যে আমাদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট যা যা আছে সব কথাই হয়েছে। এখানে কস্টের ব্যাপার আছে, ওখানে যাওয়ার ব্যাপার আছে। সবকিছুই আলোচনা হয়েছে। একটা বিষয় মনে রাখতে হবে, এ সরকার কিন্তু নতুন সরকার। আগের সরকারের সঙ্গে আমাদের যা কিছু কথা হয়েছে, এখন কিন্তু বিরাট একটা পরিবর্তন আসবে। এ জিনিসটা তিনি (মালয়েশিয়ার মন্ত্রী) আশ্বস্ত করেছেন।
ইমরান আহমদ বলেন, এমওইউ পরিবর্তন করার কথা আসছে। প্রয়োজন হলে আরও কিছু পরিবর্তন আসবে। কিন্তু চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত উনি (মালয়েশিয়ার মন্ত্রী) এখনও দিতে চাইছেন না। আমার বিশ্বাস, যে দায়িত্ব নিয়ে তিনি (মালয়েশিয়ার মন্ত্রী) কথা বলেছেন, আমরা ভালো কিছুই পাব। চলতি মাসে দুই দেশের ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠকে আলোচনার মাধ্যমে এসব বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান মন্ত্রী।
মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা অভিবাসন ব্যয় কমিয়ে আনতে চাই। আগামী দিনে দুই দেশের প্রতিনিধিরা বসবে। আমরা আগের করা সমঝোতা চুক্তি নিয়ে কথা বলেছি। প্রতিনিধিরা যাচাই-বাছাই করবেন যে এমওইউতে পরিবর্তন আনার প্রয়োজন আছে কিনা? আজকের আলোচনার একটা বড় অংশই ছিল এই চুক্তি। মালয়েশিয়া সরকার এ প্রক্রিয়াকে সহজতর করতে চায় যেন মূল লক্ষ্যে পৌঁছানো যায়।
সাইফুদ্দিন বলেন, আমাদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে, চাহিদা পূরণ করা, ব্যয় কমানো, বিদেশি কর্মীদের সম্মান রক্ষা করা। যদি বর্তমান প্রক্রিয়ায় সেই লক্ষ্যে পৌঁছানো না যায়, আমরা পরিবর্তন আনতে প্রস্তুত। সেজন্য আমরা আলোচনায় বসব। দেশটিতে সর্বোচ্চ সংখ্যক বাংলাদেশি অভিবাসী রয়েছে জানিয়ে মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মালয়েশিয়ায় বর্তমানে ১৫ লাখ বিদেশি কর্মী আছে। এর মধ্যে সাড়ে চার লাখ বাংলাদেশি কর্মী। সেই কারণেই বাংলাদেশ ১৫টি সোর্স কান্ট্রির মধ্যে প্রথম স্থানে আছে।
তিনি বলেন, রিক্যালিব্রেশন প্রোগ্রাম নিয়ে আলোচনা হবে। মালয়েশিয়ায় অনেক অবৈধ কর্মী আছেন। তাদেরকে একটি প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে বৈধ করা হচ্ছে। গত ২৭ জানুয়ারি থেকে এই প্রোগ্রাম শুরু হয়েছে। এক সপ্তাহে বৈধকরণের যা অনুমোদন আমরা দিয়েছি তার ৫৫ শতাংশ বাংলাদেশি। রিক্যালিব্রেশন নিয়ে আলোচনার বিষয়ে প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী জানান, রিক্যালিব্রেশনে ওনারা কোনো জাত বিচার করবে না। যারা আছে ওখানে ওনারা যদি এপ্লাই করে ফিস দেয়, তারা তাদের লিগ্যাল করে নেবে।
এছাড়া ২০১৬ তে রিহিয়ারিং স্কিম ছিল, ওটা পাঁচ বছরের ছিল। ওটার ডেট এক্সপায়ার্ড হয়ে গেছে তারাও রিক্যালিব্রেশন হতে পারবে। এদিকে রিক্রুটিং এজেন্সির সংখ্যা বাড়ানো নিয়ে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে কোনো জবাব দেননি প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন