আল্লাহর কুরআনের প্রতি মুমিন মুসলমানের স্বভাবজাত আকর্ষণে সারা দেশে কুরআনের হাফেয বানানোর একটি প্রবণতা শহর-গ্রামে সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে। একজন ছাত্র হাফেয হতে হলে কমপক্ষে ৩/৪টি বছর নিরবচ্ছিন্নভাবে উৎসর্গ করতে হয় এবং কুরআন মুখস্থকরণ রপ্ত করতে হয় শৈশব ও কৈশোরে। হাফেয হওয়ার পর তাদের প্রধান ও একমাত্র কর্মক্ষেত্র রমজানে মসজিদে তারাবীহতে ইমামতি ও নামাযে এক খতম কুরআন তেলাওয়াত করা। বাস্তবতা হচ্ছে হাফেযের সংখ্যা এত বেশি হয়েছে যে, রমজানে খতম পড়ানোর সুযোগ অনেকেই পাচ্ছেন না।
আরেকটি বাস্তবতা হচ্ছে, কোনো হাফেয যদি পরপর তিন বা চার বছর রমজানে তারাবীহতে খতমে কুরআন পড়ানোর সুযোগ না পায় তাহলে তিনি হৃদয়ের স্মৃতিপটে কুরআন মুখস্থ রাখতে পারে না। তখন তিনি এক ধরনের মর্মবেদনা অনুভব করেন কুরআন মুখস্থ করে ভুলে যাওয়ার কারণে। তখন একথা ভাবা স্বাভাবিক যে, জীবনের দু‘তিনটি বছর যে কুরআন মুখস্থ করার পেছনে ব্যয় করলাম, তার ফলাফল কী। তার চেয়ে এটাই উত্তম ছিল যে, মুসলমান হিসেবে জীবন যাপনের জন্য বিশুদ্ধ কুরআন তেলায়াত, প্রয়োজনীয় সূরাসমূহ মুখস্থ করা ও মাসআলা মাসায়েল শেখানোর যে সহজ উন্নত ও বৈজ্ঞানিক নূরানী পদ্ধতি কারী বেলায়েত সাহেব উদ্ভাবন করেছেন (আল্লাহ তাকে জান্নাতবাসী করুন) সেখানে প্রাথমিক শিক্ষা হাসিল করবে। এরপর স্কুলে বা মাদরাসায় চতুর্থ শ্রেণিতে কিংবা হেফযখানায় ভর্তি হবে। এটিই তো যুক্তির দাবি ছিল। বিষয়টি নিয়ে আবেগতাড়িত না হয়ে চিন্তা করার জন্য দ্বীনদার জনগণ ও আলেম সমাজের প্রতি আহŸান জানাচ্ছি। হাফেয হওয়ার জন্য কণ্ঠস্বর ও স্মরণশক্তির দিকটি অবশ্যই বিবেচ্য। নূরানী মাদরাসাতেই নির্ণয় করা যাবে কণ্ঠস্বর ও স্মরণশক্তির দিক দিয়ে হেফয করার প্রতিভাধারী শিশু কারা, যাদেরকে হেফযখানায় ভর্তি করালে ভবিষ্যতে ভালো করতে পারবে। এসব চিন্তা না করে গড্ডালিকা প্রবাহে কঠিন কঠোর নিয়ম ও শাসনের নিগড়ে বন্দি করে অবোধ শিশুদের দিয়ে কুরআন হিফয করানোর পরিণতি দয়া করে ভেবে দেখুন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন