ফের ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আদালত বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে আইনজীবীরা। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে জেলা আইনজীবী সমিতির বিশেষ সাধারণ সভা শেষে এই ঘোষণা দেন জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট তানভীর ভূঞা।
তিনি বলেন, আমরা আইনমন্ত্রীর আশ্বাসের প্রেক্ষিতে দুইটি আদালত ছাড়া বাকি আদালতে যাওয়া শুরু করেছিলাম। কিন্তু আমাদের আগের জায়গায় ফিরে আসতে হয়েছে। আমরা বিশ্বাস করিনা আইনমন্ত্রী মিথ্যা আশ্বাস দিয়েছেন। আমরা ধরে নিয়েছি তিনি অপারগ। তাই তিনি বলতে পারছেন না। কিন্তু আইনজীবীরা তা মানতে পারছেন না। এই কারণে আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত সকল আদালত বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে আইনজীবীরা।
তিনি আরো বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, পুরাতন কাচারি এলাকায় আমাদের সম্পদ সংরক্ষণ, জেলা জজ শারমিন নিগার ও নারী ও শিশু নির্যাতন-১ এর বিচার মো. ফারুকের অপসারণ ও নাজির মোমিনের শাস্তির দাবি মানা না হলে আইনজীবীরা তাদের আন্দোলন অব্যাহত রাখবে। সর্বশেষ কর্মসূচি অনুযায়ী গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত আইনজীবীরা জেলা ও দায়রা জজ এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর আদালত বর্জন কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেন। ১ ফেব্রুয়ারি সাধারন সভা করে আইনজীবীরা এ সিদ্ধান্ত নেন।
উল্লেখ্য, গত ১ ডিসেম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এ আইনজীবীরা মামলা দাখিল করতে গেলে বিচারক মোহাম্মদ ফারুক মামলা না নিয়ে আইনজীবীদের সম্পর্কে আপত্তিকর মন্তব্য করেন বলে অভিযোগ করেন আইনজীবীরা। এ ঘটনায় ২৬ ডিসেম্বর সমিতির সভা করে আইনজীবীরা ১ জানুয়ারি থেকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক মোহাম্মদ ফারুকের আদালত বর্জনের ঘোষণা দেয়। এদিকে বিচারকের সঙ্গে অশোভন আচরণের অভিযোগে ৪ জানুয়ারি কর্মবিরতি পালন করেন আদালতের কর্মচারিরা। এ অবস্থায় জেলা জজ, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ ও আদালতের নাজির মোমিনুল ইসলামের অপসারণ চেয়ে ৫ জানুয়ারী থেকে পুরো আদালত বর্জনের লাগাতার কর্মসূচি পালন করে আসছিলেন আইনজীবীরা। গতকাল মঙ্গলবারের মধ্যে আইনজীবীদের দাবি পূরণ না হলে বিশেষ সাধারণ সভা করে সব আদালত বর্জনের মতো কঠোর কর্মসূচি গ্রহণ করা হতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে জানানো হয়েছিলো। সাধারণ সভায় উপস্থিত সকল আইজীবীদের মতামতের ভিত্তিতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এছাড়াও বিচারকের সাথে অশোভন আচরণ ও অশালীন শ্লোগান দেয়ার অভিযোগে ব্রাহ্মণবাড়িয়া আইনজীবী সমিতির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ ২৪ আইনজীবীকে দু’দফায় তলব করেছে উচ্চ আদালত। এসব ঘটনার প্রেক্ষিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আইনজীবীদের সাথে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সাথে বৈঠকের পর দুটি আদালত বাদে বর্জনের কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন