শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘন বন্ধে পদক্ষেপ চান অস্ট্রেলিয়ার সিনেটর রাইস

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ১২:০০ এএম

বাংলাদেশে গুম, খুন, নির্যাতনসহ সব ধরণের মানবাধিকার লংঘনের ঘটনা বন্ধে জরুরি পদক্ষেপ নিতে অস্ট্রেলিয়ার সরকারের প্রতি আহŸান জানিয়েছেন দেশটির প্রভাবশালী সিনেটর জ্যানেট রাইস। অস্ট্রেলিয়ান পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষে গত ৮ ফেব্রæয়ারি বৈশ্বিক মানবাধিকার পরিস্থিতি এবং দেশে দেশে মানবাধিকার লংঘনকারীদের বিরুদ্ধে ম্যাগনেটস্কি আইনের আওতায় নিষেধাজ্ঞা প্রদানের বিষয়টি পর্যালোচনার তিনি এই আহŸান জানান। ১০ মিনিটের বক্তৃতার ভিডিওতে দেখা গেছে, চার মিনিটের মাথায় তিনি বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেন। তার আগে পরে তিনি মিয়ানমার, ইরান, চীন, আজারবাইজানসহ বিভিন্ন দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করেন। বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি বিষয়ক হিউম্যান রাইটস ওয়াচের রিপোর্টের সারাংশের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, আমি বাংলাদেশের পরিস্থিতিও এখানে উল্লেখ করতে চাই। দুঃখজনকভাবে আমরা দেশটির সরকার মানবাধিকার লংঘনের ঘটনাগুলো অব্যাহত রয়েছে বলে দেখছি। আমি অস্ট্রেলিয়ায় থাকা বাংলাদেশি বংশোদ্ভ‚তদের সমর্থনের জন্য ধন্যবাদ জানাই। তাদের অনেকেই নিউ সাউথ ওয়েলসে থাকেন। স¤প্রতি আমি তাদের সঙ্গে একটি বৈঠক করেছি। তাদের সাহস ও ধৈর্য আমাকে প্রেরণা যুগিয়েছে। তাদেরকে স্তব্ধ করে দেয়ার চেষ্টা হয়েছিল দাবি করে সিনেটর জ্যানেট পার্লামেন্টে বলেন, বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে বিচারবহির্ভ‚ত হত্যা, নির্যাতন এবং গুমের অভিযোগ রয়েছে। সরকার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অধীনে সাংবাদিক এবং সমালোচকদের গ্রেপ্তার করছে। দেশের সুশীল সমাজের কণ্ঠরোধ করে রাখা হয়েছে। বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ সমকামীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতেও ব্যর্থ হয়েছে। ধর্মীয় সংখ্যালঘু, আদিবাসী এবং নারীরা ব্যাপক সহিংসতা এবং যৌন নিপীড়নের মুখোমুখি হচ্ছেন। তিনি আরো বলেন, আমরা অস্ট্রেলিয়ার সরকারের প্রতি এই নৃশংসতাকে চিহ্নিত করা এবং দেশটিতে মানবাধিকার সুরক্ষায় যা যা করা প্রয়োজন তা করার আহŸান জানাই।

বিশ্বের দেশে দেশে মানবাধিকার লংঘনের অভিনব এবং গুরুতর সব ঘটনা ঘটছে উল্লেখ করে ফেডারেল পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষে দেয়া বক্তৃতার জ্যানেট রাইস বলেন, তার দল অস্ট্রেলীয় গ্রিনস বিশ্বাস করে যে সার্বজনীন মানবাধিকার একটি মৌলিক বিষয়। বিশ্বের সকল দেশের সকল মানুষের অবশ্যই মানবাধিকারের প্রতি সম্মান রাখা উচিত। তার পার্টি অস্ট্রেলীয় গ্রিনস-এর পররাষ্ট্র বিষয়ক কোনো ইস্যু এটি। পার্টির বিদেশনীতি পরিচালনায় এটি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে প্রতিধ্বনিত হয়। সেখানে তিনিও মতামত ব্যক্ত করেন বলে জানান।

উল্লেখ্য, সিনেটর জ্যানেট রাইস ৮ বছর ধরে অস্ট্রেলিয়ান পার্লামেন্টে রয়েছেন। সিনিয়র এ সিনেটর ত্রিশ বছরেরও বেশি সময় ধরে বিশ্বময় ন্যায়বিচার তথা মানবিক পৃথিবী গড়ার আন্দোলনে সক্রিয়। তিনি গ্রিনস পার্টির নেতা এবং তার অঞ্চলে পার্টি প্রতিষ্ঠাতাদের অন্যতম। পার্লামেন্ট মেম্বার হওয়ার আগে তিনি মেলবোর্নের পশ্চিমের মেরিবির্নং শহরের কাউন্সিলর এবং মেয়র হিসেবে কাজ করেছেন। জ্যানেট তার দলের পররাষ্ট্র বিষয়ক মুখপাত্রের দায়িত্ব পালন করেছেন বহু বছর। বৈশ্বিক শান্তি, গণতন্ত্র, পরিবেশগত স্থায়িত্ব, সাম্য এবং ন্যায়বিচারের একনিষ্ঠ সমর্থক জ্যানেট রাইস আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে মানবাধিকারের প্রচারে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে এডভোকেসি করেন। মূলত এটিই তার রাজনীতির ভিত্তি। অস্ট্রেলিয়ান পার্লামেন্টে তিব্বতি, উইঘুর এবং অন্য সংখ্যালঘুদের ওপর কর্তৃত্ববাদীদের চাপ তথা মানবাধিকার লংঘনের ঘটনাগুলো নিয়মিত তুলে ধরেন তিনি। বিশ্বের যেখানেই মানবাধিকার লংঘনের ঘটনা ঘটুক তিনি সোচ্চার হন, নিন্দা করেন। চরম অবস্থায় অব্যাহতভাবে মানবাধিকার লংঘনকারী নেতাদের বিরুদ্ধে অস্ট্রেলিয়ান পার্লামেন্টের মাধ্যমে ম্যাগনিটস্কি আইনের আওতায় নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘটনাও ঘটিয়েছেন অনেক বার। ##

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (3)
হাছান মাহমুদ ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ৪:২২ এএম says : 0
এ দেশে বিরোধী শক্তিকে সব সময় সরকার দমীয়ে রাখার চেষ্টা করে। এটা নিয়ে জাতিসংঘ দেখলে হয়তো এ বিষয়ে সমাধান হতো
Total Reply(0)
aman ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ৪:২৪ এএম says : 0
এ দেশে মানবাধিকার লংঘন এটা আর নতুন নয়। যে সরকার ওই আসে এ দেশে বিরোধী শক্তিকে সব সময় ধমীয়ে রাখার চেষ্টা করে ক্ষমতাশীর সরকার। তবে বর্তমানে সবচেয়ে বেশি চলছে এ অবস্থা। এজন্য এ দেশের সুশীল সমাজ ও বিশ্ব নেতৃবৃন্দ সোচ্চার হলে এর প্রতীকার পাওয়া সম্ভব
Total Reply(0)
মেসস ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ৪:২৭ এএম says : 0
আমরা চাই এ দেশের নির্বাচন ব্যবস্থা এমন হোক যাতে ভবিষ্যতে নির্বাচন নিয়ে কোনো দলের আর অনিশ্চিয়তার মধ্যে পড়তে না হয়। এছাড়া ভবিষ্যতে ক্ষমতাশীন সরকার বিরোধী পক্ষের লোকদের ওপর দমন পীড়ন ও গুম না চালাতে পারেন। এ নিয়ে একটা সুরাহা হওয়া দরকার
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন