শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

রংপুরে ফুল চাষ লাভ ও সম্মানের

মহসিন রাজু, রংপুর থেকে ফিরে | প্রকাশের সময় : ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ১২:০২ এএম

রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলায় ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের পাশে প্রায় ১ বিঘা জমির একটি ফুলের নার্সারিতে বসেছিলেন এর সত্ত্বাধিকারি আশরাফুল আলম। গত ৯ ফেব্রুয়ারি কথা হল তাঁর সাথে। জানতে চাইলাম রংপুর থেকে এতটা দূরে কয়েক প্রজাতির গাঁদা ও কসমস ফুলের এই নার্সারির প্রডাক্ট কে নেয় ও কোথায় যায়? লাভ হয় ছোট্ট এই নার্সারি থেকে ?
আশরাফুল আলমের নার্সারির নাম নাইম নার্সারি। এতে টং ঘরের মতো ছোট্ট একটা একচালার ছাপড়ায় বসে শুরু হল কথাবার্তা। তার মালিকানাধীন ছোট্ট এই নার্সারির আশেপাশের জমির ভুট্টা, পেকে ওঠা সরিষা, শীতের সবজি মুলা, পাতাকপি, ফুলকপির ক্ষেতগুলো দেখিয়ে বলেন এখানে এই গুলোয় চাষ হয়। আমরাও এই গুলোয় চাষাবাদ করি। তবে কিছুদিন হয় রংপুরের ফুলের দোকানগুলোতে বাড়ছে ফুলের চাহিদা ।
যশোর ও বগুড়া থেকে ফুল এনে ওইসব দোকানের চাহিদা মেটানো যেমন বায়বহুল, তেমনই সময় সাপেক্ষ। সেই কারণেই রংপুরের ফুল ব্যবসায়ীদের ইচ্ছায়, উৎসাহে এবং সহযোগিতায় তিনি এই নার্সারি দিয়েছেন। ১৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ভালোবাসা দিবসকে টার্গেট করে তিনি কয়েক প্রজাতির গাঁদার চাষ করেছি। লাভের কথা যদি বলি লাভ মোটামুটি ভালোই হয়। তাছাড়া মনও ভালো থাকে ফুলের চাষাবাদে জড়িত থাকলে। মানুষ সম্মান দিয়েও কথা বলে। উপজেলা কৃি অফিসের কর্তারাও খোঁজ খবর রাখে । এনজিও থেকেও পুঁজি দিতে চায়।
স্থানীয় সাংবাদিক খোরশেদ আলম জানান, পীরগঞ্জের এই এলাকাটি খুবই সুজলা সুফলা। বাঙালির প্রধান খাদ্য সামগ্রী আমন ও বোরো ধানের পাশাপাশি এখানে অনেক আগে থেকেই গম, ভুট্টা, আলুসহ শীতকালীন সব ধরনের সবজিই উৎপাদন হয়। ঢাকা-রংপুর শহরের পূর্বদিকের অংশে সুপারি আবাদের প্রচলন আছে। তবে গত ৬ থেকে ৭ বছর ধরে এই অঞ্চলে ধিরে ধিরে নার্সারি ও নার্সারিতে বানিজ্যিকভাবেই ফুলের চাষ বাড়ছে। খোরশেদ আলম আরও জানান, রংপুর অঞ্চলে কিন্তু তামাকের আবাদ কমছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে।
তিনি আরও জানান, দেশের বিড়ি ও সিগারেট কারখানার মালিকরা এখন তাদের কাঁচামাল প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে তামাক চাষিদের ফান্ডিংও করছে বলে শোনা যায়। তার বক্তব্য, রংপুর অঞ্চলের অল্প সংখ্যক ফুল চাষিদের তালিকা করে সরকারি পৃষ্টপোষকতা নিশ্চিত করলে স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে রফতানি করা সম্ভব।
বিভাগীয় শহর রংপুরের বাসিন্দা এবং রংপুর বেতারের তবলা শিল্পী শিশির পারভেজ জানালেন, এখন রাজনীতির সভামঞ্চই বলেন, আর বিয়ের স্টেজ সাজানোর কথাই বলেন, প্রচুর পরিমাণে ফুল ছাড়া আর চলেনা। দু’দশক আগেও রংপুর শহরের বনেদি বাড়িঘর গুলোয় জবা, করবি, হাসনাহেনা জাতীয় ফুলের গাছ শোভা পেত। পয়সা দিয়ে মানুষ ফুল কিনবে এমনটা ভাবাও যেতনা। সেই রংপুর শহরের ২০টি ফুলের দোকানেই এখন লক্ষ লক্ষ ফুল ও ফুলের মালা বিক্রি হয়।
রংপুর আঞ্চলিক কৃষি অফিসে যোগাযোগ করে জানা যায়, তামাক প্রবণ রংপুর, লালমনিরহাট এবং নীলফামারী জেলায় ধিরে ধিরে বাড়ছে ফুলের চাষ ।
সূত্র মতে, উত্তরের জেলাগুলোর মধ্যে নাটোর ও বগুড়ার পর বৃহত্তর রংপুর অঞ্চল থেকেও প্রতিদিনই রাজধানী ঢাকায় খুবই দামি জারবেরা, গ্লাডিওলাস থেকে সস্তা গাঁদা ফুলের লক্ষ লক্ষ টাকার চালান যাচ্ছে রাজধানী ঢাকায় ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন