শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

লাখো জাকেরান-আশেকানে মুখর বিশ^ জাকের মঞ্জিল

৪ দিনের উরশ শরিফ শুরু

নাছিম উল আলম | প্রকাশের সময় : ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ১২:০২ এএম

জুমার নামাজান্তে পীর সাহেবের কবর জিয়ারত ও দুপুরের খাবারের পর সন্ধ্যায় মাগরিবের ফরজ ও সুন্নাত শেষে দু’রাকাত করে ৩ বারে ৬ রাকাত নফল নামাজ আদায় এবং ফাতেহা শরিফ পাঠান্তে দোয়া মেনাজাতের মাধ্যমে ফরিদপুরের বিশ্ব জাকের মঞ্জিলে ৪ দিনের বিশ্ব উরশ শরিফ শুরু হয়েছে। এতে যোগ দিতে দেশ-বিদেশের লাখ লাখ জাকেরান ও আশেকানসহ মুসল্লি বিশ^ জাকের মঞ্জিলে পৌঁছেছেন। আগামী মঙ্গলবার সকালে এ দরবার শরিফে আখেরী মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে।
এবারো বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে জাকেরান ও আশেকান এবং ধর্মপ্রাণ মুসলমান ছাড়াও বিভিন্ন ধর্মের অনুসারীগণও বিশ^ জাকের মঞ্জিলের উরশ শরিফে সমবেত হয়েছেন। ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কুচবিহার জেলা থেকেই অন্তত ৫শ’ জাকেরান ও আশেকান বিশ^ জাকের মঞ্জিলে পৌঁছেছেন। ভারতের চেঙরাবান্দা ও বাংলাদেশের বুড়িমারি সীমান্ত দিয়ে এসব জাকের গত বুধবার রাতে বিশ^ জাকের মঞ্জিলে পৌঁছেন।
পীর ছাহেব হজরত মাওলানা শাহ সুফি সৈয়দ খাজাবাবা ফরিদপুরী ছাহেব-এর প্রতিষ্ঠিত বিশ্ব জাকের মঞ্জিল ও সন্নিহিত প্রায় ২৫ বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে এ উরশ শরিফের প্রস্তুতি ইতঃপূর্বেই সম্পন্ন হয়। লাখ লাখ জাকেরান ও আশেকানসহ ধর্মপ্রাণ মুসাল্লর আল্লাহ আল্লাহ জিকির এবং নামাজসহ বিভিন্ন ধরনের এবাদত-বন্দেগীতে বিশ্ব জাকের মঞ্জিল ও সন্নিহিত এলাকায় এখন সম্পূর্ণ ভিন্ন পরিবেশ।
শুক্রবার সন্ধ্যায় উরশ শরিফের প্রথম দিনেই কয়েক লাখ মুসল্লি দু রাকাত নফল নামাজ ও মিলাদ শরিফ পাঠের পরে পীর ছাহেবের কবরে ফাতেহা শরিফ পাঠ শেষে মোনাজাতে অংশ নেন। বাদ আসর নামাজান্তে তওবা কবুলিয়াতের ফয়েজ আদায়ের পরে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত শুরু হয়। মাগরিব নামাজ বাদে ছয় রাকাত নফল নামাজ এবং ফাতেহা শরিফ পাঠের পরে দোয়া-অন্তে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত, মিলাদ ও জিকিরের মাধ্যমে উরশ শরিফের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। দেশবরেণ্য ওলামায়ে কেরাম ছাড়াও বিশ্ব জাকের মঞ্জিলের বিশিষ্ট খাদেমবৃন্দও এ উরশ শরিফে বয়ান করছেন।
এ উরশ শরিফ উপলক্ষে বিশ্ব জাকের মঞ্জিলে সমবেত লাখ লাখ মানুষের আহার ও বিশুদ্ধ পানি সরবারহ ছাড়াও জামাতের সাথে নামাজ আদায়ে সব ব্যবস্থা ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। শান্তিÑশৃংখলা ও নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে বিশ্ব জাকের মঞ্জিলের কয়েক হাজার স্বেচ্ছাসেবক ছাড়াও পুলিশ ও র‌্যাব মোতায়েন রয়েছে।
এ উপলক্ষে বিশ্ব জাকের মঞ্জিলের পীর ছাহেবের আধ্যাত্মিক উত্তরাধিকারী ও বড় ছাহেবজাদা আলহাজ খাজা মাহফুজুল হক মুজাদ্দেদী সমেবত জাকেরান ও আশেকানবৃন্দকে সাক্ষাত প্রদানসহ নানা অসিহত প্রদান করছেন। যানবাহন ও মুসল্লিদের ভিড়ে বরিশালÑফরিদপুর এবং বরিশালÑঢাকা জাতীয় মহাসড়কের পুকুরিয়া, তালমা ও পদ্মা সেতুর এক্সপ্রেসওয়ের মালিগ্রাম পয়েন্ট থেকে বিশ্ব জাকের মঞ্জিল পর্যন্ত সড়কে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
আপন পীর, উপমহাদেশের প্রখ্যাত সুফী সাধক হজরত মাওলানা শাহ সুফী সৈয়দ খাজা ইউনুস আলী এরায়েতপুরী ছাহেবের নির্দেশে বাংলা ১৩৫৪ সনে শাহসুফি সৈয়দ খাজাবাবা ফরিদপুরী সাহেব ফরিদপুরের সদরপুরের আটরশী গ্রামে ইসলাম প্রচারে নিয়োজিত হন। সেদিন মাত্র সাড়ে ৬ টাকায় খেজুরের খোলের বেড়া ও ছনের ছাউনি দেয়া ঘর কিনে আটরশীতে ‘জাকের ক্যাম্প’ প্রতিষ্ঠা করে ইসলাম প্রচার শুরু করেছিলেন পীর ছাহেব। কালের বিবর্তনে সেই জাকের ক্যাম্পই আজকের ‘বিশ্ব জাকের মঞ্জিল’। পীর সাহেব হজরত মাওলানা শাহ সুফি সৈয়দ খাজাবাবা ফরিদপুরী সাহেব তার জীবদ্দশায় বিশ্ব জাকের মঞ্জিল থেকে লাখ লাখ মানুষের কাছে ইসলামের বাণী পৌঁছিয়ে গেছেন। ২০০১-এর ১ মে ওফাত লাভ পর্যন্ত নানা গঞ্জনা ও প্রবল প্রতিকূলতা অতিক্রম করেই তিনি ইসলাম প্রচারে ব্রতী ছিলেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন