বুধবার ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ২৯ কার্তিক ১৪৩১, ১১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

উচ্ছ্বসিত বিএনপির কৌতূহলী নেতাকর্মীরা

ফারুক হোসাইন | প্রকাশের সময় : ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ১২:০০ এএম

৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে রাজনীতির বাইরে রয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। এর মধ্যে দুই বছরের বেশি সময় ছিলেন কারাগারে, বাকী সময় আছেন গুলশানের বাসভবনে ‘গৃহবন্দী’। অসুস্থ অবস্থায় চিকিৎসকের পরামর্শে নিচ্ছেন চিকিৎসা। কারাবন্দী হওয়ার পর থেকেই দলীয় প্রধানের মুক্তির দাবিতে আন্দোলন-কর্মসূচি পালন করছে বিএনপি নেতাকর্মীরা। তবে বেগম জিয়াকে মুক্ত করতে পারেননি তারা। কতদিনে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী মুক্ত হবেন তা নিয়েও সন্দিহান বিএনপির তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। এরই মধ্যে গত রোববার আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের একটি মন্তব্যে বেশ উচ্ছ্বসিত হয়ে উঠেছেন তারা। ওইদিন রাজধানীর জুডিশিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ট্রেনিং ইনস্টিটিউট (জেএটিআই) আয়োজিত নবনিযুক্ত সহকারী জজদের ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রামে অংশ নিয়ে তিনি বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার রাজনীতি করতে কোন বাধা নেই। কিন্তু তিনি ২টি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে জেলে থাকার কারণে সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। আইনমন্ত্রী আরো বলেন, তার (খালেদা জিয়া) মুক্তির আদেশে এমন কোন শর্ত ছিল না যে, তিনি (খালেদা জিয়া) রাজনীতি করতে পারবেন না। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় ফৌজদারি কার্যবিধির (সিআরপিসি) ৪০১ ধারায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সাজা স্থগিত করেছেন। তিনি (খালেদা জিয়া) একজন স্বাধীন ব্যক্তি, তাই তার রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে কোন বাধা নেই।

আইনমন্ত্রীর ওই বক্তব্য গণমাধ্যমে প্রচারিত হওয়ার পর থেকেই বিভিন্ন জেলা ও উপজেলার নেতাকর্মীদের মধ্যে উচ্ছ্বাস, উৎসাহ, উদ্দীপনা লক্ষ্য করা গেছে। তারা আশাবাদী যে, সামনে হয়তো বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে, তার সঙ্গে রাজপথে থেকে ফের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনে তারা অংশ নিতে পারবেন। একই সঙ্গে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতন, নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনসহ মানুষের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিতে পারবেন। তাই কৌতুহলী নেতাকর্মীরা বিষয়টি জানতে আগ্রহী হয়ে উঠেন। দৈনিক ইনকিলাবের এই প্রতিবেদকের কাছেও রোববার ও সোমবার বিভিন্ন জেলার বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের শতাধিক নেতাকর্মী ফোন দিয়ে জানতে চান। দলের দায়িত্বশীল নেতাদের পাশাপাশি ঢাকায় মধ্যম সারির নেতাদের কাছেও ফোন দিয়ে এ বিষয়ে জানতে চান তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। তাদের প্রশ্ন ছিল- বেগম খালেদা জিয়া কি সত্যিই রাজনীতিতে সক্রিয় হওয়ার সুযোগ পাবেন? উনি রাজনৈতিক কর্মসূচিতে আসবেন কিনা? নাকী আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক স্ট্যান্ডবাজী? এমন নানা প্রশ্ন জাগ্রত হয়েছে তাদের মনে।

জানতে চাইলে জাতীয়তাবাদী মৎস্যজীবী দলের সদস্য সচিব আব্দুর রহিম বলেন, আইনমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে ওই বক্তব্য দেয়ার পর থেকেই বিভিন্ন এলাকা থেকে নেতাকর্মীরা ফোন দিয়ে জানতে চাচ্ছেন যে, ম্যাডাম (খালেদা জিয়া) রাজনীতি করতে পারবেন কিনা? উনি কি আবার সরাসরি যুক্ত হবেন কিনা?
ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈল উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব মো. আক্তারুল ইসলাম উচ্ছ্বসিত সূরে বলেন, আমরা সংবাদে দেখলাম ম্যাডামের (খালেদা জিয়া) রাজনীতি করতে কোন বাধা নেই। তাহলে কি উনি এখন সভা-সমাবেশে আসবেন?

যশোর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব এড. সাবেরুল হক সাবু বলেন, বেগম খালেদা জিয়া এখন দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতা। তিনি যদি রাজনীতিতে সক্রিয় হন তাহলে রাজনীতির দৃশ্যপটই পরিবর্তন হয়ে যাবে। কোন কথা বলা লাগবে না, তিনি মঞ্চে বসে থাকবেন, রাস্তা দিয়ে যাবেন, দেখবেন জনসমুদ্র তৈরি হবে। তাই তিনি মুক্ত হলে বা রাজনীতি করতে পারলে সেটি দেশ ও দলের জন্য টার্নিং পয়েন্ট হিসেবে কাজ করবে। একই সঙ্গে আওয়ামী লীগের এই বক্তব্যের বিষয়ে তিনি সন্দেহ প্রকাশও করেন।

বগুড়া বিএনপির নেতা সাইফুল ইসলাম বলেন, ম্যাডামের রাজনীতি করতে কোন বাধা নেই, সংবাদটি প্রচারের পর থেকেই নেতাকর্মীরা আশায় বুক বেধেছেন যে আবারও তিনি রাজনীতি শুরু করবেন। আমরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় আছি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বক্তব্য, দিকনির্দেশনা শোনার জন্য। দেশবাসীও তার মুখের কথা শোনার জন্য অপেক্ষায় আছেন। আমরা বিশ্বাস করি উনি যদি রাজপথে নেমে ডাক দেন মানুষ ঘর ছেড়ে রাস্তায় নেমে পড়বে।

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব এড. সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, আইনমন্ত্রীর বক্তব্য আমি শুনেছি। আওয়ামী লীগের কথার ওপর বিশ্বাস ও আস্থা রাখা তো কঠিন। তাই ঠিক কি কারণে তিনি এটি বললেন, বা এর পেছনে অন্য কোন উদ্দেশ্য আছে কিনা? সেটা বুঝতে অপেক্ষা করতে হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন