আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের মনে করেন দÐাদেশ ভোগরত অবস্থায় থাকায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার রাজনীতি করার সুযোগ নেই। গতকাল বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের যৌথ সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ অভিমত ব্যক্ত করেন। সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেন, খালেদা জিয়ার রাজনীতিতে অংশগ্রহণের সুযোগ রয়েছে কি না? এসময় সাংবাদিকদের পাল্টা প্রশ্ন রেখে ওবায়দুল কাদের বলেন, বেগম খালেদা জিয়া, তিনি কি দÐাদেশ থেকে মুক্তি পেয়েছেন? তিনি কি মুক্তি পেয়েছেন? খালেদা জিয়া যে টুকু সুবিধা পেয়েছেন, সেটা খুবই মানবিক কারণে। শেখ হাসিনার উদারতার জন্য এই সুবিধাটুকু পেয়েছেন। অসুস্থ মানুষকে মানবিক কারণে তার দÐাদেশ থেকে মুক্ত নয়, স্থগিত করা হয়েছে। কী জন্য? খালেদা জিয়া অসুস্থ। অসুস্থ না হলে তিনি থাকতেন কোথায়? কারাগারে। তাহলে দÐিত ব্যক্তির রাজনীতি করার সুযোগ কোথায়? দÐিত ব্যক্তি তো জেলে থাকবে।
পাঁচ বছর আগে খালেদা জিয়া কারাগারে যাওয়ার পর সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করে বিএনপি। কয়েকটি মামলায় দÐ নিয়ে লন্ডনে থাকা তারেক এখনও সেই দায়িত্বেই রয়েছেন। বিষয়টি উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপিও বুঝতে পেরেছে যে খালেদা জিয়ার রাজনীতিতে যুক্ত হওয়ার সুযোগ নেই। দÐিত ব্যক্তির ব্যাপারে তাদের সন্দেহ না থাকলে তারা ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে কেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করেছেন? নিশ্চয়ই ইনি ভ্যালিডেবল না, সে জন্য তাকে (খালেদা জিয়া) বাদ দিয়েছে। বিএনপির সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, এই দেশে সন্ত্রাসের জন্মই দিয়েছে বিএনপি। যখন ক্ষমতায় ছিল, ক্ষমতায় থাকতেই তারা (বিএনপি) সন্ত্রাস করেছে। আজকে তাদের মুখে সন্ত্রাসের বয়ান আমাদের শুনতে হচ্ছে!
এর আগে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক যৌথসভায় সূচনা বক্তব্যে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি এখন নতুন একটা সুর তুলেছে। তারা বলছে- ‘বাংলাদেশ সন্ত্রাসের অভয়ারণ্য হয়ে গেছে’। মির্জা ফখরুল সাহেব নিজে তো প্রভাব ফেরিতে যাননি। কিন্তু একটা বিবৃতি দিয়ে দিলেন। অভিযোগ দিলেন ঠিকই কিন্তু প্রভাব ফেরিতে যাওয়ার এতটুকু তাগিদ অনুভব করেননি। শহিদ মিনারে গিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদনও করেননি।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপির অগ্নিসন্ত্রাস করে কত মানুষ তারা পুড়িয়েছে। কত বাস ড্রাইভার, হেলপার, সাধারণ যাত্রীকে তারা পুড়িয়েছে। কত অফিস, স্কুল, রেললাইন, বিদ্যুতের লাইন পুড়িয়েছে তার হিসাব কি আছে? তারা সন্ত্রাস করে মানুষ পুড়িয়েছে। সেই দলের মুখে আবার সন্ত্রাসের কথা। এই দেশে সন্ত্রাসের জন্মই দিয়েছে তারা। ক্ষমতায় থাকতেই তারা সন্ত্রাস শুরু করেছিল।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আজকে বিএনপির মুখেই সন্ত্রাস, অভয়ারণ্য এগুলো আমাদের শুনতে হয়। সারা বাংলাদেশে শেখ হাসিনা যেখানেই গেছেন, তার ওপর হামলা হয়েছে। গৌরনদীতে হামলা, চট্টগ্রামে হামলা, ঈশ্বরদীতে হামলা, গ্রেনেড হামলা তো আছেই। তারপর কলারোয়ায় হামলা, এসব ঘটনা তো বেশি দিন আগের নয়। বাংলাদেশে সন্ত্রাসের রাজনীতি বিএনপিই শুরু করেছিল। সন্ত্রাসের সঙ্গে বিএনপির নাম সম্পৃক্ত রয়ে গেছে। সন্ত্রাসের অপর নাম হচ্ছে বিএনপি। বাংলাদেশে নষ্ট রাজনীতির ঠিকানা বিএনপি। তারাই নষ্ট রাজনীতির হোতা।
আওয়ামী লীগের কর্মসূচি চলবে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের নেত্রী গণসংযোগ ও সংদস্য সংগ্রহের বিষয়ে জোর দিয়েছেন। মেয়াদোত্তীর্ণ সংগঠনের সম্মেলনগুলোর কাজও চলতে থাকবে। সঙ্গে সঙ্গে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন পক্রিয়া অনতিবিলম্বের শেষ করতে হবে।
ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের থানা-ওয়ার্ড কমিটি গঠনের তাগাদা দিয়ে তিনি আরো বলেন, মানুষের জাগরণের দিক থেকে বর্তমান দুই কমিটি নগরে যথেষ্ট সারা ফেলেছে। কিন্তু এ কথাও সত্য এই জাগরণ এক সময় ম্রিয়মাণ হয়ে যাবে, যদি কমিটি না থাকে। এতে যারা পার্টি করে তারা হতাশ হবে। তারা হতাশ হলে আপনি মিছিলে আনবেন কি করে? তারা হতাশ হলে আপনি কর্মসূচি সফলভাবে কিভাবে বাস্তবায়ন করবেন? এটা কিছু দিন সম্ভব, বেশি দিন নয়। এ সময় রোজার আগেই এই কমিটিগুলো ঘোষণা করতে হবে।
সভায় আওয়ামী লীগের সভাপতিমÐলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক আফজাল হোসেন, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, শিক্ষা ও মানবসম্পদ সম্পাদক শাসসুন্নাহার চাপা, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ, অর্থ ও পরিকল্পনা সম্পাদক ওয়াসিকা আয়শা খানম, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক সৈয়দ আবদুল আউয়াল শামীম, উপদপ্তর সম্পাদক সায়েম খান, কার্যনির্বাহী সদস্য পরভীন জামান কল্পনা, সাহাবুদ্দিন ফরাজী, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির, যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন