রোমান্টিক উপন্যাসে আবেদন আছে কিন্তু থ্রিলার বইয়ে আছে রোমাঞ্চকর এক অনুভূতি। তাই তো এক নিমিষেই পড়ে ফেলতে ইচ্ছে জাগে পুরো বই। পড়তে গেলে পুরোটা সময় জুড়ে বিমুগ্ধ থাকে পাঠক। তাই আমার কাছে গল্প-উপন্যাসের চেয়ে থ্রিলার বই পছন্দের। এভাবেই থ্রিলারবই নিয়ে নিজের অভিমত ব্যক্ত করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সিয়াম আহমেদ।
শুধু সিয়াম নয়, গল্প, উপন্যাস, কবিতার পাশাপাশি বর্তমানে উঠতি বয়সের তরুণ-তরুণীদের থ্রিলার বইয়ের প্রতি আগ্রহ চরমে বলে মনে করছেন প্রকাশকরাও। তাই তো এবারের বইমেলায় বড় বড় সব প্রকাশনীতে সর্বোচ্চ বিক্রিত বইয়ের তালিকায় স্থান করে নিয়েছে থ্রিলার বই।
অন্বেষা, নালন্দা, মিজান পাবলিশার্স, প্রথমা, ঐতিহ্য, অন্যধারা, কাকলী, অনিন্দ্য, শোভা, মাওলা ব্রাদার্স ইত্যাদি বড় বড় প্রতিষ্ঠানগুলোতে এবারের মেলায় বিক্রির শীর্ষে রয়েছে থ্রিলার বই। ঠিক কবে থেকে থ্রিলারের প্রতি তরুণদের আগ্রহ জন্মেছে জানি না, তবে বর্তমানে তা চরম মাত্রায় বলে মন্তব্য করেন অন্বেষা প্রকাশনীর বিপণন কর্মী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী তাসনিমা আক্তার।
মালিহা তাবাসসুমের মেডিকেল থ্রিলার ইনফিরিওরিটি কমপ্লেক্স ও জুয়েল আহসান কামরুলের লিখা প্রশান্ত মহাসাগরের পাড়ে বইটি অধিক বিক্রি হচ্ছে বলে জানান অন্বেষা প্রকাশনীর এই বিক্রয়কর্মী। অনিন্দ্য প্রকাশনীর বিক্রয়কর্মী আবু ফাহিম বলেন, আমাদের সবচেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে থ্রিলার বই। মোশতাক আহমেদের প্যারাসাইকোলজি থ্রিলার স্বপ্নখুনি, ছায়াআত্মা, নিতিনা ও আরকান ফয়সালের ক্রাইম থ্রিলার ডার্ক মাইন্ড গ্রুপ বইটি বেশি বিক্রি হচ্ছে।
শোভা প্রকাশনীতে শোভা পাচ্ছে রুদ্র গোস্বামীর লিখা রোমান্টিক থ্রিলার অন্তরবর্তী তদন্তের পরে। বিক্রয়কর্মী সানজিদা জানান, এই বইটি সর্বাধিক বিক্রিত বইয়ের মাঝে উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও এখানে রয়েছে মোস্তফা মননের কফি গার্ল, শফিকুর রহমান শান্তনুর প্রিয় মানুষের গন্ধ।
নালন্দা প্রকাশনীতে বেস্ট সেলার হিসেবে রয়েছে মনোয়ারুল ইসলামের লিখা অতঃপর কবি মঞ্চে উঠিলেন, শরীফুল হাসানের মৃত্যুফাঁদ, রবিন জামান খানের সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার বিখণ্ডিত। মেলায় নতুন থ্রিলার বই তুলনামূলক কম হলেও পাঠক চাহিদার শীর্ষে রয়েছে বলে জানান অন্বেষা প্রকাশনীর প্রকাশক শাহাদাত হোসাইন। তিনি বলেন, একটা সময় মানুষ পছন্দ করতো সামাজিক বইগুলো, তারপর গল্পের বইয়ে মানুষ প্রেম খুঁজে পায় এরই ধারাবাহিকতায় গত দুই তিন বছরে তরুণ প্রজন্মের আবেগের জায়গা দখল করছে থ্রিলার বইগুলো।
গতকাল শুক্রবার ২৪তম দিন পার করে অমর একুশে বইমেলা ২০২৩। চলবে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। ছুটির দিন হওয়ায় গতকাল মেলা শুরু হয়েছে সকাল ১১টা থেকে। চলে রাত ৯টা পর্যন্ত। বিকেলে মেলায় পাঠক দর্শনার্থীদের পদচারণায় ধুলাবালি উড়ছিল। গায়ে গা লাগায় অনেকেই অসন্তোষ প্রকাশ করেছে মেলার আয়তন নিয়ে। অধিকাংশই আগত মানুষই ছিল দর্শনার্থী বলে মন্তব্য করেন রাজধানীর মতিঝিল থেকে আসা নাসরুল হক। মেলায় পছন্দের লেখককে ঘিরে সেলফি তোলার হিড়িকও ছিল দেখার মতো। সকালে শিশুচত্বরে ছিল শিশুদের কোলাহল। বিকেলে তা পরিণত হয় গণমানুষের কোলাহলে। এভাবেই দিনব্যাপী মেলা ছিল প্রাণবন্ত।#
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন