টানা এক বছরেরও বেশি সময় ধরে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান চালাচ্ছে রাশিয়া। সর্বাত্মক এই রুশ আগ্রাসন মোকাবিলায় শুরু থেকেই ইউক্রেনকে অস্ত্রসহ সামরিক সহায়তা দিয়ে আসছে কিয়েভের পশ্চিমা মিত্ররা।
এর মধ্যে পশ্চিম ইউরোপের শক্তিশালী দেশ জার্মানিও রয়েছে। আর জার্মানির এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে দেশটির রাজধানী বার্লিনে বিক্ষোভ করেছেন হাজার হাজার মানুষ। জার্মান সরকারের পক্ষ থেকে এই বিক্ষোভের সমালোচনা করা হয়েছে। রোববার (২৬ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশিয়ার সাথে যুদ্ধ করার জন্য ইউক্রেনকে অস্ত্র সরবরাহের বিরুদ্ধে শনিবার জার্মানির রাজধানী বার্লিনে ১০ হাজার মানুষ বিক্ষোভে অংশ নেন। আহন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় রাখার জন্য বিক্ষোভস্থলে বিশাল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়। তবে রুশপন্থি এই বিক্ষোভের সমালোচনা করেছেন জার্মান সরকারের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তারা।
রয়টার্স বলছে, রুশ আগ্রাসন মোকাবিলায় ইউক্রেনকে অস্ত্র সরবরাহের বিরুদ্ধে বার্লিনে এই বিক্ষোভের ডাক দেন বিশিষ্ট বামপন্থি জার্মান একজন রাজনীতিবিদ। ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের এক বছর পূর্তি হওয়ার একদিন পরে এই বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়।
প্রতিবাদ-বিক্ষোভের আয়োজকরা তাদের ওয়েবসাইটে বলেছে, ‘ ইউক্রেনকে ক্রমবর্ধমানভাবে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করার জন্য আমরা জার্মান চ্যান্সেলরের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। এখনই!...কারণ প্রতিদিন এই যুদ্ধে ১০০০ জন প্রাণ হারাচ্ছেন এবং এটি আমাদের তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের কাছাকাছি নিয়ে যাচ্ছে।’
‘শান্তির জন্য অভ্যুত্থান’ নামক এই বিক্ষোভ জার্মানির বামপন্থি দল ডাই লিংক পার্টির রাজনীতিক সাহরা ওয়াগেনকনেখ্ট আয়োজন করেন। ২০০৯ সাল থেকে তিনি জার্মানির পার্লামেন্টর সদস্য হিসেবে দায়িত্বপালন করছেন।
রুশ আগ্রাসন শুরুর পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের পর ইউক্রেনের জন্য অস্ত্রের সবচেয়ে বড় সরবরাহকারী দেশে পরিণত হয়েছে জার্মানি। শনিবারের বিক্ষোভে একজন বিক্ষোভকারীর হাতে থাকা ব্যানারে লেখা ছিল, ‘(সংকট সমাধানে) আলোচনা করুন, (উত্তেজনা) বাড়বেন না।’
এছাড়া ভিড়ের মধ্যে অন্য একটি ব্যানারে লেখা ছিল, ‘এটা আমাদের যুদ্ধ নয়’।
জার্মান পুলিশের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, মধ্য বার্লিনের জার্মানির প্রতীকী ব্র্যান্ডেনবার্গ গেটের চারপাশে শনিবার ১০ হাজার মানুষ জড়ো হয়েছিল। বিক্ষোভস্থলে শান্তি বজায় রাখতে এবং সামরিক ইউনিফর্ম, রাশিয়ান ও সোভিয়েত পতাকা, রাশিয়ান সামরিক গান ও ডানপন্থি যেকোনও প্রতীকের ওপর নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করতে ১৪০০ জন কর্মকর্তাকে মোতায়েন করেছিল পুলিশ।
পুলিশের মুখপাত্র আরও বলেছেন, বিক্ষোভে ডানপন্থি কোনও গোষ্ঠীর উপস্থিতির ছিল না এবং বিক্ষোভটি শান্তিপূর্ণ ছিল।
তবে জার্মানির অর্থমন্ত্রী ক্রিশ্চিয়ান লিন্ডনার বলেছেন, এই বিক্ষোভটিকে অবশ্যই ‘স্পষ্টভাবে বিরোধিতা করা উচিত’। টুইটারে তিনি বলেন, ‘যে ইউক্রেনের পাশে দাঁড়ায় না সে ইতিহাসের ভুল দিকে রয়েছে।’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন