সামনে রমজান মাস। বাড়তি খরচ হবে। এমনিতেই নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়েছে। একই সঙ্গে বেড়েছে বাড়িভাড়া, গাড়িভাড়া। পাইপলাইনের গ্যাসের দাম বেড়েছে, এলপিজি গ্যাসের দাম বেড়েছে, সর্বশেষ বাড়ল বিদ্যুতের দাম। অথচ মানুষের অর্থনৈতিক সক্ষমতা বাড়েনি। অনেক কাটছাঁট করে সংসার চলছে। এখন বিদ্যুতের দাম বাড়া মানে সবকিছুর দাম আবার বাড়বে। শুধু সাধারণ ভোক্তারাই নয়, শিল্পপতি, ব্যবসায়ী সবাই বলছেন, বিদ্যুদের দাম বাড়ানোয় জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির সঙ্গে পণ্য উৎপাদন খরচ বাড়বে। যার নেতিবাচক প্রভাব পড়বে সর্বত্রই। ফলে সাধারণ ভোক্তা থেকে শুরু করে শিল্পপতি, ব্যবসায়ী সবার মধ্যে ‘বিদ্যুতের বাড়তি দামের বোঝা’ নিয়ে অসন্তোষ উৎকন্ঠা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজের (বিসিআই) সভাপতি আনোয়ার উল আলম চৌধুরী পারভেজ বলেন, খাদ্যদ্রব্যের দাম বেড়ে যাওয়াতে সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। এ অবস্থায় আবারও বিদ্যুতের দাম বাড়ায় ভোগান্তি বাড়বে; মূল্যস্ফীতি আরো বেড়ে যাবে। সরকারের উচিত এভাবে মানুষকে কষ্ট না দিয়ে বিদ্যুৎ খাতে চুরিচামারি বন্ধ করার উদ্যোগ নেয়া। বিদ্যুৎ বিভাগের সক্ষমতা বাড়ানোর মাধ্যমে বাড়তি ব্যয় কমিয়ে আনা। বিদ্যুতের উৎপাদন খরচ কীভাবে কমানো যায় সেদিকে নজর দেয়া উচিত। প্রয়োজনে ভ্যাট কমিয়ে দিয়ে হলেও বিদ্যুতের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখা উচিত।
রাজধানীর টিকাটুলীর আফরোজা আক্তার নামের একজন বেসরকারি চাকরিজীবী নিজের যাপিত জীবনের দুর্দশার চিত্র তুলে ধরে বললেন, আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশি হওয়ায় হিসাব করে বিদ্যুৎ ব্যবহার করি। তারপরও হাজার টাকার কম বিল আসে না। সামনে রমজান, গরমের মৌসুম। স্বাভাবিকভাবেই বিদ্যুতের চাহিদা বাড়বে। কিন্তু সরকার যেভাবে বিদ্যুতের দাম বাড়াচ্ছে তাতে এমনিতে সংসারের অবস্থা ন্যুব্জ; ফের বিদ্যুৎ বিল বাড়ানোয় সব পণ্যের দাম বাড়বে। পরিবার নিয়ে ঢাকায় থাকা কঠিন হয়ে পড়বে।
একযুগ ধরে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে আলোকসজ্জা ও বৈদ্যুতিক পণ্য সামগ্রীর ব্যবসা নজরুল ইসলামের। সময়ের পালাবদলে বেড়েছে ব্যবসায়ের পরিধি। আলোকসজ্জার দোকান হওয়ায় অন্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের চেয়ে বিদ্যুতের ব্যবহার খানিকটা বেশি করতে হয় তাকে। প্রতি মাসেই গুনতে হয় মোটা অংকের বিদ্যুৎ বিল। এর মধ্যে নতুন করে ভাবাচ্ছে বার বার বিদ্যুতের নতুন মূল্যহার। নজরুল ইসলাম বলেন, আমাদের বিদ্যুৎ বিল আগে যা ছিল তার থেকে ৫০ শতাংশ বেশি আসবে। এতে করে আমাদের লাভের পরিমাণ কমে যাবে। সীমিত হয়ে যাবে, বিক্রি কমে যাবে। গ্রাহকেরও কিছু চাহিদা থাকে, প্রোডাক্টের চাহিদা থাকে। রেটের ব্যাপার থাকে। এটার ওপর রেট আমাদের বহন করতে হবে। একই অবস্থা কারওয়াশ ব্যবসায় জড়িত রাসেলের। রাসেল জানান, বিদ্যুৎচালিত যন্ত্রের কারণে বাড়ছে খরচ। ফলে নির্ধারণ করতে হচ্ছে সেবার নতুন মূল্যহার। এ নিয়ে প্রতিদিনই জড়াতে হচ্ছে বাগি¦তণ্ডায়। রাসেল বলেন, বিদ্যুতের বিল বাড়ার কারণে আমাদের এখন কাস্টমারদের সঙ্গে তর্কবিতর্ক করতে হয়। কারণ হঠাৎ হঠাৎ বিদ্যুতের দাম বেড়ে যাচ্ছে আমাদেরও পোষাতে হবে। গত ১ মাসে দুই ধাপে এবং সব শেষ ২ মাসে ৩ দফা বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধি করেছে সরকার। যার প্রভাব পড়েছে সাধারণ মানুষের প্রাত্যহিক ব্যয়ে। কাজেই শুধু আফরোজা আক্তার, ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম বা কারওয়াশ ব্যবসায়ী রাসেলই নন; তাদের মতো অবস্থা রাজধানীর অধিকাংশ নিম্ন ও নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবার ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর।
আফরোজা আক্তার আর নজরুল ইসলামের বক্তব্যে সারাদেশের প্রকৃত চিত্র উঠে এসেছে। নির্বাহী আদেশে গ্রাহক পর্যায়ে গত মঙ্গলবার বিদ্যুতের দাম ৫ শতাংশ বৃদ্ধি করে সরকার। এ নিয়ে গত ১৪ বছরে ১২ বার এবং গত দুই মাসে তিনবার বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধি করা হলো। আর এমন একটি সময়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হলো, যখন মূল্যস্ফীতির প্রভাবে সাধারণ মানুষ দিশেহারা। এছাড়া কয়েকদিন পর পর বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধি ভাবাচ্ছে ব্যবসায়ীদের, তাদের ভয় মূল্যস্ফীতি নিয়ে। উৎপাদন ব্যয় বাড়ার হিসাব কষার পাশাপাশি উচ্চ মূল্যস্ফীতির চাপ ভোক্তাদের কতটা পেরেশানিতে ফেলবে সেই শঙ্কা ভাবাচ্ছে তাদের মতো অনেককেই।
যুদ্ধের কারণে দেখা দেয়া বৈশ্বিক মন্দা পরিস্থিতিতে চড়া পণ্যমূল্যের কারণে এমনিতেই ধুঁকছেন দেশের ভোক্তারা। এর মধ্যে নতুন বছরে ৩ দফা বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি জীবনযাত্রায় ব্যয়ের বোঝায় আরো চাপ সৃষ্টি করবে। পণ্য ও সেবার মূল্যকে ঊর্ধ্বমুখী করে উচ্চ মূল্যস্ফীতির পারদকে উসকে দেবে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ী নেতা ও ভোক্তা অধিকার নিয়ে সোচ্চার সংগঠনের প্রতিনিধিরা। এতে রফতানি শিল্প যেমন প্রতিযোগিতা সক্ষমতা হারাবে, দেশে শিল্প উৎপাদনও ব্যয়বহুল হয়ে যাবে মনে করছেন রফতানিমুখী গার্মেন্টস শিল্পের সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ীরা।
ব্যবসায়ী মিলন খান বলেন, দফায় দফায় সরকার যে বিদ্যুতের দাম বাড়াচ্ছে, একবারও কি সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করছে? বাজারে এখন সবকিছুর দাম বাড়তি। প্রয়োজনীয় দ্রব্য কিনতেই সব টাকা চলে যাচ্ছে, বাড়তি বিদ্যুৎ বিলের বোঝা কীভাবে সামাল দেবো? পেশায় ব্যাংকার আতিকুর রহমান পরিবার নিয়ে বসবাস করেন ধানমন্ডির কলাবাগানে। তিনি বলেন, গত এক বছর ধরে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়েছে। একই সঙ্গে বেড়েছে বাড়িভাড়া, গাড়িভাড়া। পাইপলাইনের গ্যাসের দাম বেড়েছে, এলপিজি গ্যাসের দাম বেড়েছে, সর্বশেষ বাড়ল বিদ্যুতের দাম। কিন্তু সাধারণ মানুষের অর্থনৈতিক সক্ষমতা বাড়েনি। অনেক কাটছাঁট করে চলার পরও হাতে টাকা থাকছে না। আর বিদ্যুতের দাম বাড়া মানে সবকিছুর দাম আবার বাড়বে, যা জনগণের ওপর চাপ ছাড়া আর কিছু নয়। তিনি বলেন, নির্বাহী আদেশে প্রতি মাসে বিদ্যুতের দাম সমন্বয়ের ঘোষণা দিয়েছে সরকার। তার মানে সব মাসেই দাম বাড়বে। এ দফায় দাম বৃদ্ধির সঙ্গে মানিয়ে নেয়ার পর আরেক দফা দাম বৃদ্ধির ঘোষণা আসবে। কাজেই দাম বৃদ্ধির এ সাইকেল সহসা থামছে না।
বিশ্লেষণে দেখা গেছে, এবারের মূল্যবৃদ্ধির প্রভাবে আবাসিক খাতে বিদ্যুৎ বিলের পরিমাণ বাড়বে ১০ থেকে ২০ শতাংশ। সর্বশেষ মূল্যবৃদ্ধিতে সবচেয়ে কম বিদ্যুৎ (৫০ ইউনিটের কম) ব্যবহারকারী গ্রাহকদের বিদ্যুতের দাম ৪ দশমিক ১৪ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৪ দশমিক ৩৫ টাকা করা হয়েছে। এছাড়া ৭৫ ইউনিট ব্যবহারকারীর বিদ্যমান দর ৪ দশমিক ৬২ থেকে বাড়িয়ে ৪ দশমিক ৮৫ টাকা, দ্বিতীয় ধাপে ৭৬ থেকে ২০০ ইউনিট পর্যন্ত বিদ্যমান দর ৬ দশমিক ৩১ থেকে বাড়িয়ে ৬ দশমিক ৬৩ টাকা, ২০১ থেকে ৩০০ ইউনিট পর্যন্ত বিদ্যমান দর ৬ দশমিক ৬২ থেকে বাড়িয়ে ৬ দশমিক ৯৫ টাকা, ৩০১ থেকে ৪০০ ইউনিটের বিদ্যমান দর ৬ দশমিক ৯৯ থেকে বাড়িয়ে ৭ দশমিক ৩৪ টাকা, ৪০১ থেকে ৬০০ ইউনিট পর্যন্ত বিদ্যমান দর ১০ দশমিক ৯৬ থেকে বাড়িয়ে ১১ দশমিক ৫১ টাকা, সর্বশেষ ধাপ ৬০০ ইউনিটের ঊর্ধ্বে ব্যবহারকারীদের বিদ্যমান দর ১২ দশমিক ৬৩ থেকে বাড়িয়ে ১৩ দশমিক ২৬ টাকা করা হয়েছে।
সূত্র মতে, ভোক্তা পর্যায়ে গত জানুয়ারি থেকে ৩ দফায় ৫ শতাংশ করে দাম বাড়ল। এর আগে, গত ৩১ জানুয়ারি সরকারের নির্বাহী আদেশে বিদ্যুতের দাম পাইকারি পর্যায়ে ৮ শতাংশ এবং গ্রাহক পর্যায়ে ৫ শতাংশ বাড়ানো হয়। তার আগে গত ১২ জানুয়ারি ভোক্তা পর্যায়ে বিদ্যুতের খুচরা দাম গড়ে প্রতি ইউনিটে ৫ শতাংশ বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। বছরের শুরুতেই ৩ দফা গ্রাহকের কাঁধে বিদ্যুতের দামের অতিরিক্ত চাপ। এভাবে মূল্যবৃদ্ধিতে বিপাকে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। আগামীতে পণ্যমূল্য আরো বৃদ্ধি ও ক্রেতা হারানোর শঙ্কায় আছেন অধিকাংশ ব্যবসায়ী। চলমান পরিস্থিতিতে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির এই সিদ্ধান্তে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা বিপাকে পড়বে বলে অভিমত দোকান মালিক সমিতির। আর এভাবে কয়েকদিন পর পর দাম সমন্বয় হলে অনেকেই ব্যবসা গুটিয়ে নিতে বাধ্য হবে বলে মনে করেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা।
বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন বলেন, ইতোমধ্যে আমাদের অনেকে কর্মচারী ছাঁটাই করা শুরু করেছে। অনেকে ব্যবসা ছেড়ে দিয়েছেন। বিশেষ করে ক্ষুদ্র এবং অতিক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা ব্যবসা ছেড়ে একেবারে বেকার অবস্থায় আছেন।
ক্যাবের জ্বালানি-বিষয়ক উপদেষ্টা শামসুল আলম বলেন, আমাদের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত এক অদূরদর্শী পরিকল্পনায় চলছে। যার দায়ভার পড়ছে সাধারণ জনগণের ওপর। বিদ্যুতের এভাবে মূল্যবৃদ্ধির প্রক্রিয়া চলতেই থাকবে। আগে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ার মাধ্যমে, গণশুনানি করে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের মূল্যের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করত। এখন নির্বাহী আদেশে সরকার সরাসরি সেটা করছে। সরকার কোনোরকম জবাবদিহিতা ছাড়াই মূল্যবৃদ্ধি করে যাচ্ছে, যা মূল্যস্ফীতি আর জনগণের বোঝা দুটোই বাড়িয়ে চলেছে।
ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি সামীর সাত্তার ইনকিলাবকে বলেছেন, প্রতি মাসেই বিদ্যুতের মূল্য সমন্বয় করতে গিয়ে দাম বাড়াচ্ছে সরকার। এভাবে প্রতি মাসেই যদি দাম বাড়তে থাকে তাহলে এর নেতিবাচক প্রভাব ব্যবসা-বাণিজ্য, পণ্য উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি, কস্ট অব ডুইং বিজনেস বৃদ্ধি, রফতানি সক্ষমতায় প্রভাব ফেলবে একই সঙ্গে মূল্যস্ফীতিও বাড়বে। এতে করে আমাদের শিল্প ও ব্যবসায় বিনিয়োগ প্রতিযোগী সক্ষমতা হ্রাস পাবে। ভর্তুকির চাপ সামলাতে আমাদের এখন স্বল্প মেয়াদে সমাধান খুঁজে বের করতে হবে। জ্বালানির বিকল্প উৎস খুঁজে বের করা, সিস্টেম লসকে আরো কমিয়ে আনা, সরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলোর সক্ষমতাকে আরো বৃদ্ধি করে কিভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যয় কমানো যায় সেদিকে নজর দিতে হবে। মধ্য মেয়াদে এনার্জি মিক্সের কথাও চিন্তা করা যেতে পারে। সরকার কিছু কিছু উদ্যোগ ইতোমধ্যেই নিয়েছে যেমন ‘নো প্রোডাকশন নো পেমেন্ট’। তাছাড়া যখন আন্তর্জাতিক বাজারে প্রাথমিক জ্বালানির মূল্য কমে আসবে সরকার যেন কালবিলম্ব না করে বিদ্যুতের মূল্য দ্রুতই কমিয়ে আনে সেটাই আশা করব। এছাড়াও আমরা সবসময় একটা প্রতিযোগী ও ব্যবসাবান্ধব জ্বালানি মূল্য ও সরবরাহ ব্যবস্থাপনার কথা বলে আসছি বলে উল্লেখ করেন তিনি।
সামীর সাত্তার বলেন, বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি দেশের ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে, কারণ এটি তাদের পণ্য উৎপাদন ব্যয় বাড়াবে। একই সঙ্গে জ্বালানির দর বৃদ্ধির প্রভাব ছোট, মাঝারি ও বড় শিল্পে ভিন্ন ভিন্ন প্রভাব ফেলবে। কেউ কাটছাঁট করে মুনাফা কমিয়ে আনবে, কেউবা কর্মী সংখ্যা কমিয়ে আনবে। এটি নির্ভর করবে প্রত্যেকটা কোম্পানির নিজস্ব সক্ষমতা ও কৌশলের ওপর। এছাড়া জ্বালানি খাতে দর বাড়ানোর আগাম পরিকল্পনার প্রয়োজন মন্তব্য করে সামীর সাত্তার বলেন, একটি ভবিষ্যতমুখী পরিকল্পনার মাধ্যমে দর বৃদ্ধি করা যেতে পারে। এটি জানা থাকলে উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগ পরিকল্পনা সাজাতে সুবিধা হয়। আমরা বুঝতে পারব কখন কোন কোন খাতে খরচ বাড়বে, তা কীভাবে সমন্বয় করা যাবে।
বিদ্যুতের দাম বাড়াতে রেগুলেটরি কমিশনের উদ্যোগ প্রসঙ্গে পোশাক রফতানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএ’র পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেছেন, বার বার বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি রফতানি শিল্প যেমন প্রতিযোগিতা সক্ষমতা হারাবে, দেশে শিল্প উৎপাদনও ব্যয়বহুল হয়ে যাবে। তিনি বলেন, এ মুহূর্তে বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দা চলছে। এর সঙ্গে দেশে মূল্যস্ফীতিও বেড়েছে, সে অনুযায়ী ব্যাংক ঋণে সুদহারও বেড়েছে। সুদহার বাড়ার কারণে অভ্যন্তরীণ বাজারেও পণ্যের উৎপাদন খরচ বাড়ছে। এর সঙ্গে নতুন করে আবারও বিদ্যুতের দাম বাড়ায় তা জনজীবনের সর্বত্র মূল্যস্ফীতিকে উসকে দেবে। একই সঙ্গে বিদ্যুতের দাম না বাড়িয়ে সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলোর দীর্ঘদিনের ‘দুর্নীতি আর অনিয়ম চর্চা’ কমিয়ে আনার দাবি জানান এ ব্যবসায়ী নেতা। তিনি বলেন, বিদ্যুৎ খাতে নানা ধরনের সিস্টেম লস রয়ে গেছে। সিস্টেম লস মানে কিন্তু অনেক কিছু। অনেক ক্ষেত্রে বিদ্যুৎ চুরি হয়, মিটার রিডিং থেকে শুরু করে সর্বত্র চুরির একটা প্রবণতা আছে। এখনও অনেক অবৈধ সংযোগ আছে। এ দিকটায় সরকারকে নজর দেয়ার তাগিদ দেন মহিউদ্দিন রুবেল।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন