সাগরদীঘিতে কংগ্রেস প্রার্থীকে সমর্থন করেছিল বামেরা। সেই সমর্থন শুধু খাতায়-কলমে থাকেনি। মাঠেময়দানে, বুথে বুথেও মজবুত জোটের ছবি দেখা গিয়েছিল। ২০ রাউন্ড গণনার পর কংগ্রেস প্রার্থী বাইরন বিশ্বাসের ব্যবধান যখন ২০ হাজার ভোটের বেশি তখন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী ধন্যবাদ জানালেন সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মুহম্মদ সেলিমকে।
এদিন অধীর বলেন, ‘সেলিম ভাইকে ধন্যবাদ জানাই। সাগরদীঘিতে কংগ্রেস ও বামকর্মীরা একসঙ্গে লড়াই করেছেন। সেলিমভাই যে কথা দিয়েছিলেন তা রেখেছেন।’
মুর্শিদাবাদ জেলা কমিটির মিটিং করে সাগরদীঘির কংগ্রেস প্রার্থীর সমর্থনে চলে গিয়েছিলেন সেলিম। মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়ের মতো যুবনেত্রীকেও একাধিক সভা করতে পাঠিয়েছিল আলিমুদ্দিন স্ট্রিট। শুধু তাই নয়, আশাপাশের এলাকার আরএসপিকর্মী পালা করে সাগরদীঘির প্রচারে যোগ দিয়েছিলেন।
২০১৬ থেকেই বাংলায় বাম-কংগ্রেস জোট পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্যে দিয়ে গিয়েছে। কখনও ভেঙেছে, আবার নতুন করে গড়েছে। সাধারণত উপনির্বাচনে শাসকদলের জেতার সম্ভাবনাই বেশি থাকে। কারণ, সরকারের বদলের কোনো সুযোগ থাকে না। কিন্তু সেসব রেওয়াজের উল্টোদিকে সাঁতার কাটল সাগরদীঘি।
পর্যবেক্ষকদের অনেকের মতে, বাম-কংগ্রেস জোটের ক্ষেত্রে বহু জায়গায় এতদিন ছুৎমার্গ দেখা যেত। সিপিএমের প্রার্থী হলে কংগ্রেসের ভোট পড়ত না। কংগ্রেসের প্রার্থী হলে সিপিএমের অনেক তাত্ত্বিক নেতা নাক সিঁটকোতেন। কিন্তু সাগরদীঘি কার্যত সেসবে পানি ঢেলে দিয়েছে।
আরো একটি কারণে সাগরদীঘির ফলাফল গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে তা হল, এ এলাকার জনবিন্যাস। মূলত সংখ্যালঘু অংশের মানুষের বসবাস এ বিধানসভা এলাকায়। তাছাড়া ভোটে দেখা গিয়েছিল মহিলাদের ভোটদানের হার পুরুষদের তুলনায় বেশি। মুসলিম ও মহিলা ভোটকে এতদিন পর্যন্ত বাংলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অন্যতম পুঁজি হিসাবেই দেখতেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের অনেকে। সাগরদীঘির ফলের পর সেই ভিতে চিড় ধরল কিনা তা নিয়েও চর্চা শুরু হয়েছে। তাও আবার পঞ্চায়েত ভোটের আগে।
এদিকে ত্রিপুরায় বিজেপি ৩৪টি আসনে জিতে সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিশ্চিত করেছে। তাদের জোটসঙ্গী আইপিএফটি জিতেছে মাত্র একটি আসনে। কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করা সিপিএম এবার জিতেছে ১৪টি আসনে। কংগ্রেস পেয়েছে তিনটি আসন। তিপ্রা মোথা জিতেছে ১২টি আসনে।
নাগাল্যান্ডে বিজেপির জোটসঙ্গী এনডিপিপি ২৩টি আসনে জিতেছে। বিজেপি জিতেছে ১২টি আসনে। এনসিপি এ রাজ্যে জিতল ৫টি আসন। এনপিপি পেয়েছে ৫টি আসন। লোক জনশক্তি পার্টি (রামবিলাস) জিতেছে দুটি আসনে। রামদাস আঠাওয়ালের আরপিআই জিতেছে দুটি আসনে।
ওদিকে মেঘালয়ে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেল না কোনো দল। একক বৃহত্তম দল হিসেবে উঠে এসেছে এনপিপি। এনপিপি ১৭টি আসন জিতেছে। আটটিতে এগিয়ে কনরাড সাংমার দল। চারটি আসনে জয় পেয়েছে তৃণমূল, এ রিপোর্ট লেকা পর্যন্ত এগিয়ে একটি আসনে। এদিকে বিজেপি মেঘালয়ে মাত্র ৩টি আসনে জিতেছে। সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন