দেড় শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে কর্ণফুলী তীরের শত কোটি টাকার জমি উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিনভর এ অভিযান পরিচালনা করে জেলা প্রশাসন। বিকেল পর্যন্ত অভিযানে মাঝিরঘাট এলাকায় ছয় একরের মত জমি অবৈধ দখলমুক্ত করা হয়েছে। অভিযানে নেতৃত্ব দেন জেলা প্রশাসনের ডেপুটি কালেক্টর নু-এমং মারমা মং, সদর সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাজীব হোসেন, আগ্রাবাদ সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) গালিব চৌধুরী। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন, পিডিবি ও নগর পুলিশের সদস্যরা অভিযানে অংশ নেন। সকালে বাংলা বাজার পিএস শিপিং এলাকা থেকে উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়। এরপর একে একে ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয়া হয় বিভিন্ন স্থাপনা। বিকেলে সদরঘাটের সাম্পান ঘাটে গিয়ে অভিযান শেষ হয়।
আগ্রাবাদ সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) গালিব চৌধুরী সাংবাদিকদের জানান, আদালতের আদেশের আলোকে কর্ণফুলী নদীর তীরবর্তী অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়েছে। অভিযানে নদী তীরবর্তী প্রায় ছয় একর সরকারি খাস জমি উদ্ধার করা হয়। যার বর্তমান বাজার মূল্য শতকোটি টাকা। বাংলাবাজার পিএস শিপিং থেকে সদরঘাট সাম্পান ঘাট পর্যন্ত অংশে নদীতীরে গড়েওঠা পাকা ও আধা পাকা প্রায় দেড় শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। তিনি বলেন, চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে পাহাড় ও নদীসহ সরকারি খাস জমি রক্ষার বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহণ করেন। ভবিষ্যতেও জেলা প্রশাসনের এ ধরনের অভিযান পরিচালনা অব্যাহত থাকবে।
উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম বন্দরের ধারক কর্ণফুলী নদী দখল করে শত শত অবৈধ স্থাপনা গড়ে উঠেছে। দখলে, দুষণে কাহিল খরস্রোতা এ নদীর অবস্থা। বিভিন্ন পরিবেশবাদী সংগঠনের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে আদালতের নির্দেশে উচ্ছেদ অভিযান শুরু হলেও তা থমকে যায়। ২০১৯ সালে নগরীর সদরঘাট থেকে মাঝিরঘাট, বাংলা বাজার হয়ে বারিক বিল্ডিং পর্যন্ত অংশে কয়েকশ স্থাপনা উচ্ছেদ করে ১০ একর জায়গা দখলমুক্ত করা হয়। টানা এক সপ্তাহের ওই অভিযানের সময় বলা হয়েছিল উদ্ধারকৃত জমিতে নিরাপত্তা বেষ্টনী দেয়া হবে। গড়ে তোলা হবে পর্যটন স্পট। কিন্তু রাজনৈতিক চাপে উচ্ছেদ অভিযান থেমে যায়। অরক্ষিত থেকে যায় মূল্যবান জমি। ফলে নতুন করে সেখানে অবৈধ স্থাপনা গড়ে ওঠে। এর আগে সর্বশেষ গত জানুয়ারিতে সেখানে অভিযান চালিয়ে কিছু স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। পরিবেশবাদী সংগঠনের নেতারা বলছেন, এভাবে দখল-উচ্ছেদ খেলা বন্ধ করে স্থায়ীভাবে অবৈধ স্থাপনা গুঁড়িয়ে দিয়ে সরকারি জমি সংরক্ষিত করা না হলে দখলবাজি থামবে না।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন