বাদশা নয় এবার জিনের বেগম (বউ) পরিচয়ে প্রতারণার অভিনব কৌশল অবলম্বনকারী চক্রকে আটক করেছে দিনাজপুর পুলিশ। জিনদের জন্য মসজিদ নির্মাণের নামে আমেরিকা প্রবাসী মহিলার কাছ থেকে দীর্ঘ ১১ বছরে হাতিয়ে নিয়েছে তিন কোটির বেশি টাকা। ঢাকার নিউ মার্কেটের একটি মসজিদে নামাজ আদায়ের সময় পরিচয় হয় আমেরিকা প্রবাসি রোকেয়া বেগমের সাথে প্রতারক লাইজুর। টার্গেটের প্রথম পর্যায়ে লাইজু সহজে বেহেস্তে যাওয়ার পথ তৈরি করে দেয়ার কথা বলে রোকেয়া বেগমের মনে দাগ কাটে। এসময় সে (লাইজু) নিজেকে জিনের বেগম পরিচয় দিয়ে জিনদের জন্য মসজিদ নির্মাণের প্রস্তাব দেয়। জিনদের মসজিদ নির্মাণের মাধ্যমে বেহেস্তে যাওয়ার কথা বলেন। মসজিদ নির্মাণ না করলে জিনরা তার ক্ষতি করবে বলে ভয়ভীতি দেখান। এভাবেই প্রতারণার ফাঁদ ফেলা নারীচক্রের বিশদ বর্ণনা দেন দিনাজপুরের পুলিশ সুপার শাহ ইফতেখার আহমেদ।
গতকাল রোববার দুপুরে পুলিশ সুপারের কনফারেন্স রুমে দেয়া প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান, ২০১২ সাল থেকে বিকাশ এবং পরবর্তীতে ব্যাংকিং চ্যানেলে গত ১১ বছরে ৩ কোটির বেশি টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়। প্রতারণার বিষয়টি জানতে পেরে প্রতারিতা রোকেয়া বেগমের ছেলে ৪ মার্চ কোতয়ালী থানায় মামলা দায়ের করেন। পুলিশ সুপারের নির্দেশে তদন্তসাপেক্ষে কোতয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ তানভিরুল ইসলামের নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে আটক করা হয় কথিত জিনের বেগমকে। সাথে এক মহিলা ব্যাংক কর্মকর্তাসহ আরো তিনজনকে।
দিনাজপুর শহরের পাটুুয়াপাড়া এলাকায় ভাড়া বাড়িতে অভিযান চালিয়ে আটক করা হয় জিনের বেগম পরিচয় দানকারী জনৈক বাবুর স্ত্রী লাইজু বেগম, সহযোগী চক্রের সদস্য তার ভগ্নিপতি আলতাফ হোসেন, আলতাফ হোসেনের মেয়ে মার্কেন্টাইল ব্যাংকের দিনাজপুর ব্রাঞ্চের কর্মকর্তা আখি সুবর্ন ও ছেলে অনুরাগ আল ইমরান ওরফে আনন্দ। আটককৃতদের বাড়ি গাইবান্ধা জেলায়। এসময় তাদের কাছ থেকে ব্যাংক চেকের পাতা, মার্কেন্টাইল ব্যাংকের ভিসা ডেভিট কার্ড, মোটর সাইকেল ও মোবাইল ফোনসহ বিভিন্ন আলামত জব্দ করা হয়।
প্রেস ব্রিফিংকালে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মমিনুল করিম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জিন্নাহ আল মামুন এবং পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) গোলাম মাওলা শাহ উপস্থিত ছিলেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন