দিল্লিতে ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) প্রধান কার্যালয় সফর করে দলের সর্বোচ্চ নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করেছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম দিল্লিতে ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) প্রধান কার্যালয় সফর করে দলের সর্বোচ্চ নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করেছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম।
ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপিকে যাতে দেশবিদেশের নীতিনির্ধারকরা আরও ভালোভাবে জানতে পারেন, সেই লক্ষ্যে তাদের নেওয়া এক কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। দিল্লিতে ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) প্রধান কার্যালয় সফর করে দলের সর্বোচ্চ নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করেছেন তিনি। গত শনিবার বিজেপির জাতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডার ডাকা ওই বৈঠকে শাহরিয়ার আলম ছাড়াও অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, দক্ষিণ কোরিয়া, ব্রিটেন, জাপান ইত্যাদি বিভিন্ন দেশের পার্লামেন্টারিয়ান, পররাষ্ট্র নীতির বিশেষজ্ঞ, গবেষক, রাজনীতিক ও অর্থনীতিবিদরা উপস্থিত ছিলেন।
রাজধানী দিল্লির দীনদয়াল উপাধ্যায় মার্গে বিজেপি বছরকয়েক আগে তাদের যে রাজসিক প্রধান কার্যালয়ের উদ্বোধন করেছে, সেখানেই এই বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। অস্ট্রেলিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও সাবেক বিরোধী নেতা টোনি অ্যাবটও ওই বৈঠকে যোগ দেন। মাত্র তিন-চারদিন আগেই বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন দিল্লির একটি থিংক ট্যাংকে ভাষণ দিতে গিয়ে মন্তব্য করেছেন, দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের কোনও দেশ যাতে তাদের ঘরোয়া রাজনীতির ইস্যুগুলোকে প্রাধান্য দিতে গিয়ে অন্য দেশের গরিষ্ঠ সংখ্যক মানুষের অনুভূতিকে আহত না-করে ফেলে, সে দিকে দৃষ্টি দিতে হবে। বাংলাদেশেও পর্যবেক্ষকরাও অনেকেই এ কথা মানেন, ভারতে ক্ষমতাসীন বিজেপির তথাকথিত হিন্দুত্ববাদী রাজনীতির জেরে মুসলিম-গরিষ্ঠ প্রতিবেশী দেশটির জনমনে কিছু কিছু বিরূপ ধারণা সৃষ্টি হয়েছে। এই পটভূমিতে বিদেশি রাষ্ট্রগুলোর প্রতি দল হিসেবে বিজেপির এই ‘আউটরিচে’ পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর যোগদানের মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকার যেভাবে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে, সেই পদক্ষেপ অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।
গত শনিবারের ওই বৈঠকের পর বিজেপির ফরেন অ্যাফেয়ার্স সেল বা পররাষ্ট্র বিষয়ক বিভাগের আহ্বায়ক ড. বিজয় চৌথাইওয়ালে জানান, ‘আন্তর্জাতিক স্তরে ভারতীয় জনতা পার্টির ইতিহাস, আদর্শ ও সংগ্রামকে তুলে ধরতে সম্প্রতি বিজেপির ৪২তম প্রতিষ্ঠাদিবসে দলীয় নেতৃত্ব যে ‘কহড়ি ইঔচ’(বিজেপিকে জানুন) কর্মসূচি গ্রহণ করেছে তার আওতাতেই দলের প্রেসিডেন্ট জে পি নাড্ডা শনিবারের ওই বৈঠক ডেকেছিলেন। শাহরিয়ার আলম-সহ বিদেশি অতিথিদের সেখানে বিজেপির ওপর নির্মিত একটি তথ্যচিত্রও (ডকুমেন্টারি ফিল্ম) দেখানো হয়। বিজেপির রাজনৈতিক ইতিহাস ও ভারতের রাষ্ট্রনির্মাণে তাদের অবদান তুলে ধরা হয় ওই ফিল্মে। এরপর বিজেপি প্রেসিডেন্ট জে পি নাড্ডার সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা হয় আমন্ত্রিত বিদেশি অতিথিদের, বিজেপি সভাপতি তাদের বিভিন্ন প্রশ্নেরও উত্তর দেন। জে পি নাড্ডা ছাড়াও বিজেপির ভাইস প্রেসিডেন্ট বৈজয়ন্ত জয় পান্ডাও সভায় উপস্থিত ছিলেন, তিনিও নানা বিষয় ব্যাখ্যা করেন। তবে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ওই রুদ্ধদ্বার সভায় ঠিক কী প্রশ্ন করা হয়েছিল, তা জানা যায়নি। শনিবারের ওই সভার পর তা নিয়ে বাংলাদেশ সরকার বা দিল্লিতে বাংলাদেশ দূতাবাসের পক্ষ থেকেও কোনও বিবৃতি দেওয়া হয়নি।
প্রসঙ্গত, ভারত সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও থিংক ট্যাংক ওআরএফ প্রতি বছর যে ‘রাইসিনা ডায়ালগ’ শীর্ষক নিরাপত্তা সংলাপের আয়োজন করে থাকে, তাতে যোগ দিতেই শাহরিয়ার আলম দিল্লিতে এসেছিলেন। এদিকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম ছাড়াও দিল্লিতে বিজেপির সদর দফতরের ওই বৈঠকে অন্য যে বিশিষ্ট বিদেশি অতিথিরা উপস্থিত ছিলেন তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন– সাবেক অস্ট্রেলিয়ান প্রধানমন্ত্রী টোনি অ্যাবট, জার্মানির গ্রিন পার্টির নেতা ও ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের সদস্য রেইনহার্ড বুটিকোফার, আমেরিকায় অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী ধ্রুব জয়শঙ্কর, ব্রিটেনের হাউস অব লর্ডসের সদস্য জিতেশ গাধিয়া, অস্ট্রেলিয়া ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউটের সিইও লিসা সিং, জাপান ব্যাংক ফর ইন্টারন্যাশনাল কোঅপারেশনের চেয়ারম্যান তাদাশি মায়িদা, সাবেক ইসরায়েলি কূটনীতিবিদ রন মালকা প্রমুখ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন