পঞ্চগড়ে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের ওপর যে হামলার ঘটনা ঘটেছে সেটা বিএনপি-জামায়াত করেছে। হামলা করতে গিয়ে এক শিবির নেতা আহত হয়ে পরে মারা গেছেন। আহমদিয়া সম্প্রদায়ের একজন মারা গেছেন। এ ঘটনায় বিএনপি নেতা ফজলে রাব্বীসহ ৮১ জন গ্রেফতার হয়েছে। ফজলে রাব্বী এ ঘটনায় নেতৃত্ব দিয়েছে বলে স্বীকারোক্তি দিয়েছে। গতকাল সোমবার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস ও ২৬ মার্চ স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস-২০২৩ উদযাপন উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত সভা শেষে এসব কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আহমদিয়া বা কাদিয়ানি সম্প্রদায় যাকে বলেন, তাদের কয়েক হাজার লোকের বসবাস হচ্ছে পঞ্চগড়ের আহমদনগরে। প্রতিবারই তারা দুদিনব্যাপী একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান করেন। এবারও সে ধর্মীয় অনুষ্ঠান করতে যাওয়ায় আমরা যা দেখেছি, জামায়াতে ইসলামীর অ্যাক্টিভিস্ট এবং বিএনপি নেতারা একত্রিত হয়ে তাদের এই অনুষ্ঠানটি করতে বাধা দেয়। একপর্যায়ে তাদের বাড়িঘরে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং যেখানে অনুষ্ঠান হওয়ার কথা সেখানেও আগুন জ্বালিয়ে দেয়। এতে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের একজন মারা যান। একইসঙ্গে মারামারি করতে গিয়ে শিবিরের এক নেতা আহত হয়েছিলেন এবং পরে মারা যান।
তিনি বলেন, এ ঘটনায় সাতটি মামলা হয়েছে। ৮১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এরমধ্যে বিএনপি নেতা ফজলে রাব্বী আছেন। তিনি স্বীকারোক্তি দিয়েছেন এই অনুষ্ঠান বন্ধ করতে তারা এসেছিলেন। সেখানে যে ঘটনাগুলো ঘটেছে সেগুলোর নেতৃত্ব দিয়েছেন। সেখানে র্যাবের এক সদস্যকে আহত করা হয়েছে। র্যাবের একটা গাড়িও ভাঙচুর করা হয়েছে। নিরাপত্তা বাহিনী সেটা মোকাবিলা করেছে। বর্তমানে সেখানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ও শান্ত আছে। যারাই মামলা দিচ্ছেন সেটা নেয়া হচ্ছে। মামলা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
মন্ত্রী বলেন, প্রতি বছর এই অনুষ্ঠান হয়। প্রতি বছরই বিএনপি-জামায়াত এ নিয়ে নানা কথা বলে। এবার তারা এত বেশি মারমুখী হয়ে উঠেছিল কেন সেটা খতিয়ে দেখছি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনও ব্যর্থতা আছে কিনা সেটাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
বিএনপি বলছে এটা সরকার করিয়েছে– এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, আমি জনগণের কাছে প্রশ্ন রাখবো এটা বিএনপি করিয়েছে কিনা। আওয়ামী লীগ কখনও এমন ঘটনা ঘটিয়েছে কিনা।
তিনি বলেন, ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস ও ২৬ মার্চ স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে কোনও সন্ত্রাসী হুমকি নাই বলে জানিয়েছে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। যারা গুজব ছড়াবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস। সেদিন রাত সাড়ে ১০টায় এক মিনিটের জন্য ব্লাকআউট পালন করা হবে সারা দেশে। প্রতিবারের মতো এবারও কারাগার, হাসপাতাল ও শিশুপল্লিসহ সংশ্লিষ্ট জায়গাগুলোতে উন্নতমানের খাবার বিতরণ করা হবে।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আগুনের ঘটনা নাশকতা কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ঘটনাটি দুর্ঘটনা। সেখানে আগুন লাগলে মুহূর্তে ছড়িয়ে পড়ে। এরপরও এটার তদন্ত চলছে। তদন্তে যদি কোনও ধরনের নাশকতা বা ষড়যন্ত্রের কিছু পাওয়া যায় তাহলে আমরা দেখবো। যারা গৃহহারা হয়েছে তাদের আপাতত ব্যবস্থা করা হয়েছে। আপনারা জানেন, ভাসানচরে আমরা বড় ব্যবস্থা রেখেছি। যারা সেখানে স্বেচ্ছায় যেতে চায় আমরা তাদের সেখানে নিয়ে যাচ্ছি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন