জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম বলেছেন, করদাতার সংখ্যা দ্রুত বাড়ানোর জন্য নানামুখী উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ লক্ষ্যে কর প্রদানে সক্ষম ব্যক্তিদের চিহ্নিত করার জন্য জেলা পর্যায়ে বড় বড় বাড়ি ও ফ্ল্যাটের মালিকদের চিহ্নিত করার কাজ শুরু হয়েছে।
মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁও রাজস্ব ভবন সভাকক্ষে পেশাজীবিদের সঙ্গে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রাক-বাজেট আলোচনায় তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘করদানে সক্ষম বিভিন্ন পেশাজীবি যেমন চিকিৎসক, আইনজীবি, প্রকৌশলীসহ বিভিন্ন মার্কেটের মালিক, শপিংমলের দোকানের মালিকসহ বিত্তবানদের খুঁজে বের করে তালিকা প্রস্তুত করা হবে। সেখান থেকে সহজে বের করা যাবে কারা করজালের বাইরে রয়েছেন।’
এনবিআর চেয়ারম্যানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রাক-বাজেট আলোচনায় বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি, গবেষণা সংস্থা বিআইডিএস ও সিপিডি, সার্ভিস প্রোভাইডার প্রতিষ্ঠান পিডব্লিউসি ও ইআরজি, আর্থিক নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান ¯েœহাশীষ এন্ড মাহমুদ কোম্পানি এবং এসইএমই ফাউন্ডেশনের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।
রহমাতুল মুনিম বলেন, কর প্রদানে সক্ষম যে ব্যক্তি করজালের বাইরে রয়েছেন, তার বিরুদ্ধে প্রথম দফায় কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া যায় না। তাই ধীরে ধীরে এই অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে হবে।
তিনি বলেন, কোন সুনির্দিষ্ট সম্পদের মালিক হওয়ার ক্ষেত্রে করদাতা হওয়া বাধ্যতামূলক করা হলে অনেককেই করজালে আনা সহজ হবে।
তিনি আরও জানান, কর সচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে একটি কর যাদুঘর তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে। যেখানে তরুণ শিক্ষার্থীরা এসে করের বিভিন্ন বিষয়ে জানতে পারবে এবং তাদের অবিভাবকদের এ বিষয়ে তাঁরা সচেতন করার পাশাপাশি কর প্রদানে উদ্বুদ্ধ করতে পারবে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ‘কর ব্যয়’ বা ট্যাক্স এক্সপেনডিউচারের বিষয়ে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, এসআরও জারি করে প্রতিবছর বিভিন্ন খাতে আমরা কর অব্যাহতি দিয়ে যাচ্ছি। কর অব্যাহতির এই সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। তবে সেটি একবারে সম্ভব নয়, দীর্ঘমেয়াদি কর্মকৌশল নির্ধারণ করে ধীরে ধীরে এই জায়গা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।
প্রাক-বাজেট আলোচনায় অংশ নিয়ে গবেষণা সংস্থা সিপিডির প্রতিনিধি মুনতাসির কামাল বলেন, বর্তমান উচ্চ মূল্যস্ফীতির পরিস্থিতি বিবেচনায় রেখে আগামী অর্থবছরের বাজেটে ব্যক্তি করমুক্ত আয়সীমা বাড়ানো প্রয়োজন। তিনি বিদ্যমান করমুক্ত আয়সীমা ৩ লাখ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে সাড়ে তিন লাখ টাকা করার প্রস্তাব করেন।
পিডব্লিউসি সেবা সরবরাহকারি বৈশ্বিক প্রতিষ্ঠানকে কর সনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন) প্রদানের প্রস্তাব করে উল্লেখ করেছে যে, বৈশ্বিক যেসব প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে সেবা সরবরাহ করছে, অথচ স্থানীয়ভাবে কোন অফিস নেই, তাদের টিআইএন না থাকায় অনেক রাজস্ব হারাতে হচ্ছে। তাই এসব প্রতিষ্ঠানকে টিআইএন প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন