শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

সীমান্ত হত্যা বন্ধ হচ্ছে না ভারত তোষণ নীতির কারণে : ন্যাপ

শহীদ ফেলানী দিবস স্মরণ

| প্রকাশের সময় : ৮ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর ক্ষমতায় টিকে থাকা এবং ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য ভারত তোষননীতির কারণেই সীমান্তহত্যা ও নির্যাতন বন্ধ হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ।
গতকাল শনিবার দুপুরে নয়াপল্টনে যাদু মিয়া মিলনায়তনে ‘৭ জানুয়ারী শহীদ ফেলানী দিবস স্মরণে’ বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি ঢাকা মহানগর আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তারা এ অভিযোগ করেন।
এতে ন্যাপ মহাসচিব গোলাম মোস্তফা ভুইয়া বলেন, দেশ এখন ভয়াবহ ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব, পতাকা-মানচিত্র, গণতন্ত্র হুমকিসহ জনগণ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। প্রতিবেশী ভারতের অব্যাহত আগ্রাসনের কারণে বাংলাদেশ একটা ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণতির দিকে ধাবিত হচ্ছে। সীমান্তে ফেলানীর লাশ ঝুলিয়ে রাখা মানে হলো বাংলাদেশকে ঝুলিয়ে রাখা। ক্ষমতার প্রতিযোগিতায় আজ দেশের রাজনৈতিক শক্তি-ব্যক্তি-গোষ্ঠী ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে  সোচ্চার হচ্ছে না।
তিনি বলেন, বাংলাদেশকে অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করার ষড়যন্ত্রের অংশ হিসাবেই ভারত সীমান্তহত্যা ও নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে সীমান্তে ভারতীয় আগ্রাসন সম্পর্কে সরকার যেমন নিশ্চুপ ঠিক তেমনই নীরব রাজনৈতিক দলগুলো।
সভাপতির বক্তব্যে মো. শহীদুননবী ডাবলু বলেন, কাঁটাতারে ঝুলন্ত ফেলানীর লাশ ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আজ প্রতিবাদের প্রতীক। এই ছবি বাংলাদেশের নতজানু পররাষ্ট্রনীতি ও রাজনীতিকদের ভারত তোষণনীতির বিরুদ্ধে তীব্র ধিক্কার।
নগর সদস্য সচিব মো. শহীদুননবী ডাবলুর সভাপতিত্বে আলোচনায় আরও বক্তব্য দেন মুসলিম লীগ-বিএমএল মহাসচিব এ্যাডভোকেট শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এনডিপি প্রেসিডিয়াম সদস্য মঞ্জুর হোসেন ঈসা, জাতীয় পার্টি (জাফর) যুগ্ম মহাসচিব এএসএম শামিম, ন্যাপ সাংগঠনিক সম্পাদক মো. কামাল ভুইয়া, নগর যুগ্ম আহ্বায়ক মো. আনছার রহমান শিকদার, অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম, জাতীয় ছাত্র কেন্দ্রের যুগ্ম সমন্বয়কারী সোলায়মান  সোহেল, যুব নেতা জিল্লুর রহমান পলাশ, আবদুল্লাহ আল-কাউছারী প্রমুখ।
বিশ^ব্যাপী ফেলানী দিবস পালনের আহ্বান
এদিকে, ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের হাতে নির্মমভাবে হত্যার শিকার ফেলানীর বাবা বাবা নুরুল ইসলাম ও মা জাহানার বেগমের উপস্থিতিতে গতকাল সকালে রাজধানীর সেগুনবাগিচার বাংলাদেশ শিশু কল্যাণ পরিষদ মিলনায়তনে ফেলানী দিবস উদযাপন উপলক্ষে এক আলোচনা সভা করা হয়। নাগরিক পরিষদ নামক একটি সংগঠন এ আলোচনার আয়োজন করে।
আলোচনার সভাপতি নাগরিক পরিষদের আহ্বায়ক মোহাম্মদ শামসুদ্দীন বলেন, ২০১১ সালের ৭ জানুয়ারী কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী থানার অনন্তপুর সীমান্তে নুরুল ইসলামের সামনে তার নিষ্পাপ কিশোরী মেয়ে ফেলানীকে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ গুলি করে হত্যা করে। হত্যাকারী বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষের কোন বিচার হয়নি। বাংলাদেশ বিচার পায়নি। বিচার আর ক্ষতিপূরণের জন্য ঘুরছে ফেলানীর পরিবার।
তিনি বলেন, আমাদের সার্বভৌমত্বই আমাদের স্বাধীনতা। বারবার বিএসএফ আমাদের সার্বভৌমত্ব লংঘন করে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঢুকে এদেশের নাগরিকদের নির্যাতন করছে, নিরীহ মানুষকে হত্যা করছে। ফেলানী হত্যাকারী অমিয় ঘোষকে ফাঁসি দিলে বাংলাদেশ বিচার পাবে আর সীমান্ত হত্যা বন্ধ হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।
তিনি আরও বলেন, আজ ২০১৭ সালের ৭ জানুয়ারী ফেলানী দিবসে আমরা দাবী করিÑ ৭ জানুয়ারী বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বে ফেলানী দিবস পালন করুন। ফেলানীর পরিবারকে কমপক্ষে ২০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। ফেলানী হত্যাকারী বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষের ফাঁসি দিতে হবে। সার্বভৌমত্বের লংঘন বন্ধ করতে হবে। কুড়িগ্রামের অনন্তপুর সীমান্তের নাম ফেলানী সীমান্ত নামকরণ করতে হবে। ঢাকা গুলশান-১ থেকে তেজগাঁও রাস্তার নাম ফেলানী সরণি করতে হবে। বাংলাদেশকে নতজানু পররাষ্ট্রনীতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। সীমান্ত হত্যা বন্ধ করতে হবে।
ফেলানীর বাবা নুরুল ইসলাম ও মা জাহানারা বেগম কান্নাভেজা কণ্ঠে ফেলানীর বিচার ও অসহায় পরিবারের পাশে দাঁড়াতে সকলের নিকট আবেদন জানান। আরও বক্তব্য রাখেন, সাবেক ছাত্রনেতা সাইফুদ্দিন মনি, আকবর হোসেন, দুর্নীতি প্রতিরোধ আন্দোলনের আহ্বায়ক হারুনূর রশীদ, নারীনেত্রী মুশতারী বেগম, মানবাধিকার নেতা মঞ্জুর হোসেন ঈসা, নাগরিক পরিষদের শ্রম সম্পাদক আল আমিন সরকার, গার্মেন্টস নেতা বাহারানে সুলতান বাহার, মো. হানিফ, জামাল শিকদার, সিদ্দিকুর রহমান, কবি নুরুল হালিম প্রমুখ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন