স্টাফ রিপোর্টার : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বহনকারী বিমানে মানবসৃষ্ট ত্রুটির ঘটনায় করা মামলায় বাংলাদেশ বিমানের দুই কর্মকর্তার সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিএমপির কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট পরিদর্শক মাহবুবুল আলম আসামিদের আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক তাদের সাত দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন। রিমান্ডে নেওয়া আসামিরা হলেন- ইঞ্জিনিয়ার অফিসার নাজমুল হক এবং জুনিয়র টেকনিশিয়ান শাহ আলম।
গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর হাকিম নুরুন্নাহার ইয়াসমিনের আদালত এ আদেশ দেন। রাষ্ট্রপক্ষে সালমা হাই টুনি রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করেন। তবে এ সময় আসামিদের পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না। তাদের কিছু বলার আছে কি না তা জানতে চান বিচারক। তাদের কিছু বলার নেই বলে বিচারককে জানান আসামিদ্বয়।
ক্রাইম ইউনিটের পরিদর্শক মাহাবুব আবেদনে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ক্ষতি করার উদ্দেশ্যে আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে বিমানে ইচ্ছাকৃতভাবে যান্ত্রিক ত্রুটি করেছিল বলে প্রতীয়মান হয়েছে। মামলার সুষ্ঠু তদন্ত ও ঘটনার প্রকৃত রহস্য উদঘাটনের স্বার্থে আসামিদ্বয়কে পুলিশ হেফাজতে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন। মামলার রহস্য উদঘাটন, ষড়যন্ত্রের সঙ্গে কারা জড়িত তাদের চিহ্নিত করার স্বার্থে ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হোক।
অন্যদিকে এ মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া বিমানে সাত আসামি দুই দফা রিমান্ড শেষে কারাগারে আছেন। এরা হলেন- বাংলাদেশ বিমানের প্রধান প্রকৌশলী (প্রোডাকশন) দেবেশ চৌধুরী, প্রধান প্রকৌশলী (কোয়ালিটি অ্যাসিউরেন্স) এস এ সিদ্দিক, প্রিন্সিপাল ইঞ্জিনিয়ার (মেইনটেন্যান্স অ্যান্ড সিস্টেম কন্ট্রোল) বিলাল হোসেন, প্রকৌশল কর্মকর্তা সামিউল হক, লুৎফর রহমান, বিমল চন্দ্র বিশ্বাস ও জাকির হোসাইন। এর আগে এদের গত ৩০ ডিসেম্বর আট দিন এবং ২২ ডিসেম্বর সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
একই ঘটনায় ২২ ডিসেম্বর বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের প্রকৌশল বিভাগের কর্মকর্তা মোহাম্মদ রোকনুজ্জামান ও টেকনিশিয়ান সিদ্দিকুর রহমান আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের প্রার্থনা করেন। শুনানি শেষে আদালত আসামিদের জামিন নামঞ্জুর করে তাদেরকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এরপর গত ২৮ ডিসেম্বর এবং ৫ জানুয়ারি এ দুই আসামির ৭ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
প্রসঙ্গত, গত ২৭ নভেম্বর হাঙ্গেরি যাওয়ার পথে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি উড়োজাহাজে (বোয়িং-৭৭৭) যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়। এ কারণে তুর্কমেনিস্তানে জরুরি অবতরণ করে বিমানটি। অন্য একটি উড়োজাহাজ পাঠিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের হাঙ্গেরি পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা হলেও পরে ত্রুটি সারিয়ে ওই উড়োজাহাজেই হাঙ্গেরি যান প্রধানমন্ত্রী। ওই ঘটনায় দুই দফায় বর্তমান মামলার এই ৯ আসামিকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।
ওই ঘটনায় গত ২০ ডিসেম্বর রাতে বিমানের ৯ কর্মকর্তাকে আসামি করে বিমানের পরিচালক (ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট) এম এম আসাদুজ্জামান বাদী হয়ে বিমানবন্দর থানায় একটি মামলা করেন। দ-বিধির ১০৯, ১১৮, ১২০ (খ), ২৮৭ এবং বিশেষ ক্ষমতা আইনের ১৫ (৩) ধারায় মামলাটি করা হয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন