কূটনৈতিক সংবাদদাতা : বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের ৪৭তম বার্ষিক সম্মেলনে যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুইজারল্যান্ড যাচ্ছেন। দেশটির দাভোসে আগামী ১৭-২০ জানুয়ারী এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। প্রধানমন্ত্রী এই সম্মেলনে যোগ দিতে আগামী ১৫ জানুয়ারী ঢাকা ছাড়বেন। নতুন বছরে এটাই হবে প্রধানমন্ত্রীর প্রথম বিদেশ সফর। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
জানা গেছে, ৪ দিনের ওই আয়োজনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে তার কার্যালয়, পররাষ্ট্র দপ্তর, সরকারের অন্য মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থার প্রায় অর্ধশতাধিক প্রতিনিধি (বিভিন্ন পর্যায়ের) যোগ দিচ্ছেন। সরকার প্রধানের সফরসূচি (খসড়া) মতে, আগামী ১৫ জানুয়ারি (দিনের শেষার্ধ্বে) শেখ হাসিনা সুইজারল্যান্ডের উদ্দেশে ঢাকা ছেড়ে যাবেন। পরদিন তিনি অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছবেন। সেখানে ফোরামের বিভিন্ন পর্বে অংশ নেয়া ছাড়াও বেশক’টি সেশনে তার বক্তৃতা করার কথা রয়েছে। কর্মকর্তারা বলছেন, ওই সব বক্তৃতায় বৈশ্বিক অর্থনীতির প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অবস্থা এবং অবস্থান তুলে ধরবেন সরকার প্রধান। আগামী ২১ জানুয়ারি তার দেশে ফেরার কথা রয়েছে। বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের সম্মেলনে যোগদানকালে বিভিন্ন দেশের সরকার ও রাষ্ট্র প্রধানদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক হতে পারে। সেসব বৈঠক আয়োজনের জন্য বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গেও আলোচনা চলছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে আগামীকাল শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেছে।
এবারের বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের সম্মেলনে প্রায় ১০০ দেশের আড়াই হাজার প্রতিনিধি যোগ দিচ্ছেন। সম্মেলনে প্রায় ৩০০ সেশন অনুষ্ঠিত হবে। আসন্ন বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের ৪৭তম বার্ষিক সম্মেলনে চার বিষয় প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে, ফোরামের সদস্য দেশগুলোর মধ্যে বৈশ্বিক যোগাযোগ আরও শক্তিশালীকরণ, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি পুনরুজ্জীবিত, পুঁজিবাদ সংস্কার ও চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের জন্য প্রস্তুতি।
সূত্র জানায়, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং এবার প্রথমবারের মতো বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের সম্মেলনে যোগ দিচ্ছেন।
উল্লেখ্য, বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরাম জেনেভাভিত্তিক একটি আন্তর্জাতিক অলাভজনক সংস্থা। প্রতিবছর একবার দাভোসে এই ফোরামের বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। বিশ্বের চলমান অর্থনৈতিক অবস্থা নিয়ে আলোচনার জন্য এই ফোরাম গড়ে তোলা হয়েছে।
জানা গেছে, সুইজারল্যান্ড থেকে ফিরে আসার পরে প্রধানমন্ত্রীর দ্বিতীয় বিদেশ সফর হবে ভারতে। আগামী ফেব্রুয়ারীর প্রথম সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রী ভারত সফরে যাবেন বলে আশা করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর দিল্লী সফরে প্রতিরক্ষা, মেগা প্রকল্পে অর্থায়ন, বাণিজ্য, বিনিয়োগ ছাড়াও মহাকাশ, স্যাটেলাইটসহ বিভিন্ন খাতে সইয়ের জন্য বেশ কিছু চুক্তি ও সমঝোতা স্মারকের প্রস্তাব চূড়ান্তে কাজ করছেন সংশ্লিষ্টরা। এছাড়া, সমুদ্রবন্দর, বিমানবন্দর, সড়কসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন অবকাঠামো খাতে সৃজনশীল পন্থায় ভারতের অর্থায়নের বিষয়টি আলোচনা হচ্ছে। বাংলাদেশের অন্যতম অগ্রাধিকার প্রকল্প গঙ্গা ব্যারেজ নির্মাণে ভারতকে পাশে পাওয়া, স্থলসীমান্ত চুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়ন এবং সামরিক সহযোগিতা সংক্রান্ত চুক্তি সইয়ের বিষয়টিও আলোচনায় গুরুত্ব পাচ্ছে। এছাড়া এবারের সফরে দীর্ঘদিনের অমীমাংসিত বিষয় এবং বাংলাদেশের অগ্রাধিকার হিসেবে তিস্তা চুক্তিতে জোর দেবে ঢাকা। একাত্তরে আত্মোৎসর্গকৃত ভারতীয় সেনাসদস্যদের পরিবারের সদস্যদের সম্মাননা জানানোর আয়োজনের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে এবারে প্রধানমন্ত্রীর দিল্লী সফরে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন