দাওয়াতুন্নবী স. মাহফিল বাস্তবায়ন কমিটি
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই বলেছেন, সকলক্ষেত্রে রাসূল সা.-এর আদর্শের অনুসরণ ও অনুকরণ করতে হবে। সমাজে চলমান অশান্তি দূর করতে গিয়ে মানুষ বিভিন্ন জাগতিক মতবাদ গ্রহণ করছে। কিন্তু ইসলামে কুরআন-সুন্নাহর বাইরে কোন আদর্শ বা মতবাদের স্থান নেই। আর এই কারণেই অশান্তি কমছে না বরং বেড়েই চলেছে। আল্লাহপ্রদত্ত জীবনব্যবস্থাই স্থায়ী সমাধানের পথ। পীর সাহেব বলেন, চলমান নাস্তিক্যবাদী শিক্ষানীতি ও শিক্ষাআইন ও সিলেবাস বাতিল করে ইসলামী ধারার শিক্ষা বাস্তবায়ন করতে হবে।
২৮ ডিসেম্বর দাওয়াতুন্নবী স. উপলক্ষে ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত দুই দিনব্যাপী তাফসীরুল কুরআন মাহফিলে শেষদিনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। দাওয়াতুন্নবী সা. মাহফিল বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত তাফসীর মাহফিলে বিশেষ অতিথি ছিলেন চরমোনাই কামিল মাদরাসার প্রিন্সিপাল অধ্যক্ষ মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল-মাদানী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নায়েবে আমীর মুফতী সৈয়দ মোহাম্মদ ফয়জুল করীম, বাংলাদেশ কুরআন শিক্ষা বোর্ডের মহাসচিব আলামা নূরুল হুদা ফয়েজী পীর সাহেব কারীমপুর, অধ্যাপক হাফেজ মাওলানা এটিএম হেমায়েত উদ্দিন, ঢাকা মহানগর উত্তর সভাপতি অধ্যক্ষ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দক্ষিণ সহ-সভাপতি আলহাজ আব্দুর রহমান ও আলহাজ আলতাফ হোসেন, উত্তর সহ-সভাপতি আলহাজ হারুন অর রশিদ ও আলহাজ আনোয়ার হোসেন, দক্ষিণ সেক্রেটারী মাওলানা এবিএম জাকারিয়া ও উত্তর সেক্রেটারী মোঃ মোশাররফ হোসেন প্রমুখ।
অধ্যক্ষ সৈয়দ মোসাদ্দেক বিলাহ আল-মাদানী বলেন, মানুষ নৈতিকতা হারিয়ে অনৈতিক কর্মকা-ের দিকে ধাবিত হচ্ছে। নৈতিকতা বিবর্জিত জাতিকে ফিরিয়ে আনতে হলে রাসূল সা.-এর সুন্নাহ কায়েম করতে হবে। আর এ লক্ষ্যে নারী নেতৃত্বের অবসান ও ভ্রান্ত মতাদর্শ পরিহার করতে হবে।
মুফতী সৈয়দ ফয়জুল করীম বলেন, মানুষের জৈবিক যত চাহিদা রয়েছে সবকিছুর দিকনির্দেশনা রয়েছে ইসলামে। কোন মানুষ যদি পরিপূর্ণ ইসলামী জীবনাচার মেনে চলে, সে পরিণত হয় একজন আদর্শ মানুষে। তেমনি সমাজ ও রাষ্ট্র যদি ইসলাম অনুযায়ী পরিচালিত হয়, সেই রাষ্ট্রও হবে বিশ্বের মধ্যে মডেল। তিনি সকলকে দেশ ও জাতির স্বার্থে ইসলামের সুমহান আদর্শের ছায়াতলে সমবেত হবার জন্য আহ্বান জানান।
মাহফিলে নেতৃবৃন্দ বলেন, বাংলাদেশ ৯২ ভাগ মুসলমানের দেশ। এদেশে সকল সংস্কৃতি ও মূল্যবোধ হবে ইসলামী আদলে। পবিত্র হাইকোর্ট অঙ্গনের মূর্তির ভাস্কর্য অপসারণ করে সেখানে কুরআন ও তলোয়ার সম্বলিত ভাস্কর্য স্থাপন করতে হবে। কোন দলীয় প্রতীক (দাঁড়িপালা) হাইকোর্ট সুপ্রীমকোর্টে ন্যায়-নীতির ধারক নয়। ন্যায়-নীতির আদর্শ হচ্ছে পবিত্র কুরআন।
জাতীয় মুসল্লি পরিষদ
সুপ্রিম কোর্টের সামনে গ্রীক দেবীর মূর্তি স্থাপনের বিরুদ্ধে তীব্র হুশিয়ারি ও চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছে জাতীয় মুসল্লি পরিষদ। গত ৬ জানুয়ারি জুমুয়া শেষে বায়তুল মোকাররম মসজিদ প্রাঙ্গণে এক মুসল্লি বিক্ষোভ সভা করে সংগঠনটি। বক্তারা বলেন, এ সমাবেশ সারা দেশের ১৪ কোটি মুসলমানের সংক্ষুব্ধ মনের বহিঃপ্রকাশ। একে আমলে না নিলে সরকার জনসমর্থন হারাবে। বক্তারা বলেন, সুপ্রিম কোর্টের সামনে মূর্তি স্থাপনের বিরুদ্ধে এই সমাবেশের মাধ্যমে জাতির ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। বক্তারা বলেন, দেশের রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম। দেশের ৯৮ ভাগ জনগোষ্ঠী মুসলমান। মক্কা শরীফ বিজয়ের পর নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পবিত্র ক্বাবা শরীফে রক্ষিত ৩৬০টি মূর্তি ভেঙ্গে ফেলেছিলেন। মুসলিম শরীফের হাদীছ শরীফে হুযুর পাক সাল্লাল্লাহ্ ুআলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, আমি আবির্ভূত হয়েছি মূর্তি ধ্বংস করার জন্য। সুবহানাল্লাহ। বলাবাহুল্য দেশের প্রত্যেকটি মুসলমান কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ অনুযায়ী এ চেতনায় বিশ্বাসী। কিন্তু ৯৮ ভাগ জনগোষ্ঠী মুসলমানের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দিয়ে দেশের মানুষের বিচার চাওয়ার সর্বোচ্চ স্থান সুপ্রিম কোর্টের সামনে মূর্তি স্থাপন তারা মেনে নেবে না। জাতীয় মুসল্লি পরিষদের উদ্যোগে বাদ জুমাহ বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের উত্তর চত্বরে আয়োজিত এক প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা এসব কথা বলেন। হাফেজ আব্দুস সাত্তারের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখেন, বঙ্গবন্ধু ওলামা পরিষদের নেতা মুফতী মাসুম বিল্লাহ। ইসলামী ঐক্য আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা শাখাওয়াত হোসেন, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় নেতা এ আর হেলাল, প্রতিবাদ সভায় উপস্থিত ছিলেন ইসলামীক ফন্টের আহ্বায়ক শাহসুফী সৈয়দ আব্দুল হান্নান আল হাদিসহ বিভিন্ন দলের নেতৃবৃন্দ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন