মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ইসলামী জীবন

ইসলামী কর্মতৎপরতা

| প্রকাশের সময় : ২৯ জানুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ইসলামী ঐক্য আন্দোলন
ইসলামী ঐক্য আন্দোলনের উদ্যোগে ‘সন্ত্রাস প্রতিরোধে রাসূল (স.)-এর দাওয়াত‘ শীর্ষক রাজশাহী বিভাগীয় সম্মেলনে সংগঠনের আমির ড. ঈসা শাহেদী বলেন, বিশ^ব্যাপী ইসলামী পুনর্জাগরণের ভয়ে ইসলাম সম্পর্কে সাধারণ মানুষের মনে আতঙ্ক সৃষ্টি এবং সত্যের লালন ও অসত্য দমনে জিহাদের চেতনাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার লক্ষে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে সন্ত্রাসী কর্র্মকা- পরিচালনা করা হচ্ছে। এ সম্পর্কে কোনো অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হয়ে ইসলামের সত্য ও সুন্দরের আদর্শে দেশ ও জাতিকে গড়ে তোলার প্রত্যয় গ্রহণ করতে হবে। তিনি বলেন, গেল রমযানে শবে কদরের রাতে গুলশানে পরিচালিত সন্ত্রাসী হামলা ও বিদেশীসহ বহুনিরীহ মানুষের প্রাণহানি প্রমাণ করেছে, এ দেশে সন্ত্রাসী কর্মকা-গুলো এমন লোকদের দিয়ে পরিচালনা করা হচ্ছে যাদের পারিবারিক বা শিক্ষা জীবনের সাথে ইসলামের কোনো যোগসূত্র নেই। তিনি জিহাদ ও কিতালের আলাদা পরিচয় তুলে ধরে বলেন, জিহাদ মানে আল্লাহর দ্বীনের প্রচার ও প্রতিষ্ঠার জন্যে সর্বোচ্চ আত্মত্যাগের মনোভাব নিয়ে শিক্ষা সংস্কৃতিসহ জীবনের সকল অঙ্গনে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা। আর কিতাল বা ধর্মের জন্যে যুদ্ধ করতে হলে সর্বাগ্রে প্রয়োজন হল রাষ্ট্রক্ষমতা হাতে থাকা। অন্যথায় জিহাদ বা কিতাল সন্ত্রাসবাদে পর্যবসিত হবে। এই চিন্তার পক্ষে সবচেয়ে বড় দলীল ও যুক্তি হল, মহানবী (সা.) মক্কার জীবনে ১৩ বছর অবর্ণনীয় নির্যাতনের শিকার হওয়া সত্ত্বেও মুসলমানদের কোনো সশস্ত্র তৎপরতার অনুমতি দেননি। বরং হিজরতের পর মদীনায় ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা লাভের পরই কিতাল বা সশস্ত্র জিহাদের হুকুম নাযিল হয় এবং বদর, উহুদ, আহযাব প্রভৃতি যুদ্ধের ইতিহাস রচিত হয়। তিনি এসব বিষয়ে সর্বোচ্চ সতর্কতার পরিচয় দেয়ার জন্য আলেম সমাজের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ছেলে-মেয়েরা প্রকৃত ইসলামী শিক্ষা থেকে বঞ্চিতহলে যে কোনো অপপ্রচারে প্রলুব্ধ ও প্রতারিত হওয়া সম্ভব। কাজেই সন্ত্রাস দমনের জন্যে স্কুল-কলেজ ও বিশ^বিদ্যালয়ে সত্যিকার ইসলামী শিক্ষা সিলেবাস ভুক্ত করা সময়ের দাবি। তা না করে স্কুলের দশম শ্রেণি থেকে দীর্ঘকাল থেকে চলে আসা ১০০ নম্বর ইসলামিয়াত বা ধর্মশিক্ষা তুলে দেয়ার যে ব্যবস্থা নতুন শিক্ষানীতিতে নেয়া হয়েছে তার পরিণতি দেশ ও জাতির জন্য অত্যন্ত ভয়াবহ হবে এবং দেশবাসী কোনো অবস্থাতেই তা মেনে নেবে না।
১২ জানুয়ারি সকাল ১০ টায় বগুড়া উডবার্ণ পাবলিক লাইব্রেরী মিলনায়তনে ইসলামী ঐক্য আন্দোলনের বগুড়া বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী মওলানা আবু বকর সিদ্দিকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন আন্দোলনের আমির ড.মওলানা মুহাম্মদ ঈসা শাহেদী, বক্তব্য রাখেন ইসলামী ঐক্য আন্দোলনের নায়েবে আমির, মওলানা মুহাম্মদ রুহুল আমীন, কেন্দ্রীয় জয়েন্ট সেক্রেটারি অধ্যাপক মোস্তফা তারেকুল হাসান, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক, ডা. সাখাওয়াত হুসাইন, কেন্দ্রীয় অফিস সম্পাদক মাওলানা আবুবকর সিদ্দিক, বগুড়া কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের সাবেক খতিব মাওলানা মোজাম্মেল হক, বগুড়া কারবালা মাদরাসার মুহাদ্দিস, কাজী মাওলানা ফজলুল করীম, ইসলামী ঐক্য আন্দোলন বগুড়া জেলা শাখার নায়েবে আমির মাওলানা আবদুর রাজ্জাক, সিরাজগঞ্জ জেলা শাখার আমির মাওলানা সোহরাব হোসেন, গাইবান্দা জেলা শাখার আমির মাওলানা ইদ্রিস আলী, পাবনা জেলা শাখার  রাজশাহী মহানগরী আমির মাওলানা শাহাদাত হোসেন, নাটোর জেলা শাখার আমির অধ্যাপক মাওলানা আবদুস সামাদ জিহাদী, গাইবান্দা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ডা. আবদুস সালাম, বগুড়া জেলা শাখার নায়েবে আমির মাওলানা সোলাইমান আলী, সিরাজগঞ্জ জেলা শাখার  সাধারণ সম্পাদক মাওলানা শাহ জামাল, জমিয়তে তালাবায়ে আরাবিয়ার প্রধান সম্পাদক মুহাম্মদ আবদুর রহমান, ইবি শাখার সভাপতি হাফেজ আনোয়ার হোসেন প্রমুখ। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন আন্দোলনের বগুড়া জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আরেফ বিল্লাহ বিলু।
নেতৃবৃন্দ বলেছেন, সন্ত্রাস মুক্ত সমাজ গঠন করার জন্যই রাসূল (স.) দুনিয়ায় এসেছিলেন। তারা বলেন, সারা পৃথিবীতে যখন হত্যা, গুম, সন্ত্রাস, রাহাজানি, লুটপাট, রাষ্ট্রীয় সম্পদ তছরুপের মহোৎসব চলছিলো তখন রাসূল (স.) আলোকবর্তিকা হয়ে  সারা দুনিয়ার রহমত স্বরূপ আগমন করেছিলেন। আজও বাংলাদেশসহ  দুনিয়াব্যাপি যে অশান্তি চলছে তা থেকে মুক্তি পেতে হলে রাসূল (স.)-এর আদর্শ প্রতিষ্ঠা করতে হবে। তারা সন্ত্রাস প্রতিরোধে জাতীয় জীবনের সকল স্তরে কোরআন-সুন্নাহর শিক্ষা বাস্তবায়নের দাবি জানান।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন