শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

নতুন প্রজাতির অমেরুদ-ী প্রাণীর সন্ধান দিলেন নোবিপ্রবি শিক্ষক

প্রকাশের সময় : ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

নোয়াখালী ব্যুরো : নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মৎস্য ও সমুদ্র বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক ড. মোহাম্মদ বেলাল হোসেন ও অঁংঃৎধষরধহ গঁংবঁস-এর বিশিষ্ট পলিকীট বিজ্ঞানী ড. প্যাট হ্যাচিংস বাংলাদেশের নোয়াখালী উপকূলীয় অঞ্চল থেকে ঘবঢ়যঃুং নধহমষধফবংযর নামে অমেরুদ-ী পলিকীটের নতুন একটি প্রজাতি আবিষ্কার করেন। সাধারণত লবণাক্ত জলাশয়ের তলদেশের মাটিতে বসবাসকারী ছোট এই প্রাণী মাছের খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এছাড়া জলাভূমির প্রতিবেশগত অন্যান্য ভূমিকা রাখে, যেমনÑ বারোয়িংয়ের মাধ্যমে নদী বা সমুদ্রের তলদেশের নিউট্রিয়েন্সেটস ও অক্সিজেন আদান-প্রদান করে উপকূলীয় জলাশয় ও সমূদ্রের উর্বরতা বৃদ্ধি করে।
প্রাণিজগতে এনিলিডা পর্বের অন্তর্গত পলিকীটের দেহে অসংখ্য চুল থাকায় এরা ইৎরংঃষব বা নবধৎফ ড়িৎসং নামে পরিচিত। এই প্রাণীর গ্রুপ নিয়ে গত প্রায় দুইশ বছর ধরে বঙ্গোপসাগরের তীরবর্তী অঞ্চলে গবেষণা হলেও এ পর্যন্ত বাংলাদেশ উপকূলীয় এলাকা থেকে নতুন কোনো প্রজাতি আবিষ্কৃত হয়নি। তাই এই প্রজাতির নামকরণ বাংলাদেশের নামানুসারে ঘবঢ়যঃুং নধহমষধফবংযর করা হয়। সাদা বর্ণের ঈুষরহফৎরপধষ আকৃতির আবিষ্কৃৃত পলিকীটের দৈঘ্য ১১-১৯ মি.মি. এবং প্রস্থ ০.৮-১ মি.মি.। এটির অন্যতম শনাক্তকারী বৈশিষ্ট্য হলো এর গলবিলে ৯ জোড়া প্রান্তীয় ও ১৪ সারি উপ-প্রান্তীয় প্যাপিলা থাকে। এছাড়া দেহের ৭-২৭ খ-ে ব্রাঙ্কিয়া থাকে।
ড. বেলাল বলেন, পলিকীট জীববৈচিত্র্য নিয়ে গবেষণা করার জন্য ২০১৫ সালের মে মাসে অঁংঃৎধষরধহ গঁংবঁস জবংবধৎপয ওহংঃরঃঁঃব, ঝুফহবু-তে পোস্ট ডক্টরাল গবেষক হিসেবে আমন্ত্রিত হন। গবেষণার অংশ হিসেবে বাংলাদেশের নোয়াখালী উপকূলীয় অঞ্চল থেকে সংগৃহীত কিছু পলিকীট নমুনা শনাক্ত করতে গিয়ে দেখতে পান সদ্য আবিষ্কৃত প্রজাতিটি বৈশিষ্ট্যের দিক থেকে ঘবঢ়যঃুং গণভুক্ত অন্যান্য স্বীকৃত ৯৮টি প্রজাতি থেকে আলাদা। অঁংঃৎধষরধহ গঁংবঁস-এ সংরক্ষিত এই গণভুক্ত আরো বেশ কিছু নমুনার সাথেও তুলনা করা হয়। চূড়ান্তভাবে নতুন প্রজাতি হিসেবে নিশ্চিত হওয়ার জন্য অত্যাধুনিক ঝপধহহরহম ঊষবপঃৎড়হ গরপৎড়ংপড়ঢ়ব (ঝঊগ) প্রযুক্তিও ব্যবহার করা হয়। পরে ড. প্যাট হ্যাচিংস-সহ এই প্রজাতিটির স্বীকৃতি লাভের জন্য গবেষণার ফলাফল নিউজিল্যান্ড থেকে প্রকাশিত আন্তর্জাতিক ঞধীড়হড়সরপ জার্নাল তড়ড়ঃধীধ-তে পাঠানো হয়। গত ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ তারিখে “ঘবঢ়যঃুং নধহমষধফবংযর হ.ংঢ়., ধ হবি ংঢ়বপরবং ড়ভ ঘবঢ়যঃুরফধব (অহহবষরফধ: চযুষষড়ফড়পরফধ) ভড়ৎস ইধহমষধফবংয পড়ধংঃধষ ধিঃবৎং শিরোনামে প্রকাশিত হয়। একই দিনে বিশ্বস্বীকৃত ডাটাবেইজ তড়ড়নধহশ ও ডঙজগঝ (ডড়ৎষফ জবমরংঃবৎ ভড়ৎ গধৎরহব ঝঢ়বপরবং)-এ অন্তর্ভুক্ত হওয়ার মাধ্যমে প্রজাতিটি নতুন হিসেবে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি লাভ করে।
ড. বেলাল জানান, এই পর্যন্ত পৃথিবী থেকে প্রায় দশ হাজার প্রজাতির পলিকীট আবিষ্কৃৃত হয়েছে। কিন্তু এই পর্যন্ত প্রকাশিত গবেষণা প্রবন্ধে বাংলাদেশ থেকে মাত্র ২৯ প্রজাতির তালিকা পাওয়া যায়। আমাদের উপকূলীয়/সামুদ্রিক অঞ্চল অত্যন্ত জীববৈচিত্র্যপূর্ণ। অপ্রতুল গবেষণার জন্য আমরা এখনও আমাদের জীববৈচিত্র্যের সম্পূর্ণ তালিকা তৈরি করতে পারিনি। এমনও হতে পারে যে, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রতিক্রিয়ায় ও মানবসৃষ্ট দূষণের কারণে অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রজাতি আমাদের আবিষ্কারের আগেই দেশ/পৃথিবী থেকে হারিয়ে যাবে। এই গুরুত্ব অনুধাবন করে পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতো আমাদের দেশেও জীববৈচিত্র্য নিয়ে আরো ব্যাপক গবেষণা হওয়া দরকার।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন