শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

হযরত মাওলানা এম এ মান্নান (রহ.)-এর ইন্তেকাল বার্ষিকী বিশেষ সংখ্যা

অবিস্মরণীয় কর্মবীর মাওলানা এম এ মান্নান

| প্রকাশের সময় : ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

রূহুল আমীন খান


‘দিকে দিকে নিনাদিত শ্রদ্ধানত জনতার নিযুত সালাম
মাওলানা মান্নান এক কালজয়ী পুরুষের নাম’
সত্যিই মাওলানা এম এ মান্নান এক কালজয়ী পুরুষেরই নাম। দৈনিক ইনকিলাবের প্রতিষ্ঠাতা, বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের নব রূপকার, মসজিদে গাউসুল আযম ও জমিয়াতুল মোদার্রেছীন কমপ্লেক্সের স্থপতি, অসংখ্য দ্বীনী প্রতিষ্ঠানের অভিভাবক, সাবেক ধর্ম ও ত্রানমন্ত্রী, এমপি আলহাজ মাওলানা এম এ মান্নান এক মহান কর্মবীর, এক অবিস্মরণীয় ব্যক্তিত্ব। তাঁকে কখনো ভোলা যায় না। তাঁর ইন্তেকালবার্ষিকী পালন করতে গিয়ে তাঁকে যেমন মনে পড়ে, তেমনি মনে পড়ে দেশ-জাতির নানা সংকট-সম্ভাবনার সময়ে। হরিষ-বিষাদে, আনন্দ-বেদনায়। বিভিন্ন প্রেক্ষিতে বারবার উচ্চারিত হয় তাঁর নাম। মনের পর্দায় ভেসে ওঠে তাঁর উজ্জ্বল কান্তি, প্রশান্ত মুখচ্ছবি। এক সাধারণ পরিবেশ থেকে উঠে এসে, তিনি রেখে গেছেন অসাধারণ কীর্তি। মেধা, প্রতিভা, সৃজনশীলতা, কর্মকুশলতী, দুর্দমনীয় মনোবল, কর্মনিষ্ঠা ও অধ্যবসায় দ্বারা তিনি অবিস্মরণীয় অবদান রেখে গেছেন বিভিন্ন ক্ষেত্রে। কালের পাতায় রেখে গেছেন চিরস্মরণীয় কীর্তি ও স্মৃতি।
বিস্ময়কর প্রতিভা
জন্মগতভাবেই মাওলানা মান্নান ছিলেন বিস্ময়কর মেধা ও অসাধারণ স্মৃতিশক্তির অধিকারী। শৈশবেই পিতৃহারা হন তিনি। ইয়াতিমের অসহায়ত্ব তাঁর প্রতিষ্ঠার পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি। শ্রেণীকক্ষে তিনি উস্তাদদের  মনোযোগ আকর্ষণে সক্ষম হয়েছেন অপূর্ব মেধা ও প্রতিভায়। মাদরাসার প্রতিটি পরীক্ষায় রেখেছেন সেই মেধার স্বাক্ষর। তাঁর উস্তাদদের মুখে শুনেছি, শ্রেণীকক্ষে পাঠদান করে উস্তাদ যখন বেরিয়ে গেছেন সাথে সাথে তিনি সমপাঠীদের ঐ পাঠটি ঠিক উস্তাদদের মতোই বরং তার চেয়েও উত্তমরূপে বুঝিয়ে দিতেন। ইলমেহাদীসের আসমাউর রিজাল (বর্ণনাকারীদের নাম, জীবন ইতিহাস, পরম্পরা সূত্র) একটি কঠিন বিষয়, এর মাধ্যমে হাদীসের গ্রহণযোগ্যতা ও অগ্রহণযোগ্যতা, সহীহ দয়ীফ মওদূ নির্ণিত হয়। মাওলানা মান্নান এ বিষয়ে ছিলেন সুপ-িত। শিক্ষকতা জীবনে তিনি মুহাদ্দিসরূপে টাইটেল ক্লাসে কখনো কখনো একাই সিহাহ সিত্তার পাঠদান করেছেন। ইমামদের বিভিন্ন মত ও তাদের দলিল সবিস্তার বর্ণনা করেছেন, বিভিন্ন মতের মধ্যে যৌক্তিক সামঞ্জস্য তুলে ধরেছেন। দেশ-বিদেশে লাখো মানুষের সাথে মেলামেশা করেছেন তিনি, নোট বই বা ডায়েরিতে তাদের নাম-পরিচয় তাকে লিখে রাখতে দেখিনি কখনো কিন্তু তাদের নাম অনায়াসে বলে দিতে পারতেন তিনি। টেলিফোন নম্বর লিখে রাখতে দেখিনি তাঁকে কিন্তু কী দেশে, কী বিদেশে দিন-রাত টেলিফোন করতে থাকতেন তিনি। কত হাজার নাম্বার স্মৃতিতে ছিল তাঁর আল্লাহই তা ভালো জানেনÑ তবে আমার প্রায় চল্লিশ বছরের অভিজ্ঞতা এই।
মাওলানা এম এ মান্নানের শিক্ষা কেবল মাদরাসায়। স্কুল, কলেজ, ভার্সিটিতে তিনি পড়ালেখা করেননি। তবে তাঁর মন্ত্রিত্বকালে ফাইল নোট সর্বদা ইংরেজিতেই লিখতেন, কেউ ইংরেজিতে ফাইল নোট দিলে এবং তার মধ্যে ভাষাগত কোনো ভুল থাকলে তা তাঁর চক্ষু এড়াত না। ভুলটি ধরিয়ে দিতেন, সংশোধন করে দিতেন। বিদেশি সাংবাদিকদের সাথে, কূটনীতিকদের সাথে অনায়াসে অনর্গল ইংরেজিতে কথা বলতেন, মত বিনিময়  করতেন। ইংরেজি ভাষার দেশে তিনি বেশ কয়েকবার সম্মেলন-সমাবেশে ভাষণও দিয়েছেন তাদের ভাষাতেই। লিখিত ভাষণ দেয়া তিনি পছন্দ করতেন না। বাংলাতো তাঁর মাতৃভাষা, উর্দু ভাষাতে তিনি ছিলেন সুপ-িত। শব্দ চয়ন, ভাব বিন্যাস, উপস্থাপনা ব্যাকরণের অনুসরণ তাঁর এত নির্ভুল ও মুন্সিয়ানাপূর্ণ ছিল যে, ঐ ভাষাভাষীরাও  তা দেখে ও শুনে অবাক হয়ে যেতেন। আরবী একটি কঠিন ভাষা। এর ব্যাকরণও অত্যন্ত সমৃদ্ধ। মাদরাসায় তা ভালোভাবে পড়তে হয়, পড়াতে হয়। একজন মুহাক্কিক আলেমেদ্বীন হয়ে এ ভাষা তিনি জানবেন, বুঝবেন তা স্বাভাবিক। অনেক আলেমই এ ভাষা জানলেও এ ভাষায় বক্তৃতা করতে পারেন না। আটলান্টিকের বেলাভূমি থেকে পারস্য উপসাগর পর্যন্ত যে আরবজাহান বিস্তৃত তার স্থানীয় ভাষার মধ্যে অনেক পার্থক্য আছে, পার্থক্য আছে ক্লাসিক্যাল আরবী ও আধুনিক আরবীর মধ্যে। আর বিভিন্ন আরব দেশের দেহাতী আরবীয়র মধ্যে পার্থক্য তো নদীয়া শান্তিপুরের, বাংলার চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রামের কথ্য বাংলার চেয়েও বেশি। মাওলানা এম এ মান্নান ব্যপকভাবে আরবজাহান সফর করেছেন, রাজা-বাদশাহ থেকে যাযাবর বেদুঈনদের সাথেও মিশেছেন, কথাবার্তা বলেছেন, মতবিনিময় করেছেন, আলাপচারিতায় অংশ নিয়েছেন, কিন্তু দোভাষীর সহায়তায় নিতে কখনো তাঁকে দেখিনি। তিনি কী করে যে অতি অল্পসময়ের মধ্যে তাদের কলবিকল ল্যাঙ্গুয়েজ আয়ত্ত করে ফেলতেন আর অবলীলাক্রমে তা ব্যবহার করতেন তা ভাবতে বিস্ময় লাগে।
সংগঠক হিসাবে
মাওলানা এম এ মান্নানের সাংগঠনিক প্রতিভা ছিল অসাধারণ। জমিয়াতুল মোদার্রেছীন শতাধিক বছরের ঐতিহ্যধন্য মাদরাসা শিক্ষকদের পেশাজীবী সংগঠন। কিন্তু ব্রিটিশ শাসনামলে, পাকিস্তানি শাসনকালে এটি আজকের মতো সাংগঠনিকভাবে এমন মজবুত, সুগঠিত, সক্রিয় ও প্রাণবন্ত ছিল না। মাওলানা সাহেব পাকিস্তান আমলেও এর সাথে সম্পৃক্ত থাকলেও এ সংগঠন আজকের এরূপ লাভ করে বাংলাদেশ আমলে এসে, ১৯৭৬ সালে। তিনি এর সভাপতি নির্বাচিত হয়ে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে। তিনিই এর নবরূপকার। তিনি একে রাজধানীর কেন্দ্রীয় পর্যায় থেকে গ্রাম পর্যায় পর্যন্ত সুসংগঠিত করেন। মাদরাসার প্রতিটি শিক্ষককে এর সাথে সম্পৃক্ত করেন, তাদের মুখে ভাষা দেন, বুকে নব আশা জাগিয়ে তোলেন, তাদেরকে উজ্জীবিত, উদ্দীপিত অনুপ্রাণিত করেন। ব্রিটিশ আমলে একজন বেসরকারি মাদরাসা শিক্ষক মাসে সরকারি অনুদান পেতেন মাত্র ৫ (পাঁচ) টাকা। পাকিস্তান আমলেও সরকারি অনুদান ছিল যৎসামান্য। শুধু মাদরাসা শিক্ষক কেন, সকল বেসরকারি শিক্ষক সমাজেরই ছিল একই হাল। আজ সেখানে সকল বেসরকারি স্কুল, কলেজ ও মাদরাসার শিক্ষক সমাজ পাচ্ছে সরকারি স্কেলে ১০০% বেতন। পাচ্ছেন চিকিৎসাভাতা, বাড়িভাড়া ভাতা, অবসর ভাতা, কল্যান ভাতা ইত্যাদি সুযোগ সুবিধা, শিক্ষকতা আজ এক আকর্ষণীয় পেশায় পরিণত হয়েছে, আর এসব কিছুর পেছনের প্রাণ-পুরুষ যিনি তিনিই হলেন মাওলানা এম এ মান্নান।
এক সফল পুরুষ
মাওলানা এম এ মান্নান যখন সকল  সরকারি-বেসরকারি শিক্ষক সমাজকে একই প্লাটফর্মে ঐক্যবদ্ধ করার সংকল্প ঘোষণা করেন তখন কতক সংশয়বাদী একে আকাশ-কুসুম কল্পনা বলতেও কুণ্ঠাবোধ করেননি। কিন্তু তিনি তা বাস্তবায়িত করতে সক্ষম হয়েছেন, যার সুফল আজ শিক্ষকসমাজ ভোগ করছে। তিনি যখন বেসরকারি শিক্ষকদের জন্য বেতন স্কেল প্রবর্তনের, টাইম স্কেল প্রবর্তনের, চিকিৎসা ভাতা, বাড়ি ভাড়া ভাতা, অবসর ভাতা, কল্যাণ ফান্ডের কথা বলেছেন তখনও কতক একে অসম্ভব, অবাস্তব বলে আখ্যায়িত করেছেন, কেউ কেউ ঠাট্টা-মশকারা করতেও ছাড়েননি। কিন্তু তা আজ বাস্তবায়িত হয়েছে। তিনি যখন মহাখালীর গভীর লেকে একটি ঐতিহাসিক মসজিদ ও দ্বীনী কমপ্লেক্স প্রতিষ্ঠা করার ঘোষণা দেন তখনও অনেকে একে উদ্ভট খেয়াল বলে মজা উড়িয়েছেন। কিন্তু আল্লাহর অশেষ মেহেরবানীতে আজ সেখানে মনোরম স্থাপত্য শৈলির অপূর্ব নিদর্শন মসজিদে গাউসুল আজম ও তার গম্বুজ মিনার সে স্বপ্ন-সফলতার বিজয়বার্তা ঘোষণা করছে। তিনি যখন একটি প্রথম শ্রেণীর দৈনিক পত্রিকা প্রকাশের  উদ্যোগ নেন তখনো কতক সম্মানিত ও খ্যাতনামা সাংবাদিক একে মাওলানার ‘দিবাস্বপ্ন’ বলে অবজ্ঞা ও তাচ্ছিল্যপূর্ণ মন্তব্য করেছেন। কিন্তু আল্লাহর মেহেরবানীতে দৈনিক ইনকিলাব প্রতিষ্ঠিত হয়ে সগৌরবে ২৯ বছর অতিক্রম করছে। তিনি যখন নবপর্যায়ে এফিলিয়েটিং ইসলামী আরবী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবি তোলেন তখন ইসলামী আন্দোলনের কোনো কোনো নেতাও এটা বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে অসম্ভব ও অবাস্তব বলে পত্রিকায় নিবন্ধ প্রকাশ করেন। কিন্তু মর্দেমুমিন মাওলানা এম এ মান্নানের সেই দাবি এবং শতাব্দীর ওলামা-মাশায়েখ, ইসলামী জনতার সেই আকাক্সক্ষা আজ পূর্ণ হয়েছে। জাতীয় সংসদে আইন পাস হয়ে, ভিসি নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে তার কার্যক্রম এখন পূর্ণোদ্যমে এগিয়ে চলছে। অনেকেই বড় বড় স্বপ্ন দেখেন, আশা করেন কিন্তু নিজ চোখে সে স্বপ্নের বাস্তবায়ন দেখে যাওয়ার সৌভাগ্য সকলের হয় না। কিন্তু মাওলানা এম এ মান্নান এমন এক সফল পুরুষ ও সৌভাগ্যবান ব্যক্তি, যিনি স্বপ্ন ও আকাক্সক্ষার বাস্তব রূপ দিয়ে নিজ চোখেই তা দেখে যেতে পেরেছেন।
এ প্রসঙ্গে উল্লেখ করা যায় প্রখ্যাত আলেমেদ্বীন বহুগ্রন্থ প্রণেতা ইসলামী আন্দোলনের অন্যতম শীর্ষ নেতা, মাওলানা মুহিউদ্দীন খান প্রতিষ্ঠিত জাতীয় সীরাত কমিটি বাংলাদেশের একটি অনুষ্ঠানের কথা। ঐ কমিটি তার স্মারকে লিখেছে, “কমিটি চিন্তা-গবেষণার মাধ্যমে দেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ আলেমেদ্বীন, বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের সভাপতি দৈনিক ইনকিলাবের প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ব্যক্তিত্ব, সাবেক মন্ত্রী আলহাজ মাওলানা এম এ মান্নানকে চলতি ১৪২৫ হিজরী সালের শ্রেষ্ঠ ইসলামী ব্যক্তিত্ব পুরস্কার প্রদান করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। সেই মোতাবেক আজ ২৯ রবিউল আউয়াল ১৪২৫ হিজরী, ২০ মে ২০০৪ ঈসায়ী বৃহস্পতিবার ঢাকার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে মুহতারাম মাওলানাকে এ সম্মাননা পুরস্কারে ভূষিত করা হচ্ছে।” সম্মাননা স্মারকে মুতারাম মাওলানার জীবন-কর্ম নিবন্ধে আরো লিখা হয়েছে, “প্রাজ্ঞ আলেম, দক্ষ সংগঠক, সফল রাজনীতিবিদ, বহু ভাষাবিদ ও অসাধারণ বাগ্মী হিসেবে যেমন খ্যাত মাওলানা এমএ মান্নান, তেমনি চারিত্রিক মাধুর্যেও তিনি অনন্য। সদালাপী বন্ধু বৎসল, অতিথি পরায়ণ, উদার ও অমায়িক এই মানুষটির সান্নিধ্যে এসে কেউ মুগ্ধ না হয়ে পারে না। তাঁর বদান্যতা ও উদারহস্তের অবারিত দানে উপকৃত হয়েছে এমন লোকের সংখ্যা বিপুল। আত্মপ্রত্যয়ী নির্ভীক, অধ্যবসায়ী, প্রাণ প্রাচুর্যে ভরপুর, অক্লান্ত কর্মী পুরুষ মাওলানা এম এ মান্নান এক জীবন্ত ইতিহাস।”
আধ্যাত্মিকতায়
না, আর বেশি লেখার অবকাশ নেই সীমিত এই পরিসরে । তাই তাঁর আর একটি দিক আধ্যাত্মিকতা সম্পর্কে তাকে নিয়ে লেখা একটি কবিতার কয়েকটি চরণের উদ্ধৃতি দিয়েই শেষ করছি এ লেখা।
‘কখনো কাবার পাশে, রাসূলের রওযা মোবারকে
বাগদাদে, কারবালায়, কখনো আজমিরে দেখি তাঁকে
দেখি পীর-মুর্শিদের দরবারে খানকায়
মাদরাসায়, মসজিদে, কভু দেখি ধ্যানমগ্ন, আত্মলীন মহাতপস্যায়
বেখুদীতে গরক, কভু পানে মত্ত ইশকের জাম
মাওলানা মান্নান এক অতি উচ্চ আধ্যাত্মিক সাধকের নাম।
লেখক : কবি, সাংবাদিক, আলেমে দ্বীন

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
আজিজুর রহমান ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ২:১৫ এএম says : 0
আল্লাহ তাকে জান্নাতুল ফেরদাউস দান করুক।
Total Reply(0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন