শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শেকৃবিতে মৌচাষের উন্নত প্রযুক্তি

প্রকাশের সময় : ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১২:১১ এএম, ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭

শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ত্ব বিভাগীয় প্রধান, ড. মোহাম্মদ সাখাওয়াৎ হোসেনের তত্ত্বাবধায়নে, কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশনের আর্থিক সহায়তায় সুশীলন এনজিওর সাথে যৌথ উদ্যোগে একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে, আমাদের দেশে যেসব মৌচাষি রয়েছেন, এই মৌচাষিদেরকে আরও বেশি প্রযুক্তিগত সহায়তা দিয়ে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে উন্নত চাষপদ্ধতি অবহিত করা।
এরই আলোকে গবেষকদল গাজীপুর, সিরাজগঞ্জ, সাতক্ষীরা জেলায় মোট বিশ জন করে ষাট জন চাষিকে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে সেই সাথে বিভিন্ন চাষাবাদ উপকরণ দিচ্ছে। প্রথমে বিশটি আধুনিক মৌবাক্স দেয়া হয় যাতে মধু, মোম, পোলেন, প্রপোলিস, এই চারটি জিনিস সংগ্রহ করা যাবে। এক বছর যাবত গবেষণা করে দেখা যায়, এতে গতানুগতিক পদ্ধতির চেয়ে দেড়গুণ বেশি ফলন দেয়। সেই সাথে মধুর গুণগত মান অর্থাৎ আর্দ্রতা কম থাকে যা আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন।
উন্নত বাক্সগুলোতে ১৮-১৯% আর্দ্রতায় মধু সংগ্রহ করা যায়। সেই তুলনায় গতানুগতিক বাক্সগুলোতে আর্দ্রতা ২৩-২৪%। অনেক ক্ষেত্রে এর পরিমাণ ২৭-২৮% হয়। মধুতে আর্দ্রতা যত বেশি থাকে সে মধু তত দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়। এতে মধু তার কার্যকরীতা হারায়। তবে আর্দ্রতা ১৭-১৮% রাখলে গুণগত মান হারায় না।
মৌমাছি ফুল থেকে পিলেট আকারে যে পরাগরেণু সংগ্রহ করে তা পোলেন ট্রাপ প্রযুক্তি ব্যবহার করে হারভেষ্ট করা যায়। এ পোলেন ট্রাপ টি ষাট জন চাষির গতানুগতিক মৌবাক্সে ব্যবহার করে দেখা যায়, প্রতিটি মৌসুমে আধা কেজি পরোগরণু পাওয়া যায়। এ পরোগরণু ক্যাপসিউল হিসেবে বা সরাসরি চা, কফি, দুধ ইত্যাদির সাথে মিশিয়ে খাওয়া যায়। যা এর আগে বাংলাদেশে কখনো সংগ্রহ করা হয়নি।
প্রপোলিস ট্রাপ যা ষাট জন চাষি কে একশত বিশটি প্রদান করে মৌ-আঠা সফলভাবে পাওয়া যায়। এটি ও বাংলাদেশে প্রথম সংগ্রহ করা হয়। এর অত্যধিক ওষুধি গুণাগুণ রয়েছে।
এছাড়াও কুইন এক্সক্লুডার সফলভাবে ব্যবহার করা হয়েছে, এক্ষেত্রে সাধারণত আমাদের দেশে ব্রুড পদ্ধতি ব্যবহার করা হয় যার একটি চেম্বারে মৌমাছি, লার্ভা, পিউপা, ডিম, মধু, মোম, পোলেন, প্রপোলিস থাকে ফলে গতানুগতিক ধারায় মধু সংগ্রহ করলে বাচ্চা মৌমাছি মারা যায়, তাই পরবর্তী মৌসুমে মৌমাছির সংখ্যা কমে যায়, ফলশ্রুতিতে মধু উৎপাদন ব্যাহত হয়। আর কুইনএক্সক্লুডার পদ্ধতিতে দো-তালাবাক্স থাকে এতে রাণী মৌমাছি নিচের বাক্স থেকে উপরে যেতে পারে না, আর কর্মী মৌমাছিরা উপরে থাকে। ফলে মধু সংগ্রহ করলে, বাচ্চা মৌমাছি মারা যায় না এবং মধুর গুণাগুণ অক্ষুণœ থাকে।
শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ত্ব বিভাগীয় প্রধান, ড. মোহাম্মদ সাখাওয়াৎ হোসেন, কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশনকে ধন্যবাদ জানান এবং এই কাজটি যেন দ্রুত বাংলাদেশি সকল মৌচাষিদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে সেজন্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
ষ মাহমুদুর রহমান সোহেব

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন