স্টাফ রিপোর্টার : আপত্তিকর তথ্য প্রকাশ করায় বাংলাদেশের ৮৭টি অ্যাকাউন্ট বন্ধ করেছে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ। শেষ ১৮ মাসে ফেসবুক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার প্রেক্ষিতে সন্ত্রাস, ধর্মীয় উসকানিসহ অন্যান্য আপত্তিকর বিষয়ে মোট ১৯৬টি অ্যাকাউন্ট, পেইজ বা লিঙ্ক বন্ধ করার জন্য বাংলাদেশের পক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হয়। বর্তমানে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে অভিযোগের ভিত্তিতে সাড়া দিচ্ছে। গতকাল সোমবার জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে এসব তথ্য জানান ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী বেগম তারানা হালিম। সোস্যাল মিডিয়াসহ অনলাইন মিডিয়াগুলো মানুষের সক্ষমতা অনেক ক্ষেত্রেই বৃদ্ধি করে বলে জানান তিনি। প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মতো বাংলাদেশেও কখনো কখনো এর অপব্যবহার লক্ষণীয়।
তারানা হালিমের দেয়া তথ্যানুযায়ী, সোস্যাল মিডিয়ায় কোনো প্রকার পোস্ট যদি সহিংসতা ছড়ায় তখন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তালিকা করে সেসব ক্ষেত্রে ‘ইউআরএল’ বিটিআরসিতে পাঠানো হয়। বিটিআরসি বাংলাদেশ কম্পিউটার সিকিউরিটি ইনসিডেন্ট রেসপন্স টিম (বিডি-সিএসআইআরটি), ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন্স মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) মাধ্যমে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিগত এক বছর ধরে সকল এএনএস, আইএসপি ও সাইবার ক্যাফের আইপি লগ কমপক্ষে ছয় মাস সংরক্ষণ করা হচ্ছে। পাশাপাশি সব সাইবার ক্যাফেতে সিসিটিভি স্থাপন এবং তার রেকর্ড সংরক্ষণ করা হচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। এ বিষয়ে মূল দায়িত্ব পালন করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, এনটিএমসি এবং গোয়েন্দা সংস্থা হতে জঙ্গিবাদ ছড়ানো বিষয়ে ফেসবুক এবং অনলাইন মিডিয়ার সর্বমোট ৩১টি অ্যাকাউন্ট, পেইজ বা লিংক এবং বিভিন্ন নিউজ পোর্টাল, ব্লগ বন্ধ করার জন্য ফেসবুক কর্তৃপক্ষ এবং সব আইআইজিকে অনুরোধ করা হয়। এর মধ্যে ২৫টি অ্যাকাউন্ট, পেইজ বা লিংক এবং বিভিন্ন নিউজ পোর্টাল, ব্লগ বন্ধ করা হয়েছে।
এদিকে রাষ্ট্রায়ত্ত মোবাইল অপারেটর টেলিটক নিয়ে মিডিয়ায় প্রকাশিত নানা অভিযোগ নিয়ে প্রশ্ন করেন সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি আমিনা আহমেদ। উত্তরে প্রতিমন্ত্রী বলেন, টেলিটকের বিরুদ্ধে পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত অভিযোগগুলো দৃষ্টিগোচর হওযা মাত্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে অফিসিয়ালি ও আনঅফিসিয়ালি তদন্ত করা হয়েছে। টেলিটকের বিরুদ্ধে পত্রিকায় প্রকাশিত অধিকাংশ অভিযোগই সঠিক নয়। আর কিছু অভিযোগ পর্যাপ্ত তথ্যের ঘাটতির কারণে অনেক ক্ষেত্রেই বিকৃতভাবে উপস্থাপিত হয়ে থাকে। প্রতিমন্ত্রী জানান, টেলিটকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে এ বিভাগ গত ২০১৫ সালের ২ ডিসেম্বর অফিস আদেশের মাধ্যমে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
এদিকে মোবাইল কলরেট কমানো নিয়ে প্রশ্ন করেন চট্টগ্রাম-১২ আসনের এমপি সামশুল হক চৌধুরী। উত্তরে প্রতিমন্ত্রী জানান, আইটিইউ-এর সহযোগিতায় বিটিআরসি মোবাইল ফোনের কলরেট সর্বনি¤œ ২৫ পয়সা মিনিট হতে সর্বোচ্চ ২ টাকা মিনিট নির্ধারণ করেছে। প্রতিযোগিতামূলক মার্কেটে মোবাইল কোম্পানিগুলো নির্ধারিত এই কলরেটের মধ্যেই তাদের ব্যবসা পরিচালনা করে। প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় এটি যথেষ্ট কম বলে বিবেচিত। ভবিষ্যতে প্রয়োজনের আলোকে মোবাইল ফোনের কলরেট পুনর্নির্ধারণ করা হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন