শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

কাউন্সিলের তারিখ পরিবর্তনের কথা ভাবছে বিএনপি

চেয়ারপার্সন নির্বাচন প্রক্রিয়াও থমকে গেছে

প্রকাশের সময় : ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

আফজাল বারী : দলের ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিলের তারিখ পরিবর্তনের কথা ভাবছে বিএনপি। এখনো কাউন্সিলের স্থান না পাওয়ার এ সিদ্ধান্তের অন্যতম কারণ। তবে আওয়ামী লীগের কাউন্সিলের আগেই তাদের কাউন্সিল সম্পন্ন করতে চায়। আগামী দুই/চার দিনের মধ্যে দলের তরফ থেকে এ বিষয়ে পরিবর্তিত একটি ঘোষণা আসতে পারে। ১৯ মার্চ কাউন্সিল করার ঘোষণা দিয়ে রেখেছে দলটি।
এখনো আবেদনকৃত স্থানের অনুমতি না মেলায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া। তবে তিনি ঘোষণা দিয়েছেন কোথাও স্থান না পেলে প্রয়োজনে তার বাসা কিংবা কার্যালয়েই কাউন্সিল করবেন। এবার কাউন্সিল হবেই।
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ এবং নিবন্ধন বিধিমালা (আরপিও) অনুযায়ী, যথাসময়ে রাজনৈতিক দলগুলোর কাউন্সিলের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। বিএনপির সর্বশেষ পঞ্চম কাউন্সিল হয়েছিল ২০০৯ সালের ৮ ডিসেম্বর, শেরেবাংলা নগরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে। দলীয় গঠনতন্ত্রে তিন বছর পর পর কাউন্সিল অনুষ্ঠানের কথা থাকলেও ছ্য় বছরের বেশি সময় পর দলটির ষষ্ঠ কাউন্সিল হতে যাচ্ছে। এর আগেও প্রস্তুতি নেয়া হয়েছিলো কিন্তু প্রতিকূল পরিবেশের কারণে তা সম্ভব হয়নি। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সর্বশেষ কাউন্সিল হয়েছিল ২০১২ সালের ২৯ ডিসেম্বর। এবার তারা জাতীয় সম্মেলন করতে যাচ্ছে আগামী ২৮ মার্চ।
বিএনপির একাধিক নীতি নির্ধারক ইনকিলাবকে জানান, কাউন্সিলের অন্যতম প্রধান কাজ হচ্ছে-দলের চেয়ারপার্সন ও সিনিয়র ভাইস-চেয়ারম্যান নির্বাচন। একই কারণে সেটিও থমকে আছে। স্থান সংক্রান্ত অনিশ্চয়তার কারণে নির্বাচনের তফসীল ঘোষণা করতে পারছেন না প্রধান নির্বাচন কমিশনার ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার। স্থান নির্ধারণের বিষয় সম্পর্কে জানতে তিনি একাধিক বার বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের সাথে যোগাযোগ রাখছেন। স্থান নির্ধারিত হলেই তফসীল ঘোষণা করবেন তিনি।
এ সংক্রান্ত সকল প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার। তার সঙ্গে নির্বাচন কমিশনার হিসেবে আছেন দলের ভাইস-চেয়ারম্যান হারুন-আল রশিদ। কমিশনের সদস্য সচিবের দায়িত্ব পালন করছেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার আমিনূল হক।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইতোপূর্বে নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন সাবেক বিচারপতি ও দলের ভাইস-চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার টি এইচ খান। তার অধীনেই গত তিনবার বিএনপির চেয়ারপার্সন নির্বাচিত হয়েছেন বেগম খালেদা জিয়া।
দলের চেয়ারপার্সন নির্বাচনের জন্য দলীয় গঠনতন্ত্রসহ বাস্তবতার আলোকে জাতীয় কাউন্সিলের তারিখ ঘোষণার ৭ দিনের মধ্যে নির্বাচনের তফসীল ঘোষণা করা হতো। তফসীল ঘোষণর পর ১৫ দিনের মধ্যে ঘোষিত পদে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ, দাখিল, যাচাই-বাছাইসহ প্রার্থীর কোন অভিযোগ থাকলে তার শুনানী ও নিষ্পত্তির কাজটিও সম্পন্ন করা হতো। এরপরই কাউন্সিলে নির্বাচনের ফলাফল আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করতে হয়। কিন্তু নানামুখী কারণে সে নীতি অনুসরণ করা সম্ভব হচ্ছে না।
গত ২৩ জানুয়ারি দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয় মার্চের তৃতীয় সপ্তাহেই কাউন্সিল করা হবে। পরদিনই সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দলের ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিলের কথা গণমাধ্যমে জানান। তবে সেদিন তিনি তারিখ ঘোষণা করেননি।
গত ৫ ফেব্রুয়ারি দলের যুগ্মমহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহম্মেদ দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে জানান, আগামী ১৯ মার্চ দলের কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে। কাউন্সিলের তারিখ ঘোষণার পর ইতোমধ্যে ১৯ দিন অতিবাহিত হয়ে গেছে ।
এর আগে গত ২০দিন আগেই দলের কাউন্সিল অনুষ্ঠানের জন্য ঢাকা মেট্রোপলিটান পুলিশের কাছে অনুমতি চেয়ে তিনটি আবেদন করে বিএনপি। স্থান হিসেবে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনষ্টিটিউশন মিলনায়তন ব্যবহরের জন্য আবেদন করেছে। গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকা সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ব্যবহারের জন্য অনুমোতি দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। তবে পুলিশের অনুমোদনের শর্ত দিয়েছেন। সে শর্তমতে পুলিশের কাছ থেকে এখনো কোনো অনুমতি পায়নি বিএনপি
জানা গেছে, এবারো কাউন্সিলের জায়গা হিসেবে বেশি অগ্রাধিকার দিচ্ছে বঙ্গবন্ধু আর্ন্তজাতিক সম্মেলন কেন্দ্রকে। এখানে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান এবং রুদ্ধাদ্বার কাউন্সিল অনুষ্ঠানে সুব্যবস্থা রয়েছে। দলের নীতি নির্ধারকদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, তারা বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রটি পাওয়ার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করছে। প্রয়োজনে ঘোষিত তারিখ দুই-তিনদিন পিছিয়ে দেয়ার বিষয়টিও বিবেচনায় রেখেছে।
কারণ ২২ মার্চ ৭৩৯ পৌর নির্বাচনের ভোটের পরও এই কাউন্সিল করতে চায় বলে বিএনপির একাধিক স্থায়ী কমিটির সদস্য আভাস দিয়েছেন। তবে সবকিছু নির্ভর করছে কাউন্সিলের প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক বিএনপি প্রধান বেগম খালেদা জিয়া। গত ১৮ ফেব্রুয়ারি রাতে নিজ কার্যালয়ে প্রস্তুতি কমিটির প্রথম বৈঠক করেছেন-তাতে সার্বিক অবস্থা জেনে নিয়েছেন বেগম জিয়া।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন