রাঙ্গামাটি জেলা সংবাদদাতা : টেন্ডারবাজ রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের কারণে রাঙ্গামাটি গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর অফিস ভবন নির্মাণ কাজের টেন্ডার কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে রাঙ্গামাটি গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সুকমল চাকমা। গতকাল সকাল থেকে রাঙ্গামাটি শহরের গণপূর্ত বিভাগের অফিসে টেন্ডার জমাদানকারীদের টেন্ডার জমা দিতে বাঁধা দেয়ার কারণে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে টেন্ডার কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। গণপূর্ত বিভাগ সূত্রে জানা যায়, রাঙ্গামাটি গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর ৬ তলা বিশিষ্ট ৩ তলা অফিস ভবন নির্মাণের জন্য গত ২২ ডিসেম্বর রাঙ্গামাটি গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর অফিস ভবন নির্মাণ কাজের টেন্ডার আহ্বান করা হয়। টেন্ডার বিজ্ঞপ্তি অনুসারে গতকাল টেন্ডার জমাদানের তারিখ থাকলেও টেন্ডারবাজ রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের কারণে টেন্ডার অনেক ঠিকাদার তাদের টেন্ডার কার্যক্রমের অংশগ্রহণ করতে পারেনি। গতকাল সকাল থেকে কাঠালতলী গণপূর্ত বিভাগের কার্যালয়ের সম্মুখে পাহাড়ায় বসে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। তাদের পছন্দের ঠিকাদার ছাড়া অন্য কারো ঠিকাদারকে তারা কার্যালয়ে প্রবেশ করতে দিবে না বলে জানালে নির্বাহী প্রকৌশলী পুলিশকে খবর দিয়ে পুলিশ এসে ঘটনা নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় প্রমিনেন্ট ইঞ্জিনিয়ারিং ফার্মের প্রতিনিধি আব্দুর রউফ সিডিউল জমা দিতে সক্ষম হয়। তিনি সিডিউল জমা দিলে পাহাড়ায় বসা নেতাকর্মীরা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে।
প্রমিনেন্ট ইঞ্জিনিয়ারিং এর প্রতিনিধি আব্দুর রউফ জানান, তিনি টেন্ডার সিডিউল জমা দিতে আসলে তার সাথে অসৌজন্যমূলক আচারণ শুরু করে। তাকে হামলার করার চেষ্টা চালায় উপস্থিত বেশ কয়েকজন পরে তিনি পুলিশকে বিষয়টি জানালে রাঙ্গামাটি জেলা পুলিশের ডিআই ওয়ান, কোতায়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তাকে নিরাপদে রাঙ্গামাটি ত্যাগ করতে সহযোগিতা করেন। এ সময় আব্দুর রউফ মোটর সাইকেলে কলে চলে যাওয়ার সময় উপস্থিত নেতাকর্মীরা তাকে ধাওয়া করে।
উপস্থিত কয়েকজন নেতাকর্মী জানান, নির্বাহী প্রকৌশলী নিজেই টেন্ডার কাজের সাথে জড়িত রয়েছে। আমরা তার বিরুদ্ধে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।
এই বিষয়ে রাঙ্গামাটি গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সুকমল চাকমার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বিষয়টি আমি কিছুই জানি না। আসলে আমি সরলভাবে টেন্ডারটি করতে চেয়েছিলাম। তিনি বলেন, আমার আগে অনেক প্রকৌশলী এসেছে কেউ কিন্তু অফিস ভবন নির্মাণের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করেনি। আমি দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে অফিস ভবন নির্মাণের জন্য কাজ শুরু করি এবং সফল হই। তারই ভিত্তিতে টেন্ডার কল করি এবং আজ দরপত্র জমাদানের শেষ দিন ছিলো। আমি জানতাম না এখানেও এই অবস্থায় হয় তা আমি পুলিশকে খবর দেইনি। প্রয়োজন মতো ঠিকাদারা সিডিউল জমা দিবে। যার যোগ্যতা থাকবে সেই টেন্ডার পাবে। তিনি বলেন, আমি বাইরে একটি মিটিংয়ে ছিলাম। অফিস থেকে বলে ছেলেরা অফিস ঘিরে রেখেছে ঝামেলা হতে পারে। তাই কিন্তু অনাকাক্সিক্ষত কিছু ঘটনার কারণে আমাকে পুলিশকে খবর দিতে হয়েছে। তিনি বলেন, আমাকে ঢাকা থেকে ফোন করা হয়েছে। আমি ঢাকাকে জানিয়ে দিয়েছি এখানে আমার কোন হাত নেই। প্রয়োজনে আমাকে আমাকে এখান থেকে নিয়ে যা। তিনি বলেন, আমি কোন অন্যায়কে প্রশ্রয় দিই না এবং দিবো না। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, আগামী ১ ফেব্রুয়ারী ও একটি টেন্ডার রয়েছে এটা কিভাবে সামলাবো আমি চিন্তা করছি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন