স্টাফ রিপোর্টার : বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, দুইজন সম্পাদকের বিরুদ্ধে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে অনেক বক্তব্য শুনলাম। ওই সময়ে আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ মারাত্মক কথা বলেছেন। মাহফুজ আনাম ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন, ভুল স্বীকার করেছেন। অন্যরা তো তা-ও করেননি। কৈ তাদের বিরুদ্ধে তো ব্যবস্থা নেয়ার কথা বললেন না প্রধানমন্ত্রী।
সম্পাদকদের বিরুদ্ধে বলাটা তাদের (আ’লীগ) পুরনো অভ্যাস, বাকশালী অভ্যাস। সকল সংবাদপত্র বন্ধ করে দিয়েছিলেন। আবারো তারা বন্ধ করে দেয়ার পায়তারা করছেন। প্রতিবেশী দেশের সাথে পানি সমস্যা রয়েছে কিন্তু প্রধানমন্ত্রী ও পানিমন্ত্রীর মুখে আমাদের পানি সমস্যার কথা শুনিনা। সরকারের বিরুদ্ধে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবানও জানান তিনি।
গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে স্বাধীনতা ফোরামের উদ্যোগে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক ভাষা দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রসঙ্গ টেনে সাবেক এই পানি সম্পদ মন্ত্রী বলেন, দেশে আজ গণতন্ত্র নেই। পরমত সহিষ্ণুতা নেই, আইনের শাসন নেই। আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে জাতিসংঘের পানি প্যানেলে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এটি কী নিজের দেশের পানি প্রতিবেশী রাষ্ট্রকে অবাধে দিয়ে দেয়ার জন্যে? নিজের কৃষককে বঞ্চিত করে প্রতিবেশী দেশের কৃষককে সমৃদ্ধ করার জন্যে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে সঙ্গে প্রতিবেশী দেশের কোনো শত্রুতা নেই, সমস্যা রয়েছে। প্রধান সমস্যা পানি সমস্যা। কিন্তু এদেশে প্রধানমন্ত্রী ও পানিমন্ত্রীর মুখে আমাদের পানি সমস্যার কথা শুনিনা। পদ্মা নদীতে, তিস্তা নদীতে কেনো পানি নেই। টিপাই মুখ প্রকল্প বন্ধ কর।
হাফিজ উদ্দিন বলেন, গতকালকেই দুইজন সম্পাদকের বিরুদ্ধে অনেক বক্তব্য শুনলাম মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে। সব সংবাদপত্রেই সংবাদগুলো প্রকাশিত হয়েছে। একমাত্র মুক্তিযোদ্ধা মাহফুজ আনাম তিনি ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন, ভুল স্বীকার করেছেন। অন্যরা তো করেননি। সম্পাদকদের বিরুদ্ধে বলেছেন কারণ এটি তাদের পুরনো অভ্যাস, বাকশালী অভ্যাস। সকল সংবাদপত্র বন্ধ করে দিয়েছিলেন। আবারো তারা বন্ধ করে দেয়ার পায়তারা করছেন। এটা কী ভাষা আন্দোলনে চেতনা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। দেশে গণতন্ত্র থাকবে না।
মেজর (অব.) হাফিজ প্রশ্ন রেখে বলেন, ওই সময়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুুল জলিল (মরহুম), ওবায়দুল কাদের (প্রেসিডিয়াম সদস্য)সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ মারাত্মক কথা বলেছেন- কৈ তাদের বিরুদ্ধে তো ব্যবস্থা নেয়ার কথা তো বললেন না প্রধানমন্ত্রী।
একুশের চেতনা হারিয়ে যাচ্ছে অভিযোগ করে হাফিজ বলেন, এই অনুষ্ঠানে আমরা যারা আছি সবাই রিমান্ডে গেছি কিন্তু নারায়ানগঞ্জে ৭ খুনের জন্য অভিযুক্ত নুর হোসেনকেও তো রিমান্ডে নেয়া হলো না। এটা কি ভাষা আন্দোলনের চেতনা ।
তিনি বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিএনপি দলীয় প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারেনি। ১৯৭৩ সালে সাধারণ নির্বাচনে ড. রাজার উদ্দিন আহমেদকে তিনবারের সংসদ সদস্যকে মনোনয়নপত্র জমা দিতে দেয়নি আওয়ামী লীগ। সেই ধারাবাহিকতায় ডাকসু নির্বাচনে ব্যালট বাক্স হাইজেক করেছে ’৭৩ সালে। সেই ধারাবাহিকতায় একই ধারাবাহিতায় বার বার ভোটাধিকার ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে। যার সর্বশেষ উদাহরণ বিগত দুইটি সাধারণ নির্বাচন। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি কী নির্বাচন হয়েছে? নির্বাচন কমিশন বলেছে শতকরা ৪০ জন ভোট দিয়েছে। এই মিথ্যাচারের দেশ- এটা কী একুশের চেতনা।
মুক্তিযোদ্ধা হাফিজ উদ্দিন বলেন, আজকের প্রজন্ম কী ভাষা শহীদ আব্দুুল মতিন, অলি আহাদ, গাজীউল হক, কাজী মাহবুব হোসেন নাম জানে। তারা আওয়ামী মাস্তানদের নাম জানে, যাদের নাম বিল বোর্ডে শোভা পায়। যাদের থাকার কথা ছিলো জেল খানায়। তাদের বন্ধনা শুনি, রাজপথে তাদের ছবি দেখি। বইপত্রে ভাষা শহীদদের প্রচারণা নেই আছে শুধু আওয়ামী লীগের নেতাদের।
সংগঠনের সভাপতি আবু নাসের মো. রহমাতুল্লাহর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে জাগপা সভাপতি শফিউল আলম প্রধান, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এডভোকেট আহমেদ আজম খান, সহ-স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক এ বি এম মোশাররফ হোসেন, কল্যাণ পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান শাহিদুর রহমান তামান্না, মাওলানা শোয়েব আহমেদ প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন