বিশেষ সংবাদদাতা : বিদ্যুৎ উৎপাদনে সরকারের মহাপরিকল্পনার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ২০৪১ সালে আমরা কি পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদন করবো, সে পরিকল্পনা আমাদের রয়েছে। আমরা ২০১৬ সালে ১৬ হাজার মেগাওয়াট, ২০২১ সালে ২৪ হাজার মেগাওয়াট, ২০৩০ সালে ৪০ হাজার এবং ২০৪১ সালে ৬০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছি। দোয়া করবেন, এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা যায়। প্রধানমন্ত্রী গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে গণভবনে সমগ্র দেশের বিভিন্ন স্থানে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে একযোগে ৫১টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন।
প্রতিটি ঘরে বিদ্যুতের আলো পৌঁছে দেয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করে তিনি বলেন, ইতোমধ্যে আমরা ১৪ হাজার ৫শ’ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা অর্জন করেছি। ১শটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করে এরই মধ্যে ৭৬ শতাংশ মানুষের কাছে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিতে পেরেছি। যেসব এলাকায় গ্রিডলাইন নেই, সেখানে সোলার প্যানেলের মাধ্যমে বিদ্যুতায়নের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী গোপালগঞ্জ জেলার কোটালীপাড়ায় ৯০টি গ্রামে ৬ হাজার পরিবারের মধ্যে বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদান কার্যক্রম উদ্বোধন করেন।
এরপর চট্টগ্রামের পটিয়ার ১০৮ মেগাওয়াট ইসিপিভি চট্টগ্রাম লিমিটেড, কুমিল্লার জাঙ্গালিয়ার ৫২ দশমিক ২ মেগাওয়াট লাকধানাভি বাংলা পাওয়ার লি., গাজীপুরের কড্ডার ১৫০ মেগাওয়াট বিপিডিবি-আরপিসিএল পাওয়ারজেন লি. এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জের ২২৫ মেগাওয়াট সিসিপিপি (এসটি ইউনিট) বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উদ্বোধন করেন।
ঢাকা-চট্টগ্রাম এক্সপ্রেস ট্রেন সার্ভিস চালু করবে সরকার :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ঢাকা এবং চট্টগ্রাম এই দুটি মহানগরীর যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে ঢাকা-চট্টগ্রাম এক্সপ্রেস ট্রেন সার্ভিস চালু করার পরিকল্পনা তাঁর সরকারের রয়েছে।
সারাদেশকে রেল নেটওর্য়াকের আওতায় আনার পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বরিশাল কখনো রেল দেখেনি, সেখানেও রেল যাবে। টাঙ্গাইলবাসীকেও রেল সেবার আওতায় আনা হবে। পটুয়াখালী, পায়রা বন্দর পর্যন্ত রেল নেয়া হবে। এ বিষয়ে কার্যক্রম শুরুর জন্য তিনি রেলমন্ত্রীকে নির্দেশ দেন।
রেলের গুরুত্ব তুলে ধরে ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রেলে অল্প খরচে চলাচল ও মালামাল পরিবহন করা যায়। এজন্য সরকার রেলের ওপর অধিক গুরুত্ব দিচ্ছে। তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াত আমলে রেল হারিয়ে যেতে বসেছিল এবং মৃতপ্রায় হয়ে গিয়েছিল। রেল যোগাযোগ সম্প্রসারণে প্রধানমন্ত্রী সিগনালিং ব্যবস্থাসহ টঙ্গী-ভৈরববাজার ডাবল লাইন নির্মাণ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় নবনির্মিত ২য় রেললাইনে ট্রেন চলাচলের উদ্বোধন করেন।
বাংলাদেশের প্রত্যন্ত এলাকা পর্যন্ত সড়ক যোগাযোগের আওতায় আনতে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সড়ক যোগাযোগের ওপর গুরুত্ব দিয়েছি। আওয়ামী লীগ সরকার যতো সেতু ও সড়ক নির্মাণ করেছে আর কেউ তা করেনি। এ সময় পদ্মা সেতু ছাড়াই তাঁর সরকারের সময়ে ৫৩৭টি সড়ক সেতু নির্মাণ হয়েছে।
ঢাকা থেকে কুয়াকাটা পর্যন্ত সড়ক যোগাযোগ স্থাপনে বিভিন্ন উদ্যোগের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কুয়াকাটা এমন একটা জায়গা যেখান থেকে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখা যায়। যেহেতু আমি সেখানে বহু আগে গিয়েছিলাম, সে সময়েই এটিকে একটি উন্নত পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলার চিন্তা করি।
প্রধানমন্ত্রী উন্নত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পসমূহ দ্রুতসম্পন্ন করার জন্য সকল ভেদাভেদ ভুলে দলের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীদেরকে একযোগে কাজ করার এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ স্থানীয় জনগণকে সুষ্ঠুভাবে প্রকল্প সম্পাদনে সহযোগিতা করার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, আমরা যেসব প্রকল্প প্রণয়ন করেছি এবং বাস্তবায়ন করছি সেগুলো যেন দ্রুত বাস্তবায়ন করার জন্য আমি দেশবাসীসহ সকলের দোয়া চাই, সহযোগিতা চাই। যেসব এলাকায় কাজ হবে সে এলকাবাসীর সহযোগিতা চাই।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নেই তার সরকার কাজ করে যাচ্ছে। তিনি ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সাল নাগাদ সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।
তিনি আরও বলেন, যত দ্রুতত এই মাতৃভূমিকে আমরা উন্নত করতে পারব, ততই আমরা বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে চলতে পারবো।
গণভবনে মূল অনুষ্ঠানস্থলে যোগাযোগ মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ ভিডিও কনফারেন্সটি পরিচালনা এ ছাড়াও, তিনি সড়ক যোগাযোগ সম্প্রসারণে পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটার সঙ্গে রাজধানীর সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপনের অংশ হিসেবে পটুয়াখালী জেলায় পটুয়াখালী-কুয়াকাটা মহাসড়কে নবনির্মিত শেখ কামাল সেতু ও শেখ জামাল সেতু উদ্বোধন এবং সিলেট সড়ক জোনে ইস্টার্ন বাংলাদেশ ব্রিজ ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্টের (ইবিবিআইপি) আওতায় নবনির্মিত ১৬টি সেতু একযোগে উদ্বোধন করেন।
এরপর প্রধানমন্ত্রী নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন স্থাপনার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ও উদ্বোধনসহ নারায়ণগঞ্জ শহরের পানি সরবরাহ ব্যবস্থার সম্প্রসারণ ও পুনর্বাসন প্রকল্পের আওতায় নির্মিত সোনাকান্দা পানি শোধনাগারেরও উদ্বোধন করেন। এ সময় শেখ হাসিনা বলেন, পানি ব্যবহারে মিতব্যয়ী হবেন। পানি শোধন করতে অনেক খরচ হয়। এছাড়াও শেখ হাসিনা এদিন জয়পুরহাট জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ভবনসহ এ জেলার বিভিন্ন স্থাপনার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ও উদ্বোধন করেন।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের লক্ষ্য বাংলাদেশে কোন দরিদ্র থাকবে না। একটা মানুষও গৃহহীন থাকবে না, একটা মানুষও না খেয়ে মরবে না, বিনা চিকিৎসায় মারা যাবে না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রত্যেকটা মানুষের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং তাদের আবাসন ব্যবস্থা থেকে শুরু করে শিক্ষা এবং কর্মসংস্থানে প্রয়োজনীয় ট্রেনিং প্রদানে আমাদের সরকার কাজ করে যাচ্ছে।
পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের বিয়োগান্তক অধ্যায় স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাঙালির জীবনে যদি বিয়োগান্তক পঁচাত্তর না আসতো, জাতিরজনককে যদি হত্যা করা না হতো, তাহলে বাংলাদেশ অনেক আগেই উন্নত হয়ে যেত। জাতির পিতার সেই আদর্শ বুকে নিয়েই আমরা দেশের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছি।
স্বাধীনতার সুফল বাংলার প্রতিটি ঘরে ঘরে পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্য নিয়ে তাঁর সরকার কাজ করে যাচ্ছে। উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, মানুষের জন্য যে কিছু করতে পারছি, এটুকুই কেবল সান্ত¦না। গোপালগঞ্জের প্রকল্পসমূহের উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী তাঁদেরকে প্রধানমন্ত্রীর মা-বাবা-ভাইসহ স্বজন হারানো স্বজন বলে আখ্যায়িত করেন।
তিনি বলেন, আমার নির্বাচনী এলাকা গোপালগঞ্জ-কোটালীপাড়ার মানুষদের কাছে আমি চিরকৃতজ্ঞ। সব হারাবার পর তারাই আমাকে বুকে টেনে নেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের সান্ত¦না, আমরা মানুষের জন্য কিছু করতে পেরেছি।
নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করতে সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকা-ের কথা তুলে ধরে আওয়ামী লীগ সভাপতি, প্রতিটি নগরকে উন্নত করতে চাই। মানুষের জীবন-মান উন্নত করতে চাই।
জনগণকে এ সময় ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনগণ আমাদের ওপর আস্থা রেখেছে, আমাদের কাজ করার সুযোগ দিয়েছে। এজন্যই আমরা বিভিন্ন উন্নয়ন ও মানবকল্যাণে কাজ করতে পারছি।
প্রকল্পগুলো উদ্বোধনের পর প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন পয়েন্টে আয়োজিত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ব্যক্তিবর্গ এবং স্থানীয় জনগণের সঙ্গে মতবিনিময় করেন এবং ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা প্রকল্পগুলোর কাজ দ্রুত শুরুর তাগিদ দেন।
নারায়ণগঞ্জ থেকে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী, ভৈরব থেকে রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক ও বিসিবি’র সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন এমপি, কুমিল্লা থেকে পরিকল্পনামন্ত্রী আহম মুস্তফা কামাল, চট্টগ্রাম থেকে সিটি করপোরেশনের মেয়র আজম নাসির উদ্দিন, সাবেক মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী, পটুয়াখালীতে জাতীয় সংসদের চীফ হুইপ আ স ম ফিরোজ এমপি, জাতীয় পার্টির মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার এমপি ছাড়াও সংশ্লিষ্ট জেলার আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতা, সংসদ সদস্য, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, জেলা প্রশাসকসহ সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে গণভবনের সঙ্গে সংযুক্ত ছিলেন।
শেখ কামাল সেতু ও শেখ জামাল সেতু উদ্বোধন
বরিশাল ব্যুরো : প্রধানমন্ত্রীর টেলি কনফারেন্সের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের মধ্যে দিয়ে দক্ষিণাঞ্চলবাসীর বহু কাক্সিক্ষত ‘শেখ কামাল সেতু’ ও ‘শেখ জামাল সেতু’ দুটি গতকাল যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হল। জাপান সরকারের ঋণ মওকুফ করণ কর্মসূচী ও বাংলাদেশ সরকারের যৌথ অর্থায়নে প্রায় পৌনে ২শ’ কোটি টাকা ব্যয়ে বরিশাল-পটুয়াখালীÑকুয়াকাটা মহাসড়কের কলাপাড়াÑকুয়াকাটা অংশের ২২কিলোমিটার সড়কে ৩টি সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হয় গত আগস্ট থেকে নভেম্বরের শেষভাগে। এর মধ্যে আরলীপুর/মহীপুরে ‘শেখ রাসেল সেত’ুটি গত ২০আগষ্ট প্রধানমন্ত্রী টেলি কনফারেন্সের মাধ্যমে উদ্বোধনের পরে যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হয়।
কিšুÍ গত নভেম্বরের শেষ ভাগে কলাপাড়া ও হাজীপুরের সেতু দুটির নির্মান কাজ শেষ হলেও শুধুমাত্র আনুষ্ঠানিক উদ্বোাধনের অপেক্ষায় তা যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হয়নি এতদিন। ইতোমধ্যে কলাপাড়া ফেরি ঘাটে দু দফার দুর্ঘটনায় ৩ জনের প্রাণহানিও ঘটেছে।
তবে দীর্ঘ কালক্ষেপণের পরে গতকাল কলাপাড়া ও হাজীপুরে শেখ কামাল ও শেখ জামাল সেতু দুটি উদ্বোধনের মধ্যে দিয়ে পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটায় পর্যটকদের যাতায়াতে দীর্ঘ বিড়ম্বনার অবসান হল। এখন বরিশাল থেকে ১০৮কিলোমিটার দূরে কুয়াকাটা সাগর সৈকতে পৌঁছতে শুধুমাত্র লেবুখালীর পায়রা নদীতে ফেরি পারাপারের বিড়ম্বনা থাকছে। তবে কুয়েত সরকারের অর্থায়নে লেবুখালী সেতু নির্মাণ প্রকল্পের সর্বনি¤œ দরপ্রস্তাব গত বুধবার ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রী সভা কমিটিতে অনমোদিত হলেও প্রকল্পটির বাড়তি অর্থের সংস্থান হয়নি এখনো । ২০১২সালে কুয়েত সরকারের সাথে প্রায় সাড়ে ৪শ’ কোটি টাকা প্রকল্প ব্যায় ধরে লেবুখালী সেতুর জন্য ঋণ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। কিন্তু দীর্ঘ কালক্ষেপণের পরে গত সেপ্টেম্বরে প্রাক-যোগ্যতা সম্পন্ন নির্মাণ প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে সর্ব নি¤œ দর প্রস্তাব পাওয়া গেছে ১ হাজার ৫০ কোটি টাকার মত। সাড়ে ৪শ কোটি টাকার প্রকল্প ব্যায়ের ৮২% অর্থ কুয়েত সরকারের সহজ শর্তে ঋন প্রদানের কথা থাকলেও এখন ১হাজার ৫০কোটি টাকার দর প্রস্তাবের অবশিষ্ট টাকার সংস্থান না হওয়ায় নির্মাণ প্রতিষ্ঠানের সাথে অপতত কোন চুক্তি সম্ভব হচ্ছে না। ফলে ঐ সেতুটি নির্মানে অর্থ সংস্থানে জটিলতা বড় অন্তরায় হয়ে উঠছে। তবে কুয়ত উন্নয়ন তহবিল থেকে বাড়তি অর্থ সংগহে বহিঃসম্পদ বিভাগ কাজ করছ বলে জানা গেছে। ২০১২-এর মে মাসে মূল প্রকল্প-প্রস্তাবটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি-একনেক’এর চুড়ান্ত অনুমোদন লাভ করেছিল।
ভৈরব-টঙ্গী ডাবল রেললাইন উদ্বোধন
ভৈরব উপজেলা সংবাদদাতা : টঙ্গী থেকে ভৈরববাজার জংশন স্টেশন পর্যন্ত সিগনালিং সহ ৬৪ কিলোমিটার ডাবল রেললাইন প্রকল্পের নির্মাণ কাজ শেষে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে গতকাল বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শুভ উদ্বোধন করলেন আওয়ামীলীগ সভানেত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এসময় ভৈরব রেলওয়ে স্টেশন জংশনের ২ং ফ্লাটফর্মে আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত রেলপথ মন্ত্রী মজিুবল হক, ভৈরব-কুলিয়ারচরের সংসদ সদস্য ও বিসিবি সভাপতি আলহাজ্ব নাজমুল হাসান পাপন ও উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি আলহাজ্ব মো: সায়দুল্লাহ মিয়ার সঙ্গে ভিডিও কলের মাধ্যমে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যান্য অতিথিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ রেলওয়ে (পূর্ব) মহাব্যবস্থাপক মো. মকবুল আহম্মদ, রেলপথ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব, কিশোরগঞ্জ জেলা প্রশাসক জিএম জাফরউল্লাহ, ভৈরব বাজার-টঙ্গী ডাবল লাইন প্রজেক্টের জেনারেল ম্যানেজার এন্ড প্রজেক্ট ডাইরেক্টর প্রকৌশলী এস কে চক্রবর্তী, অতিরিক্ত ডিআইজি, কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুস্তাইন, এএসপি মৃত্যুঞ্জয়ী দে সজল, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) চিত্রা শিকারী, ভৈরব পৌরসভার মেয়র এড. ফকরুল আলম আক্কাছ, প্রয়াত রাষ্টপতি আলহাজ্ব মো: জিল্লুর রহমান এর একান্ত সচিব-১ লুৎফর রহমান, একান্ত সচিব-৩ সাখাওয়াত হোসেন মোল্লা প্রমুখ। এসময় ভৈরববাজার রেলওয়ে স্টেশনে ট্রেনের আসন সংখ্যা বৃদ্ধি, ট্রেনের যাত্রাবিরতি ও ভৈরব থেকে নতুন ট্রেনচালু করার জন্য ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অনুরোধ জানান ভৈরব উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি আলহাজ্ব সায়দুল্লাহ মিয়া।
কোটালীপাড়ায় ৬ হাজার পরিবারের জন্য বিদ্যুৎ সুবিধা উদ্বোধন
গোপালগঞ্জ জেলা সংবাদদাতা : প্রথমে প্রধানমন্ত্রী নিজ নির্বাচনী এলাকা গোপালগঞ্জ জেলার কোটালীপাড়া উপজেলায় ৯০টি গ্রামের ৬ হাজার পরিবারকে বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদান কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি কোটালীপাড়ার বাসীর কাছে কৃতজ্ঞ। সব এমপিদের নিজের এলাকা দেখতে হয়। আমি কোটালীপাড়ার এমপি। কিন্তু আমাকে সারা বাংলাদেশের ৩শ’ আসন দেখতে হয়। তারপরও আমি কোটালীপাড়ার মানুষের সহযোগিতা পাই। আমি বাবা মা ভাই সব হারিয়েছি। এলাকাবাসী আমার বাবা মা ভাই।
এ অনুষ্ঠানে গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোঃ খলিলুর রহমান, গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব আলী খান, কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এস.এম হুমায়ূন কবীর বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে গোপালগঞ্জ জেলা, কোটালীপাড়া, কাশিয়ানী উপজেলা আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দ, পুলিশ, বিদ্যুৎ বিভাগ, প্রকৌশল অধিদপ্তর ও প্রশাসনের পদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোঃ খলিলুর রহমান প্রধানমন্ত্রীকে জানান কোটালীপাড়া উপজেলার ১৯৭টি গ্রামের ৪৮ হাজার ০২৯টি পরিবার রয়েছে। এর মধ্যে ৪৪ হাজার ৯৯৯টি পরিবারে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হয়েছে। বাকী রয়েছে ৩৫৩০টি পরিবার। এ উপজেলার ৯২ শতাংশ এলাকা বিদ্যুৎ সংযোগের আওতায় এসেছে। চলতি বছরের জুনের মধ্যেই বাকী ৮% এলাকা বিদ্যুৎ সংযোগের আওতায় আসবে। গোপালগঞ্জ জেলার ৮৩% এলাকা বিদ্যুৎ সংযোগের আওতায় এসেছে। ২০১৮ সালের মধ্যে গোটা জেলা শতভাগ বিদ্যুৎ সংযোগের আওতায় আসবে। ইতিমধ্যে আমরা সাড়ে ৩ হাজার বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী সোলার প্যানেল স্থাপন করেছি বলেও জানান জেলা প্রশাসক।
পটিয়া ১০৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উদ্বোধন
চট্টগ্রাম ব্যুরো : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল সকাল সাড়ে ১০টায় গণভবন থেকে সরাসরি ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে চট্টগ্রামের পটিয়াস্থ শিকলবাহায় ১০৮ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুৎ কেন্দ্র উদ্বোধন করেছেন। একই সাথে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় ৬ হাজার নতুন বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদান কার্যক্রম, গাজীপুরের কড্ডায় ১৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র, আশুগঞ্জ ২২৫ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎ কেন্দ্র (এসটি ইউনিট) এবং কুমিল্লার জাঙ্গালিয়া ৫২.২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রের শুভ উদ্বোধন করেন। প্রধানমন্ত্রীর সরাসরি ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে চট্টগ্রাম ১০৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র উদ্বোধনকালে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে বসে চট্টগ্রামের উন্নয়ন নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সাথে সরাসরি শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন, সাবেক মেয়র নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী ও জেলা প্রশাসক মেজবাহ উদ্দিন।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো. রুহুল আমিন, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোছলেম উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. নুরুল আলম চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ প্রশাসক এম এ সালাম, চিটাগাং চেম্বারের প্রেসিডেন্ট মাহাবুবুল আলম, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি মাহাবুবুর রহমান, সিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার দেবদাস ভট্টাচার্য, জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শহীদুল্লাহ প্রমুখ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন