স্টাফ রিপোর্টার : পিলখানা ট্র্যাজেডির সপ্তম বার্ষিকী ছিল গতকাল বৃহস্পতিবার। এ উপলক্ষে গতকাল সকাল ৯টায় বনানী কবরস্থানে শহীদ সেনা কর্মকর্তাদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন ও মোনাজাতের আয়োজন করা হয়। নিহত সেনা কর্মকর্তাদের স্মরণে সামরিক আনুষ্ঠানিকতাও ছিল। শুরুতে প্রেসিডেন্টর পক্ষে তার সামরিক সচিব মেজর জেনারেল আবুল হোসেন, প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে তার সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মিয়া মোহাম্মদ জয়নুল আবেদীন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পক্ষে সিনিয়র সচিব মো. মোজাম্মেল হক খান পুস্পস্তবক অর্পণ করেন। এরপর সেনাপ্রধান জেনারেল আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হক, বিমানবাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল আবু এসরার, নৌবাহিনীর প্রধান ভাইস অ্যাডমিরাল নিজাম উদ্দিন আহমেদ এবং বর্ডার গার্ডের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ পুস্পস্তবক অর্পণ করেন।
বনানী কবরস্থানে বিডিআর বিদ্রোহে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এসে বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ বলেন, বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় যারা সাজা পেয়েছেন, তারাই মূলত এর সঙ্গে জড়িত। একটু ধীরগতিতে চললেও বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে আমি সন্তুষ্ট। তিনি আরো বলেন, বিভিন্ন মাধ্যমে যথেষ্ট চেষ্টা করা হয়েছে এর নেপথ্যে আর কেউ আছে কিনা, তা খুঁজে বের করার। আমার মনে হয় না যতটুকু উদঘাটিত হয়েছে তার বাইরে আর কিছু আছে।
বনানী সামরিক কবরস্থানে জড়ো হয়েছিলেন পিলখানার বিদ্রোহে নিহত অন্য সেনাসদস্যের পরিবারও। শোকে, শ্রদ্ধায় ও ভালোবাসায় স্মরণ করেন না-ফেরার দেশে চলে যাওয়া প্রিয়জনদের। শহীদ পরিবারের সদস্যরা নিহত স্বজনদের কবরের পাশে দাঁড়িয়ে দোয়া পাঠ করেন। এ সময় সেখানকার পরিবেশ ভারী হয়ে ওঠে। কেউ মোনাজাতের সময় কাঁদছিলেন, কেউবা দাঁড়িয়ে ছিলেন শোকে পাথর হয়ে। তাদের কেউ হারিয়েছেন স্বামী, কেউ সন্তান, কেউ বাবা, কেউবা ভাইকে।
বনানী কবরস্থানে শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে এসে শহীদ মেজর মুনীরুল ইসলাম সরকারের বাবা মফিজুল ইসলাম সরকার বলেন, আমরা বিডিআর বিদ্রোহের সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি। আমার ছেলেকে বিনা অপরাধে হত্যা করা হয়েছে। বিচার এখনও পাইনি। শহীদ কর্নেল গুলজার উদ্দিন আহমেদের বোন দিলরুবা খাতুন বলেন, বিচারকাজ দ্রুত শেষ করা দরকার। এর নেপথ্যে কারা আছে তাও জানা দরকার।
উল্লেখ্য, বিগত ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি বিডিআরের (বর্তমানে বিজিবি-বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ) বিপথগামী সদস্যরা পিলখানায় নারকীয় হত্যাকা- চালায়। এই দু’দিনে তারা ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জনকে নৃশংসভাবে হত্যা করে। বিদ্রোহী সদস্যদের হাতে পরিবারের সদস্যরাসহ নিহত হন বিডিআর মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদও।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন