স্টাফ রিপোর্টার : গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির ঘোষণাকে ‘গণবিরোধী’ আখ্যায়িত করে এ থেকে সরে আসতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এ আহ্বান জানান দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি অভিযোগ করেন, জনগণকে জিম্মি করে বেপরোয়া লুটপাটের জন্য গ্যাসের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। জনগণ এ সিদ্ধান্ত মানবে না।
তিনি বলেন, জনগণকে জিম্মি করে রাজস্ব আয় বাড়ানোর লক্ষ্যে সরকারের নেয়া এ সিদ্ধান্ত অনৈতিক, অযৌক্তিক ও গণবিরোধী। দেশের জনগণ সরকারের এ গণবিরোধী সিদ্ধান্ত কিছুতেই মেনে নেবে না। আমরা অবিলম্বে এ সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানাচ্ছি।
গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির ফলে দেশের সাধারণ মানুষ নানামুখী সমস্যায় পড়বে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এতে উৎপাদন খরচ বাড়বে, বেড়ে যাবে জীবনযাত্রার খরচ, গণপরিবহন ভাড়া। উচ্চমূল্যে গ্যাসের দাম পরিশোধ করতে গিয়ে বন্ধ হয়ে যেতে পারে শিল্প-কারখানা।
তিনি বলেন, সরকারের এ গণবিরোধী সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হলে শিল্প খাত দারুণভাবে ধাক্কা খাবে। আমাদের গার্মেন্ট খাত ভারত ও চীনের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারবে না। লাখ লাখ শ্রমিক বেকার হয়ে পড়বে। যার নেতিবাচক প্রভাব শিল্প খাতের অর্থনৈতিক নিরাপত্তা বিঘিœত হতে বাধ্য। সুতরাং এই মুহূর্তে গ্যাসের দাম বাড়ানো যাবে না।
দাম বাড়ানোর পরিবর্তে গ্যাসের সিস্টেম লস কমানো ও অপচয় রোধের দিক নজর দেয়ার আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, জাইকার রিপোর্ট অনুযায়ী প্রতি টন সার উৎপাদনে গ্যাস খরচ হওয়ার কথা ২৫ হাজার ঘনফুট। আমাদের দেশে বেসরকারি খাতে প্রতি টন সার উৎপাদনে গ্যাস খরচ হয় ৪০ হাজার ঘনফুট। অন্যদিকে সরকারি খাতে প্রতি টন সার উৎপাদনে গ্যাস খরচ হয় ৪০-৫০ হাজার ঘনফুট গ্যাস। এই বল্গাহীন অপচয় রোধ না করে দফায় দফায় গ্যাসের দাম বাড়িয়ে সাধারণ মানুষের ঘাড়ে খরচের বোঝা চাপিয়ে দেয়া নিঃসন্দেহে গণবিরোধী সিদ্ধান্ত। সরকারের এ সিদ্ধান্ত অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আ ন হ আখতার হোসেন ও ইসমাইল জবিউল্লাহ।
গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে বিএনপি কোনো কর্মসূচি দেবে কি না, সে বিষয়ে দলীয় ফোরামে আলোচনার পর সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন মির্জা ফখরুল।
বিভিন্ন দল ও সংগঠনের বিরোধিতা সত্ত্বেও বৃহস্পতিবার গ্যাসের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। মার্চ ও জুন মাসে দুই ধাপে গ্যাসের বর্ধিত মূল্য কার্যকর হবে। আবাসিক গ্রাহকদের আগামী ১ মার্চ থেকে এক চুলার জন্য মাসে ৭৫০ টাকা এবং দুই চুলার জন্য ৮০০ টাকা দিতে হবে। দ্বিতীয় ধাপে ১ জুন থেকে এক চুলার জন্য মাসিক বিল ৯০০ টাকা এবং দুই চুলার জন্য ৯৫০ টাকা হবে। বর্তমানে গ্যাসের দাম এক চুলা ৬০০ টাকা এবং দুই চুলা ৬৫০ টাকা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন