ইনকিলাব ডেস্ক : কানাডার কোনো আদালত একজন ব্যক্তির রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনার পেছনে কী রায় দিল, সেটাতে বাংলাদেশের রাজনৈতিক কোনো পরিবর্তন হয় না। এ রায়ের সঙ্গে বিএনপির কোনো সম্পর্ক থাকতে পারে না। কানাডার সরকার কখনোই বিএনপিকে কোনো সন্ত্রাসী সংগঠন মনে করে না।
গতকাল শুক্রবার বিকেলে শহরের ঠাকুরগাঁও শহরের একটি কমিউনিটি সেন্টারে বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য যত রকমের মিথ্যাচার করা দরকার, তা করছে। কানাডার কোনো একটি আদালত নাকি বিএনপিকে একটি সন্ত্রাসী দল হিসেবে রায় দিয়েছে। এ নিয়ে আওয়ামী লীগ মহাউল্লসিত। সংসদে তারা বলছে, বিএনপিকে সন্ত্রাসী দল হিসেবে ঘোষণা দিয়ে নিবন্ধন বাতিল করা হোক। আর একদিকে বলে, বিএনপির নাকি শক্তি নাই। তাহলে বিএনপির নিবন্ধন বাতিল করতে চাও কেন। কারণ তোমরা জানো বিএনপি হচ্ছে একমাত্র রাজনৈতিক দল, যারা বাংলাদেশের জনগণের আশা-আকাক্সক্ষার প্রতিফলন ঘটায়। কানাডার আদালতে কোনো একজন ব্যক্তির রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনার পেছনে কী রায় দিল, সেটাতে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিবর্তন হয় না।’
আ’লীগ সন্ত্রাসের দল
বিএনপির মহাসচিব আরও বলেন, ‘বিএনপি কখনোই সন্ত্রাসে বিশ্বাস করে নাই। সন্ত্রাস যদি কেউ করে থাকে, সন্ত্রাস যদি কেউ শিখিয়ে থাকে, সেটা আওয়ামী লীগ করেছে। গাইবান্ধায় মনজরুল ইসলাম লিটন খুন হলেন। আওয়ামী লীগ বলতে লাগল এ ঘটনায় বিএনপি-জামায়াত জড়িত। এখন এ ঘটনায় তাদের দোসর জাতীয় পার্টির সাবেক এক সাংসদ গ্রেফতার হয়েছেন। এতে প্রমাণ হচ্ছে তারা ও তাদের দোসররাই এ সন্ত্রাসের সঙ্গে জড়িত। সন্ত্রাসের দলই হচ্ছে আওয়ামী লীগ। সন্ত্রাস সৃষ্টিই আওয়ামী লীগ করেছে।’
কানাডার আদালতে কী রায় দিয়েছে, তা দেখিনি
স¤প্রতি কানাডার ফেডারেল আদালত একটি রায়ের পর্যবেক্ষণে বিএনপিকে সন্ত্রাসী সংগঠন বলে উল্লেখ করা প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই কানাডার কোনো আদালতে কোনো একজন ব্যক্তির রাজনৈতিক আশ্রয় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে কী রায় দিয়েছে, তা আমরা ভালো করে দেখিনি। তবে এটা স্পষ্ট করে বলতে পারি, সে রায়ের সঙ্গে বাংলাদেশের বিএনপির কোনো সম্পর্ক থাকতে পারে না। আমরা এ কথাও খুব সুস্পষ্ট করে বলতে পারি, কানাডার সরকার কখনোই বিএনপিকে কোনো সন্ত্রাসী সংগঠন মনে করে না।’
ফেসবুকে তার নাম ও স্বাক্ষরে একটি বিবৃতি পোস্ট করা প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘বিএনপির মহাসচিব কি পাগল? নাকি বিএনপির মহাসচিব লেখাপড়া করেন না বা জানেন না।’ তিনি সরকারের লোকজনের উদ্দেশে বলেন, ‘এই মিথ্যাচার করে, জনগণকে বোকা বানিয়ে আপনারা কত দিন রাজনীতি করবেন? রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগ কি এতই দেউলিয়া হয়ে গেল যে তাদের এসব নোংরামির আশ্রয় নিতে হবে।’
নির্বাচনে অংশ নেয়া প্রসঙ্গে বিএনপির মহাসচিব বলেন, বিএনপি নির্বাচন ছাড়া কোনো কিছু বোঝে না। নির্বাচনের পূর্বে এ সরকারকে প্রমাণ করতে হবে দেশে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড আছে। রেফারি তাদের পক্ষে থাকবে না, নিরপেক্ষ থাকবে। তবেই নির্বাচন অর্থবহ হবে, জনগণ মেনে নেবে। একটা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করে সেখানে একটি নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকার ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচন হোক। সে নির্বাচনে আমরা যদি হেরে যাই আমরা তা ১০০ বার মেনে নেব। কিন্তু গায়ের জোরে নিজেদের ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করার জন্য যদি কোনো নির্বাচন করা হয়, এ দেশের মানুষ সে নির্বাচন মেনে নেবে না।’
দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে ঐক্য সম্পর্কে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের এখন ঐক্যের প্রয়োজন। আমাদের এখন যেমন নিজেদের মধ্যে ঐক্য গড়ে তুলতে হবে, তেমনি জাতীয় ঐক্যও গড়ে তুলতে হবে।’
জেলা বিএনপির আহŸায়ক মো. তৈমুর রহমানের সভাপতিত্বে সভায় পৌর মেয়র মির্জা ফয়সল আমীন, জেলা বিএনপির আহŸায়ক কমিটির সদস্য শাহেদ কামাল চৌধুরী, সুলতানুল ফেরদৌস চৌধুরী, ওবায়দুল্লাহ মাসুদ, পয়গাম আলী, পৌর বিএনপির সভাপতি আবদুল হালিম প্রমুখ বক্তব্য দেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন