ইশা ছাত্র আন্দোলন
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর আমির মুফতি সৈয়দ মোহাম্মদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই বলেছেন, মুসলিমপ্রধান বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বিচারালয়ে গ্রিক দেবীর মূর্তি স্থাপন করা হয়েছে। ইসলামে মূর্তির কোনো স্থান নেই। ইসলাম এসেছে মূর্তি ধ্বংসের জন্যে। বর্তমান সরকারের আমলে বিচারালয়ে, রাস্তার মোড়ে মোড়ে মূর্তি স্থাপন করা হচ্ছে। এসব মূর্তি স্থাপন করে নিজেদের মুসলমান দাবি করা যায় না। অবিলম্বে এসব মূর্তি অপসারণ করতে হবে। অন্যথায়, দেশের ইতিহাস-ঐতিহ্য ও আমজনতার ঈমান-মূল্যবোধ রক্ষায় আমরা কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হব।
পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, বিজাতীয় অপসংস্কৃতির মাধ্যমে দেশের যুবসমাজকে ধ্বংসের দিকে ধাবিত করা হচ্ছে। ভারতীয় টিভি চ্যানেলের আগ্রাসনে আমাদের সমাজ ও পরিবারের ভ্রাতৃত্বের বন্ধন আজ হুমকির মুখে। এ সকল চ্যানেল বন্ধ করা সচেতন জনগণের প্রাণের দাবিতে পরিণত হয়েছে। মঙ্গল শোভাযাত্রার নামে মূর্তির সংস্কৃতিকে বাঙালি সংস্কৃতি বলে চালিয়ে দেয়া হচ্ছে। যা বাঙালি মুসলমানরা সহ্য করবে না। এ সকল অপসাংস্কৃতিক কার্যক্রম বন্ধ করতে হবে।
সম্প্রতি রাজধানীর গুলিস্তান কাজী বশির মিলনায়নে ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন কর্তৃক আয়োজিত কেন্দ্রীয় সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। আজকের সম্মেলনে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আগত হাজার হাজার সদস্য-নেতা-কর্মী অংশ নেন। সকাল ৯টা থেকে সম্মেলন শুরু হওয়ার কথা থাকলেও ফজরের পর থেকেই দায়িত্বশীল এবং নেতাকর্মীরা জড়ো হতে থাকেন। কেন্দ্রীয় সভাপতি নূরুল ইসলাম আল-আমীনের সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারি জেনারেল শেখ ফজলুল করীম মারুফের সঞ্চালনায় কেন্দ্রীয় সম্মেলনে বিশেষ মেহমান হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর প্রেসিডিয়াম সদস্য প্রিন্সিপাল সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল-মাদানী, আল্লামা নূরুল হুদা ফয়েজী, সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম, নায়েবে আমির মাওলানা আব্দুল আউয়াল, মহাসচিব অধ্যক্ষ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, যুগ্ম মহাসচিব অধ্যাপক মাওলানা এটিএম হেমায়েত উদ্দিন, মাওলানা নেয়ামতুল্লাহ আল-ফরিদী, অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, সহকারী মহাসচিব আলহাজ আমিনুল ইসলাম, মাওলানা আবদুল কাদের, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ড. আব্দুল লতিফ মাসুম, দারুল মা’আরিফ-এর সহকারী মহাপরিচালক আল্লামা জসিম উদ্দিন নদভী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক মাওলানা হুসাইনুল বান্না, মাসিক মদিনার সম্পাদক মাওলানা বদরুদ্দীন খান, ইসলামী যুব আন্দোলনের কেন্দ্রীয় আহŸায়ক কেএম আতিকুর রহমান, ইশা ছাত্র আন্দোলন-এর সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলানা আহমাদ আবদুল কাইয়ুম, অধ্যক্ষ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ, মুহাম্মাদ বরকত উল্লাহ লতিফ, মাওলানা আরিফুল ইসলাম, সর্বদলীয় ইসলামী ছাত্র ঐক্য, জাতীয় ও কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।
পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, শিক্ষার সিলেবাস থেকে যেসব গল্প কবিতা পড়ে বছরের পর বছর ছাত্রছাত্রীরা শিক্ষিত হয়েছে সেইসব গল্প কবিতা সরকারের মধ্যে ঘাপটি মেরে থাকা চক্রান্তকারীরা সরিয়ে দিয়েছিল। জনতার আন্দোলনের মুখে সরকার যখন আবারো সেসব গল্প কবিতা পাঠ্যসূচিতে সংযোজন করেছে তখন বাম-সেক্যুলার জনবিচ্ছিন্ন গুটি কয়েকটি মাথা মোটা মানুষ এই সংযোজনের বিরুদ্ধে উঠেপড়ে লেগেছে। এরা মানুষের মাঝে বিভেদ ও সাম্প্রদায়িকতা তৈরি করতে চায়, সিলেবাস বদলাতে চায়, দেশের ধর্মপ্রাণ মানুষ তা সহ্য করবে না। তাদের ঠাঁই বাংলার জমিনে হবে না। পীর সাহেব বলেন, বিতর্কিত শিক্ষানীতি ২০১০ ও শিক্ষাআইন ২০১৬ বাতিল করে এদেশের ইতিহাস-ঐতিহ্য ও অধিকাংশ জনগণের মূল্যবোধের আলোকে শিক্ষাব্যবস্থা প্রণয়ন করতে হবে। পীর সাহেব চরমোনাই নির্বাচন কমিশন গঠন প্রসঙ্গে বলেন, রাষ্ট্রপতি নিবন্ধিত দলগুলোর সাথে সংলাপ করা অর্থহীন ছিল। রাষ্ট্রপতি কর্তৃক গঠিত সার্চ কমিটি প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। তিনি রাষ্ট্রপতিকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনি নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন করুন দেশবাসী আপনার সাথে আছে।
বক্তব্য শেষে তিনি ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন-এর চলমান কমিটি বিলুপ্ত করে ২০১৭ সেশনের জন্য নতুন কমিটি ঘোষণা করেন। নবগঠিত কমিটির কেন্দ্রীয় সভাপতি জি.এম রুহুল আমীন, কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি শেখ ফজলুল করীম মারুফ এবং সেক্রেটারি জেনারেল শেখ মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলামের নাম ঘোষণা করেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন