সোমবার ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

১৩ বছর পর যুব মহিলা লীগের সম্মেলন আজ

| প্রকাশের সময় : ১১ মার্চ, ২০১৭, ১২:০০ এএম

আগ্রহ থাকলেও শীর্ষ পদে নতুন কোনো প্রার্থী নেই
স্টাফ রিপোর্টার : দীর্ঘ ১৩ বছর পর এক সপ্তাহ পর আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন যুব মহিলা লীগের দ্বিতীয় জাতীয় সম্মেলন আজ শনিবার। রাজধানীর ফার্মগেটের খামারবাড়ীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে সকাল ১০টায় সম্মেলন শুরু হবে। প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা এ সম্মেলনে প্রধান অতিথি থাকবেন।
ইতোমধ্যেই সম্মেলনের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে জানিয়ে যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক অপু উকিল বলেন, প্রায় এক হাজার ৬০০ কাউন্সিলর সম্মেলনে যোগ দেবেন। সারা দেশের সব জেলায় সম্মেলনের পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। আশা করছি আগামীকাল শনিবার (আজ) রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে অত্যন্ত আনন্দমুখর পরিবেশে সম্মেলন সম্পন্ন করতে পারব।
যুব মহিলা লীগের প্রথম জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় হয়েছিল ২০০৪ সালের ৫ মার্চ। তখন নাজমা আক্তারকে সভাপতি ও অপু উকিলকে সাধারণ সম্পাদক করে কমিটি ঘোষণা করা হয়।
এর ঠিক ১৩ বছর ছয়দিন পর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন যুব মহিলা লীগের দ্বিতীয় সম্মেলন। কিন্তু তারপরও উৎসাহ-উদ্দীপনার বদলে সংগঠনটির নেতাকর্মীদের মধ্যে ভেতরে ভেতরে কাজ করছে হতাশা। কারণ বর্তমান সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকই আবারো এর নেতৃত্বে থাকছেন বলে গুঞ্জন শুরু হয়েছে। নেতৃত্বের প্রতিযোগিতার সম্ভাবনা কম থাকায় নেতাদের মধ্যে উৎসাহের বদলে কিছুটা হতাশাও লক্ষ্য করা গেছে। বর্তমান শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, তারা অন্যদের শীর্ষ পদে প্রার্থী হতে নিরুৎসাহিত করছেন।
যুব মহিলা লীগ সূত্রে জানা যায়, ২০০২ সালে প্রতিষ্ঠিত এ সংগঠনটির প্রথম সম্মেলন হয় ২০০৪ সালের ৫ মার্চ। সভাপতি পদে নাজমা আক্তার এবং সাধারণ সম্পাদক করা হয় অপু উকিলকে। সম্মেলনের পরপরই বিএনপি-জামায়াত সরকার বিরোধী আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করেন সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। রাজপথে মিছিল-পিকেটিংয়ে অংশ নিয়ে প্রশংসা কুড়ায় সংগঠনটি। নেতাকর্মীদের অনেকেই পুলিশি নির্যাতন এবং জেল-জুলুমের শিকারও হন। রাজপথে সংগ্রাম আর ওয়ান ইলেভেনের প্রেক্ষাপট মোকাবেলা করে ২০০৯ সালে সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ। সংগঠনের সভাপতি নাজমা আক্তার ও সাধারণ সম্পাদক অপু উকিল সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্যও হন। এরপর ধীরে ধীরে  সাংগঠনিক কর্মসূচিতেও পড়ে ভাটা। সংগঠন হিসেবে দীর্ঘদিন এর কোনো তৎপরতা যেমন নেই, নেই তেমনি নিজস্ব কর্মসূচি।  
আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগের হাই কমান্ড সব অঙ্গ-সহযোগী সংগঠন গোছানোর কাজে হাত দিয়েছে। এ প্রেক্ষিতেই হতে যাচ্ছে এবারের সম্মেলন। কিন্তু বর্তমান সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক স্বপদে বহাল থাকছেন বলে চারদিকে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে। আর এ কারণে শীর্ষ দুই পদে প্রার্থী হওয়ার আগ্রহেও পড়েছে ভাটা। অনেকেই শীর্ষ দুই পদে আগ্রহী হলেও প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেননি। তবে, আগ্রহীরা লবিং-তদবির-যোগাযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন যার যার মতো করে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক যুব মহিলা লীগের একাধিক নেতাকর্মী বলেন, ১৩ বছর পর সম্মেলন হচ্ছে। বর্তমান সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকই আবার থাকতে চান। সে ক্ষেত্রে নিজেদের প্রার্থী ঘোষণা করে তাদের রোষানলে পড়তে চাই না। কিন্তু দীর্ঘদিন পর সম্মেলনেও যদি নতুন নেতৃত্ব না আসে তাহলে নেতৃত্বের বিকাশ হবে না।
জানা যায়, শীর্ষ দুই পদে বর্তমান সিনিয়র সহ-সভাপতি জাকিয়া পারভীন খানম মনি, প্রথম যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাবিবা আনজুম মিতা, আরেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কোহেলী কুদ্দুস মুক্তি এবং ঢাকা মহানগর উত্তর যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবিনা আক্তার তুহিনের নাম আলোচনায় ছিল। কিন্তু এরা কেউই নিজেকে প্রার্থী ঘোষণা দেননি।
সংগঠনের সিনিয়র সহ-সভাপতি জাকিয়া পারভীন খানম মনি বলেন, প্রার্থী হওয়ার কিছু নেই। আমাদের সাংগঠনিক নেতা আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তই আমার সিদ্ধান্ত। তিনি যে সিদ্ধান্ত দেবেন তা মেনে কাজ করাই নিজের দায়িত্ব বলে মনে করি। আমাকে পদ দিলেও কাজ করব, না দিলেও কাজ করব। বঙ্গবন্ধু কন্যার প্রতি আনুগত্যই নিজের প্রধান শক্তি বলে মনে করি।
প্রথম যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাবিবা আনজুম মিতা বলেন, তারা চান বর্তমান সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকই আবার এ পদে থাকুন। কেননা এই সংগঠনকে শক্তিশালী করতে এখনো তাদের বিকল্প কেউ গড়ে উঠেনি।
আরেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কোহেলী কুদ্দুস মুক্তিও তার সঙ্গে একমত। তিনি বলেন, বর্তমান সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক আবারো স্বপদে থাকলে সংগঠন শক্তিশালী থাকবে। তাদের নেতৃত্বে রাজনীতি করে আমরা রাজপথে সফল হয়েছি।
বর্তমান সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক আরো এক টার্ম থাকলে ভালো হবে বলে মনে করেন সাবিনা আক্তার তুহিনও। তিনিও নিজেকে প্রার্থী করতে নারাজ।
তবে, যুব মহিলা লীগের সভাপতি নাজমা আক্তার বলেন, নেতৃত্ব নির্বাচন আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনার ইচ্ছায় হয়ে থাকে। তিনি দায়িত্বে রাখলে পালন করব না হলে হয়। নাজমা আক্তার জানান, এবারের সম্মেলনের প্রস্তুতি প্রায় শেষ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন