শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

দু’সন্তানের মৃত্যুর পর মারা গেলেন তাদের পিতা শাহনেওয়াজ

উত্তরায় গ্যাস বিস্ফোরণে একই পরিবারের ৫ জন অগ্নিদগ্ধ

প্রকাশের সময় : ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : রাজধানীর উত্তরায় গ্যাসের চুলার আগুনে দগ্ধ ২ সন্তানের পর না ফেরার দেশে চলে গেলেন তাদের বাবা শাহনেওয়াজ। সঙ্কটাপন্ন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন নিহতদের মা সুমাইয়াও। চিকিৎসকরা বলেছেন, অগ্নিদগ্ধ সুমাইয়ার অবস্থাও খুবই ক্রিটিক্যাল। তার শরীরের ৯০ শতাংশ পুড়ে গেছে। এ অবস্থায় দগ্ধদের কাছাকাছি থাকতে স্বজনদেরকে পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা।
শুক্রবার ভোরে ঘটনার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় শাহনেওয়াজ-সুমাইয়া দম্পতির পরিবারের ৫ জনের মধ্যে ওই দিন সন্ধ্যায় মারা গেছে দগ্ধ দুই ভাই সারলিন বিন নেওয়াজ (১৫) ও ১৪ মাস বয়সী জায়ান বিন নেওয়াজ। গতকাল শনিবার সন্ধ্যা ৬টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন তাদের বাবা শাহনেওয়াজ। পাঁচ সদস্যের পরিবারে একমাত্র বিপদমুক্ত শাহনেওয়াজের মেঝ ছেলে জারিফের শরীরের ৬ শতাংশ পুড়ে গেলেও তার অবস্থা ভাল। তবে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। সে মানসিকভাবে প্রচ- আঘাত পেয়েছে। যে কারণে তার কথাবার্তা এলোমেলো। নিহতদের স্বজন ও মেডিকেল সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
গতকাল শনিবার বিকেলে দগ্ধ সুমাইয়ার ভাগনে নাজমুস সাকিব বলেন, মামী সুমাইয়া বলেছেন, মারা গেলে তাকে যেন বরিশালে দাফন করা হয়। দগ্ধ শাহনেওয়াজের ভাই কামরুল আহসান বলেন, নিহত দুই ভাই সারলিন বিন নেওয়াজ (১৫) ও ১৪ মাস বয়সী জায়ান বিন নেওয়াজের লাশ গতকাল প্রথমে ঢাকায় এক আত্মীয়ের বাসায় নেওয়া হয়। সেখানে জানাযা শেষে তাদের লাশ নানার বাড়ি বরিশালে নেয়ার পথেই ওই সন্তানদের বাবার মৃত্যু সংবাদও শুনতে পান। স্বজনরা জানেন না আরও লাশ তাদের দেখতে হবে কি না। কীভাবে কী করবেন, কিছুই বুঝতে পারছেন না তারা। হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের আবাসিক সার্জন পার্থ শংকর পাল বলেন, অগ্নিদগ্ধ সুমাইয়ার অবস্থাও আশঙ্কজনক। বেঁচে যাওয়া একমাত্র ভাই জারিফ বিন নেওয়াজ শারীরিকভাবে অন্যদের চেয়ে ভালো। তাকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। সে ঢাকায় এক আত্মীয়ের বাসায় আছে।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার ভোরে উত্তরার একটি সাততলা ভবনের ৫ম তলার ফ্ল্যাটে রান্নাঘরের আগুনে শাহনেওয়াজ-সুমাইয়া দম্পতির ৩ সন্তানসহ পরিবারটির পাঁচজনই দগ্ধ হন। এই দম্পতির অগ্নিদগ্ধ দুই সন্তান দেড় বছরের জায়ান বিন শাহনেওয়াজ এবং ১৫ বছরের শাহালিন বিন শাহনেওয়াজ শুক্রবারই মারা যায়। গৃহকর্তা শাহনেওয়াজের গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। তিনি যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের প্রকৌশল বিভাগে মেইনটেইনেন্স ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কর্মরত। গত ২০ ফেব্রুয়ারি উত্তরার ওই ফ্ল্যাটে পরিবার নিয়ে উঠেছিলেন শাহনেওয়াজ। ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের ধারণা, ওই বাসার গ্যাসের চুলা বা লাইনে সমস্যা ছিল। এর ফলে গ্যাস বের হয়ে রান্নাঘর থেকে পুরো ফ্ল্যাটে ছড়িয়ে যায় এবং সকালে চুলা জ্বালাতে গিয়ে অগ্নিকা- ঘটে।
এদিকে মর্মান্তিক এ ঘটনায় শুক্রবার রাতেই শাহনেওয়াজের ভাই কামরুল আহসান বাদী হয়ে উত্তরা থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করেন। তিনি ঘটনার তদন্ত দাবি করেন। তারপর তারা পরবর্তী পদক্ষেপ নেবেন।
আহতদের দেখতে হাসপাতালে মার্কিন রাষ্ট্রদূত
এদিকে গত শুক্রবার রাতে এবং গতকাল শনিবার দুপুরে মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্সিয়া বার্নিকাটসহ দূতাবাসের চিকিৎসক ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা হাসপাতালে এসেছিলেন। তারা দগ্ধ ব্যক্তিদের চিকিৎসার খোঁজখবর নিয়েছেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন