সোমবার ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

হোলি উৎসবে মুসলিম নারী ও যুবতীদের শ্লীলতাহানীর ঘটনায় জড়িতদের কঠোর শাস্তি দিন-ইসলামী নেতৃবৃন্দ

মুসলমানদেরকে সজাগ হতে হবে

| প্রকাশের সময় : ১৮ মার্চ, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : হিন্দু সম্প্রদায়ের হোলি পূজা উপলক্ষে শাখারীবাজারে মুসলিম নারী ও যুবক যুবতিদের হয়রানির তীব্র প্রতিবাদ করেছেন ইসলামী নেতৃবৃন্দ। গতকাল পৃথক পৃথক বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেছেন, এসব ঘটনার দ্বারা এবং ঘটনার সাথে জড়িত শুধু ৩ জন মুসলমান যুবককে গ্রেফতার অনেক প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। নেতৃবৃন্দ হিন্দু সম্প্রদায়ের হোলি উৎসবকে সার্বজনিন করার চক্রান্তের অংশ হিসেবে এসব ঘটনা ঘটানো হয়। ইসলামী নেতৃবৃন্দ এর তীব্র প্রতিবাদ করার সকল অঘটনের দায় মুসলমানদের ঘাড়ে চাপানোর লক্ষ্যে কেবল ৩ জন মুসলিম যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে। অর্থাৎ প্রমাণ করা হয়েছে হোলি উৎসব করেছে মুসলিম যুবকরা হিন্দু সম্প্রদায় এর সাথে জড়িত নয়। এ গ্রেফতারের পেছনে পুলিশের নাটক বুঝতে কষ্ট হয়নি। তাই ঘটনা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত না করে প্রকৃত অপরাধীদের গ্রেফতার করে কঠিন শাস্তির আওতায় আনতে হবে যাতে ভবিষ্যতে এমন অঘটন ঘটানোর সুযোগ কেউ না পায়।
গত মঙ্গলবার হোলিপূজা উপলক্ষে শাখারিবাজারে মুসলিম নারীদের শ্লীলতাহানি ও যুবক-যুবতীদের হয়রানী, মুসলিম পর্দানশীন নারীদের শ্লীলতাহানির ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন হক্কানী ত্বরিকত ফেডারেশন এর চেয়ারম্যান কাজী আহমদুর। মুসলিম নারী ও যুবতীদের শ্লীলতাহানি, হেনস্থা এবং যুবকদের হয়রানির দ্বারা প্রমাণিত হয়েছে হিন্দু স¤প্রদায়ের লোক ও যুবক-যুবতীদের নিকট মুসলিম নারী-পুরুষ ও যুবক-যুবতীরা নিরাপদ নয়। তাই ৯৫ ভাগ মুসলমানের দেশ বাংলাদেশে হোলি উৎসব ও মঙ্গল শোভাযাত্রার মত হিন্দুদের যে সব অনুষ্ঠানে এইরূপ অঘটনের আশঙ্কা থাকে সেই সব অনুষ্ঠান প্রকাশ্যে পালন করা সরকারকে বন্ধ করতে হবে মানবাধিকার-সংবিধান ও ধর্মীয় স্বাধীনতা রক্ষার জন্য এবং সংবিধানের ১৫-গ ও ঘ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী নারীদের নিরাপত্তার জন্য।
গতকাল এক বিবৃতিতে কাজী আহমদুর রহমান বলেন, সংবিধান অনুযায়ী হোলি পূজায় মুসলিম নারী ও যুবক-যুবতীদের হয়রানি ও শ্লীলতাহানি চরম মানবাধিকার পরিপন্থী। অথচ সংবিধানের ১৫(ঘ) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী নাগরিকদের সামাজিক নিরাপত্তার অধিকার সুনিশ্চিত করার দ্বায়িত্ব রাষ্ট্রের হোলি উৎসবে ভিক্টিম মুসলিম নারীগণ যেহেতু স্বাধীন বাংলাদেশের স্থায়ী নাগরিক সেহেতু সংবিধানের ১৫(গ) ও ১৫(ঘ) অনুচ্ছেদ অনুসারে তাদের সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে রাষ্ট্র বাধ্য। গত মঙ্গলবার হোলিপূজায় মুসলিম নারী নিগ্রহের ঘটনা এক দীর্ঘমেয়াদী ভারতীয় সাম্রাজ্যবাদী নীল নকশার ক্ষুদ্র অংশ মাত্র। কারণ এসব ঘটনার মাধ্যমে মুসলমানরা প্রতিবাদী হলে তারা বলার সুযোগ পাবে যে বাংলাদেশে উগ্রমৌলবাদের উত্থান ঘটেছে এবং সেই বরাতে ভারত মার্কিন সমর্থন নিয়ে এদেশের উপর আগ্রাসন চালাতে পারবে। ত্ইা হোলি উৎসব ও মঙ্গলশোভাযাত্রার এই সব ঘটনা কোনভাবেই মেনে নেয়া যায় না। দেশ ও ধর্মের স্বাধীনতা রক্ষায় এই সব চক্রান্ত ও চক্রান্তকারীদের প্রতিহত করতে দেশের মুসলিম জনতা, ইসলামী ও সমমনা রাজনৈতিক দল ও সংগঠনসমুহকে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। বিবৃতিতে তিনি বলেন হোলি পূজার ঘটনার প্রেক্ষাপটে গ্রেফতার করা হয়েছে মাত্র ৩ মুসলিম যুবককে। এদ্বারা বুঝা যায় হোলি পূজা যেন মুসলমানদের। হিন্দু সম্প্রদায়ের কেউ হোলি পূজার সাথে সম্পৃক্ত ছিল না। সুতরাং হোলি পূজার অঘটনের দায় মুসলমানদের ঘাড়ে বর্তানোর অপচেষ্টা প্রতিহত করতে হবে। পুলিশের উচিত প্রকৃত অপরাধীদের গ্রেফতার করা। লোক দেখানো গ্রেফতার নয়।
ইসলামী ঐক্য আন্দোলন
ইসলামী ঐক্য আন্দোলনের ঢাকা মহানগরী আমির মোস্তফা বশীরুল হাসান ও সাধারণ সম্পাদক ডা. সাখাওয়াত হুসাইন এক যুক্ত বিবৃতিতে বলেছেন, হোলি উৎসবের নামে মুসলিম নারীদের অপমান সহ্য করা হবে না। মুসলিম অধ্যুষিত বাংলাদেশের মাটিতে হিন্দুদের কোনো বাড়া-বাড়ি বরদাশ করা হবেনা। ধর্ম নিরপেক্ষতার নামে ধর্ম যার যার উৎসব সবার এ ধরনের ইসলামবিরোধী বক্তব্যের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তুলতে হবে। তারা আরও বলেন, বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ তার অর্থ এই নয় যে এক ধর্মের অনুষ্ঠানে যেতে অন্যধর্মাবলম্বীদের উৎসাহিত বা বাধ্য করবে।
খেলাফত মজলিস
হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের হোলি উৎসবে রাস্তায় চলাচলরত হিজাবধারী ছাত্রী ও কর্মজীবী মহিলাদের চেহারায় জোরকরে রঙ মাখানো ও হেনস্থার ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ খেলাফত মজলিসের আমির অধ্যক্ষ মাওলানা মোহাম্মদ ইসহাক ও মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের। গতকাল প্রদত্ত এক বিবৃতিতে নেতৃদ্বয় বলেন, হোলি ধর্মীয় উৎসবের আড়ালে এদেশের মুসলমানদের কৌশলে ও জবরদস্তিমূলকভাবে হিন্দুয়ানী সংস্কৃতিতে শামিলের অপচেষ্টা কোনভাবেই বরদাস্ত করা যায় না। ৯২ ভাগ মুসলিম অধ্যুষিত দেশের মুসলিম নারীদের উপর এ আচরণ ঔদ্ধত্যের শামিল। একইভাবে হিজাবধারী ছাত্রী ও কর্মজীবী মহিলাদের চেহারায় জোরকরে রঙ মাখানো ও হেনস্থার ঘটনা নারী নিপিড়নেরও শামিল। তাই হোলি উৎসব থেকে এ বখাটেপনার সাথে জড়িত প্রকৃত অপরাধিদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। একই সাথে ভবিষ্যতে এ ধরণের ন্যাক্কারজনক ঘটনার পুনরাবৃত্তির ঘটনা যাতে না ঘটে সেজন্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহণ করতে হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন