স্টাফ রিপোর্টার : রাজধানীর বিমানবন্দর গোলচত্বর পুলিশ বক্সের কাছে শুক্রবার সন্ধ্যায় বোমা বিস্ফোরণে নিহত যুবকের পরিচয় মেলেনি। নিহতের লাশের ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসকরা বলেছেন, বোমার বিস্ফোরণেই ওই যুবক নিহত হয়েছে। তার শরীরে স্কচটেপ ও ইলেকট্রিক তার পাওয়া গেছে। শরীরের পেছন দিকে বোমার আঘাতের প্রমাণ মিলেছে। পুলিশ ও মেডিক্যাল সূত্র জানায়, ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পরেও গতকাল শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত নিহতের পরিচয় মেলেনি। শুক্রবার দিবাগত মধ্যরাতে ওই যুবকের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিক্যাল মর্গে পাঠায় পুলিশ। গতকাল দুপুর ১২টা ৫ মিনিটে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. সোহেল মাহমুদের নেতৃত্বে বিশেষজ্ঞ তিন সদস্য বিশিষ্ট চিকিৎসক বোর্ডের সমন্বয়ে লাশের ময়নাতদন্ত শুরু হয়। বেলা পৌনে একটায় ময়নাতদন্ত শেষ হয়। ময়নাতদন্ত টিমে আরো ছিলেন, চিকিৎসক প্রদীপ বিশ্বাস ও কবির সোহেল। ময়নাতদন্ত শেষে ডা. সোহেল মাহমুদ বলেন, বোমা বিস্ফোরণে মারা গেছে ওই যুবক। নিহতের শরীর থেকে স্কচ টেপ ও ইলেকট্রিক তার পাওয়া গেছে। এতে ধারণা করা হচ্ছে, বোমাটি নিহতের শরীরে বাঁধা ছিল। লাশের পিঠের দিকে বোমার আঘাত পাওয়া গেছে। বোমার বিস্ফোরণে ওই ব্যক্তির মেরুদন্ড ফেটে যায় তার ডিএনএ পরীক্ষার দাঁত এবং চুল সংগ্রহ করা হয়েছে। এ ছাড়া নিহত যুবক কোনো ধরনের শক্তিবর্ধক কিংবা উত্তেজক দ্রব্যাদি পান করেছিল কিনা তা পরীক্ষার জন্য নিহতের শরীর থেকে রক্ত এবং মূত্র সংগ্রহ করে পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে বিমানবন্দর গোলচত্বর পুলিশ বক্সের সামনে বিস্ফোরণে ঘটনাস্থলেই নিহত হয় এক যুবক। ঘটনাটি আত্মঘাতী হামলা দাবি করে আইএসের নামে দায় স্বীকারের বার্তা এলেও ডিএমপি পুলিশের কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া বলছেন, এটি কোনো আতœঘাতী হামলার ঘটনা নয়, ওই ব্যক্তি বোমা নিয়ে যাওয়ার সময় বিস্ফোরণ ঘটে। চেকপোস্টে পুলিশের নজরদারি এড়াতে বোমা বহনকারী সতর্ক হতে গিয়ে বোমার বিস্ফোরণ ঘটে। নিহতের বয়স ২৫-২৬। জিনসের প্যান্ট ও ফুলহাতা শার্ট পরা ছিল। তার সাথে থাকা ব্যাগে অবিস্ফোরিত বোমা নিস্ক্রিয়কালে আরো কয়েকজন আহত হয়েছেন। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া, র্যাবের মহা-পরিচালক (ডিজি) বেনজীর আহমেদ আসেন। এ ছাড়া উত্তরা জোনের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) বিধান ত্রিপুরা, ঢাকা (উত্তর) ট্রাফিক পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি), এডিসি সালামসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অন্যান্য সদস্যরাও উপস্থিত হয়। পরিদর্শন শেষে ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া সাংবাদিকদের জানান, চেকপোস্টে পুলিশের কড়া নজরদারি ছিল। এই জায়গা দিয়েই ওই লোক বোমাটি নিয়ে যাচ্ছিল। পুলিশের ব্যাপক উপস্থিতি দেখেই সে বোমাটি আড়াল করতে গেলে বিস্ফোরণের ঘটনাটি ঘটে। এ ঘটনায় বিমানবন্দর থানায় একটি মামলা হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন