বাগেরহাট জেলা ও মোড়েলগঞ্জ সংবাদদাতা : বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলায় পানগুছি নদীতে গতকাল (মঙ্গলবার) সকাল সাড়ে দশটার দিকে যাত্রীবাহী ট্রলার ডুবে অন্তত চার নারী নিহত হয়েছেন। নিখোঁজ রয়েছেন আরও অন্তত ১৫ জন।
স্থানীয়রা নদী থেকে অন্তত ত্রিশ জনকে ভাসমান অবস্থায় উদ্ধার করেছে। ট্রলারটি যাত্রী নিয়ে উপজেলার ছোলুমবাড়ি খেয়াঘাট থেকে পুরাতন থানাঘাটের উদ্দেশে যাচ্ছিলো। পুলিশ, দমকল বিভাগ, নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ড সদস্যরা স্থানীয়দের সাথে নিয়ে নদীতে উদ্ধার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এদিকে ট্রলার ডুবির ঘটনায় জেলা প্রশাসন একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। বাগেরহাটের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. মোমিনুর রশিদকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের ওই কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটিকে আগামী তিন কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। এই কমিটিতে জেলা প্রশাসনের তিন কর্মকর্তা, পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের একজন করে রাখা হয়েছে।
ট্রলারে কমপক্ষে দেড়শ’ যাত্রী ছিলো। এদের মধ্যে নিহত ৪ নারী হচ্ছেন- কালিকাবাড়ি গ্রামের মহসিন হোসেনের স্ত্রী বিউটি বেগম (৩৮), গুয়াবাড়িয়া গ্রামের হাসেম হাওলাদারের স্ত্রী পিয়ারা বানু (৫০) ও চিংড়াখালী গ্রামের মৃত ইউনুস আলীর স্ত্রী সুফিয়া বেগম (৭৫), উত্তর ফুলহাতা গ্রামের মোয়াজ্জেম হোসেনের স্ত্রী নাদিরা বেগম (২০)।
মোরেলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাশেদুল আলম চার নারীর লাশ উদ্ধারের সংবাদ নিশ্চিত করে বলেন, উদ্ধারকৃতদের মধ্যে এক নারী ও এক শিশুকে মোরেলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং অপর এক নারীকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ট্রলার ডুবির কারণ বা নিহতদের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানা যায়নি।
তবে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীএকাধিক ব্যক্তি জানায়, সকাল সাড়ে দশটার দিকে অর্ধ শতাধিক যাত্রী নিয়ে ট্রলারটি ছোলমবাড়ি খেয়াঘাট থেকে থানাঘাটের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। সাড়ে দশটার দিকে ট্রলারটি থানাঘাটের কাছাকাছি আসলে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি দ্রæতগতির নৌযানের ঢেউয়ে ট্রলারটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায়।
বাগেরহাটের পুলিশ সুপার পংকজ চন্দ্র রায় জানান, ট্রলার ডুবির সুনির্দিষ্ট কারণ এখনই বলা যাবে না। উদ্ধার তৎপরতা চলছে। আমরা খোঁজ-খবর নিচ্ছি। পরে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো যাবে।
বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক তপন কুমার বিশ^াস বলেন, ট্রলার ডুবির ঘটনা তদন্তে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। বাগেরহাটের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. মোমিনুর রশিদকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যে ওই কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটিকে কার গাফিলতিতে কিভাবে ট্রলারটি ডুবল তা তদন্ত করে আগামী তিন কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। এই কমিটিতে জেলা প্রশাসনের তিন কর্মকর্তা, পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের একজন করে রাখা হয়েছে। দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবারকে আর্থিক সহযোগিতা করা হবে বলেও জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, ট্রলার ডুবিতে এখনো অন্তত ১০ জন নিখোঁজ রয়েছে বলে তাদের স্বজনরা দাবি করছেন। তাদের উদ্ধারে পুলিশ, দমকল বিভাগ, নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ড সদস্যরা স্থানীয়দের সাথে নিয়ে নদীতে উদ্ধার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন